উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি আজ দুপুরে আগরতলা-আখাউড়া নতুন রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এসে প্রথমে তিনি আগরতলা রেল স্টেশনে যান এবং প্রস্তাবিত রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাজ থেকে খোঁজখবর নেন। পরিদর্শনের সময় তার সঙ্গে ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক সহ নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (কনস্ট্রাকশন) পি বি পান্ডে ও রেললাইন নির্মাণ সংস্থা ইরকনের জেনারেল ম্যানেজার রমন শ্রিংলা। তাছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ। আগরতলা রেল স্টেশন পরিদর্শনের পর উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী নিশ্চিন্তপুর রেল স্টেশনটি পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে এক পর্যালোচনা বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বাতাবরণকে আরও সুদৃঢ় করতে এই রেল সংযোগ নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘পূবে সক্রিয় হও’ এবং ‘প্রতিবেশি প্রথমে’ এই দুই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে এই কাজটিকে সংশ্লিষ্টদের আরও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা উচিত। তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়ন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সহজে পণ্য আমদানি রপ্তানি, বৈদেশিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আরও সুদৃঢ় করা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নততর করার ক্ষেত্রে এই রেল সংযোগ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ভবিষ্যতে গ্রহণ করবে। ভারতীয় অংশের ৫.৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন নির্মাণে ডোনার মন্ত্রক এবং বাংলাদেশের অংশের গঙ্গাসাগর রেল স্টেশন পর্যন্ত ৬.৭৮ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ বিদেশ মন্ত্রকের অনুদানে নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অংশে জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আগামীদিনে এই বহুল আকাঙ্ক্ষিত রেল সংযোগ প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন হবে। এই কাজ যাতে আর কোনও বাধার সম্মুখীন না হয় তার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের কাছে অনুরোধ করে এ সংক্রান্ত সামগ্রিক উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, এই রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলে আগরতলা থেকে কলকাতার দূরত্ব ভায়া ঢাকা হয়ে দাঁড়াবে ৫০০ কিলোমিটার। তখন প্রায় ১৬ ঘন্টায় কলকাতায় পৌঁছানো যাবে।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ডোনার মন্ত্রকের সার্বিক সহযোগিতায় ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে পরিকাঠামোগত, সংস্কৃতিগত সহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়নের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিক উদ্যোগ নিয়েছেন। ফলে গত ৯ বছর ধরে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ফলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে দিল্লির ব্যবধান অনেকটাই কমে গেছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তা এই অঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমেই প্রকাশ পাচ্ছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুনীত আগরওয়াল সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সচিব ও সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।