গত বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। কোন ধরনের কারণ ছাড়াই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাজার থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করতে গিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা। এর মধ্যে আবার একেক বাজারে একেক দামে বিক্রি হয় পেঁয়াজ। যা পাইকারি মূল্যের তুলনায় অনেকটা বেশি। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে প্রশাসন ময়দানে নেমে এখন যেন বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল। ক্রেতাদের হাতে ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ তুলে দিতে প্রশাসনের উদ্যোগে আগরতলা শহরের বাজারগুলিতে একের পর এক খোলা হচ্ছে বিশেষ কাউন্টার। আর সেই কাউন্টার গুলিতে পেঁয়াজের দাম নিয়ে সচেতন ক্রেতাদের মধ্যে উঠছে প্রশ্ন। প্রথমে লোক দেখানো অভিযানের পরেও বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ব্যর্থ হবার পর শুরু হয় ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির কাউন্টার খোলার তৎপরতা। প্রথমেই প্রশাসনের সহযোগিতায় এই কাউন্টার খোলা হয় আগরতলা মহারাজগঞ্জে বাজারে। সেখানে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি কেজি ৩৮ টাকা। যা স্বাভাবিকভাবেই ক্রেতাদের কাছে অনেকটা স্বস্তিদায়ক ছিল। মহারাজগঞ্জ বাজারে কাউন্টার খোলার দুই দিন বাদে বটতলা বাজারে অনুরূপ আরেকটি কাউন্টার খোলা হয়। সেখানে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয় ৪০ টাকা। মাত্র ২ কিলোমিটারের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রশাসনিকভাবে পৃথক হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সচেতন ক্রেতাদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দেয়। এখানেই শেষ নয়। প্রশাসনের সহযোগিতায় এবার সরকারি ন্যায্য মূল্যের দোকানেও ন্যায্য দামে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। আগরতলা কৃষ্ণনগর মেহের কালীবাড়ি স্থিত ৬১ নম্বর রেশন শপে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি। যার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন খোদ খাদ্য দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারী। উপস্থিত ছিলেন সদর মহকুমা শাসক অরুপ দেব, খাদ্য দপ্তরের আধিকারিক প্রদীপ কুমার ভৌমিক সহ আরো অন্যান্য আধিকারিকরা। কিন্তু অবাক করার বিষয় হল মহারাজগঞ্জ বাজার ও বটতলা বাজার থেকে ন্যায্য মূল্যের দোকানে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয় অনেকটা কম। এই রেশন সপে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩৭ টাকা। আর সেখানেই যেন উঠছে প্রশ্ন।খোদ খাদ্য দপ্তরের সহায়তায় রাজধানীর একেক বাজারে পেঁয়াজের দাম একেক রকম ধার্য হওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের মনে প্রশ্ন দেখা দেওয়াটাই স্বাভাবিক। তাহলে কি পেঁয়াজ নিয়ে ফটকা কারবারে এখন মেতে উঠলো খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা ? প্রশাসনিকভাবে যেহেতু ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলিতে একেক দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, তাহলে বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম পৃথক হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই অনেকের মতেই ক্রেতাদের হাতে ন্যায্য দামে পেঁয়াজ তুলে দেওয়ার নাম করে কাউন্টার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে অন্য এক ফটকা কারবারে মেতে উঠেছে দপ্তরের আধিকারিকরা। বাজারে এভাবে ন্যায্য মূল্যের দোকানে পৃথক দাম নির্ধারণ করে পরোক্ষে কালোবাজারিদের মদত জুগিয়ে চলেছে প্রশাসন। এমনটাই মনে করছেন এখন সচেতন নাগরিকরা।