রাজ্যে ২৭ ফেব্রুয়ারী থেকে ইনটেনসিফায়েড পালস পোলিও ইম্যুনাইজেশন ও ২ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত অ্যানিমিয়া ও যক্ষা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে ১৫ দি নব্যাপী কর্মসূচি শুরু হবে । গতকাল সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা ডা . সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল । সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও জানান , পালস পোলিও কর্মসূচিতে • থেকে ৫ বছর বয়সের শিশুদের ২ ফোঁটা করে খাওয়ানো হবে । এতে ৩,৬২৯ টি পোলিও বুথে মোট ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ১৭৪ জন শিশুকে পোলিও ডোজ খাওয়ানোর লক্ষ্যামাত্রা নেওয়া হয়েছে । যাদের ঐদিন পোলিও ড্রপ খাওয়ানো সম্ভব হবেনা তাদের যথাক্রমে ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ আশাকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীগণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে পোলিও ড্রপ খাওয়াবেন । অন্যদিকে সুস্থ ত্রিপুরা , শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার ২ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী অ্যানিমিয়া এবং যক্ষা মুক্ত করতে গোটা রাজ্যে ১৫ দিন ধরে এই কর্মসূচি চলবে । অ্যানিমিয়া মুক্ত ভারত কর্মসূচিতে আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৬ ৫৯ মাস বয়সের শিশুদের দু – বার আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড সিরাপ খাওয়াবেন । ৫-৯ বছর বয়সের শিশুদের সপ্তাহে একটি গোলাপী আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে । ১০-১৯ বছর বয়সের কিশোর – কিশোরীদের সপ্তাহে একটি নীল আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে । গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার প্রথম ৪ মাস থেকে ১৮০ দিন অব্দি লাল আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে । মাতৃদুগ্ধ প্রদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে প্রসবের পর ১৮০ দিন আয়রনের লাল ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে । ২০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী প্রজননক্ষম মহিলাদের সপ্তাহে একটি করে লাল আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে । এই কর্মসূচিতে আনুমানিক ১৪ হাজারের অধিক গর্ভবতী মহিলা এবং ১৮ হাজারেরও অধিক প্রজননক্ষম মহিলাদের রক্তাল্পতা দূরীকরণ সম্বলিত পরিষেবা প্রদান করা হবে । ২০২৫ সালের মধ্যে দেশব্যাপী যক্ষা নির্মূলীকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত হবে বিশেষ কর্মসূচি যেখানে প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে যক্ষা সনাক্তকরণ করা হবে । ত্রিপুরাকে যক্ষা মুক্ত করতে ২ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী বিশেষ অভিযান – এ আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যক্ষা রোগী সনাক্ত করবেন , প্রয়োজনে কফের নমুনা এবং পরীক্ষা নিরীক্ষার পর যদি কোনও ব্যক্তির যক্ষা রোগ সনাক্ত হয় তাহলে তাকে বিনামূল্যে ডট্স পরিষেবায় এবং নিক্ষয় যোজনায় আওতাভুক্ত করা হবে । এই পক্ষকালব্যাপী বিশেষ অভিযান – এ আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রায় ৮৪ হাজার বাড়ি পরিদর্শন করবেন । ২ য় পাতায় গোটা রাজ্যে এ রোগ হতে পারে এমন প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষের উপর টিবি রোগ সনাক্তকরণের কাজ করা হবে । নিক্ষয় প্রকল্পের অধীনে থাকা যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা চলাকালীন পুষ্টিকর খাবারের জন্য প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয় । রক্তাল্পতা দূরীকরণ এবং যক্ষ্মা নির্মূলীকরণ সুনিশ্চিত করতে রাজ্যের ৩,৬০০ টি – র অধীক স্কুল এবং ৬,৭০০ টি – র অধীক অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে পক্ষকালব্যাপী এই কর্মসূচি আয়োজিত হচ্ছে । রাজ্যের মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র , জাতীয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি দিবস , বিভিন্ন চা বাগান , বস্তি এলাকা , ইট ভাট্টাতেও চলবে এই বিশেষ কর্মসূচি । ন্যাশনাল কুয়ালিটি অ্যাসুরেন্স স্টেন্ডার্ডস -এ জাতীয় স্তরের মান্যতা প্রাপ্ত রাজ্যের ৭ টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে । এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি হলো- বাইখোরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র , তুলামুড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র , আঠারোভোলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র , তৈবান্দাল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চাচুবাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র , জম্পুই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং আশ্রমপাড়া আরবান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্টেট টি বি অফিসার ডা : রনেন বর্মন , ইম্যুনাইজেশন অফিসার ডা : মৌসুমি সরকার প্রমুখ ।