ব্যক্তি হিসেবে প্রত্যেকে যেমন আলাদা, তেমনই পরিস্থিতি অনুযায়ী মানুষের প্রতিক্রিয়াও তেমনই পৃথক। কঠিন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ যেমন সহজেই ভেঙে পড়েন, তেমনই মনোবল ধরে রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে দেখা যায় অনেককে।কিন্তু কথায় কথায় কেঁদে ফেলেন যাঁরা, তাঁদের নিয়ে কোথাও না কোথাও ছুৎমার্গ রয়েছে আমাদের। ঘনিষ্ঠবৃত্তে এমন লোকজন থাকলে, ছিঁচকাঁদুনে বলে রসিকতাও করে থাকি আমরা।একটুতে কেঁদে ফেলার অভ্যাসের সঙ্গে কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য জড়িয়ে। অবসাদ এবং উৎকণ্ঠায় ভোগেন যাঁরা, তাঁরা তো বটেই, স্নায়বিক অবস্থার কারণেও অনেকেই একটুতে কেঁদে ফেলেন।সিনেমার আবেগঘন দৃশ্য হোক, ভাল গান হোক বা কাছের জনের সহানুভূতির স্পর্শ, আবেগ ধরে রাখতে পারেন না অনেকেই। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে কান্নার মাধ্যমে।এমনিতে হয়ত ডাকাবুকো, সর্বদা হাসিখুশি। কিন্তু বিশেষ মুহূর্তে কেঁদে ভাসান কেউ কেউ। এমন মানুষ অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হন। অন্যের দুঃখ, কষ্টের সঙ্গে একাত্ম বোধ করেন।সিনেমার কোনও দৃশ্য হোক বা বইয়ের একটি বিশেষ অধ্যায়, অথবা আবেগঘন আলোচনা, কখনও কখনও নিজের পূর্বস্মৃতি ফিরে আসে। তা দুঃসহ কোনও অভিজ্ঞতা হতে পারে। তখন বাধ মানে না চোখের জল।অবসাদ এবং উৎকণ্ঠায় ভোগেন যাঁরা, সব সময় কার্যত খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁরা। তাই সামান্য আঘাত বা মনোকষ্টেও চোখের জলের বন্যা বয়ে যায়। পরিচিত বৃত্তে এমন কেউ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসার প্রয়োজন তাঁর।রাগ সামলাতে না পেরেও অনেকে কেঁদে ফেলেন জানেন কি? বিশেষ করে যাঁরা মুখচোরা প্রকৃতির। অন্য কোনও ভাবে রাগ প্রকাশের উপায় না থা থাকলে, চোখের জলেই তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কারণ রেগে গেলেও, চেতনা হারান না তাঁরা। তাই হিংসাত্মক না হয়ে চোখের জল ফেলেই নিজের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটানকথায় বলে সমস্যা কখনও একা আসে না। অর্থাৎ কখনও কখনও ঘরে-বাইরে একাধিক সমস্যা কাবু করে ফেলে আমাদের। কিন্তু মন খুলে কথা বলার লোক মেলে না। তাই মনের মত কাউকে পেলে তাঁর সামনে কেঁদে ফেলা অস্বাভাবিক নয়।প্রত্যেকের নিজের নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সকলের মস্তিষ্কের গঠনও আলাদা। সংবেদনশীলতা তার উপরই নির্ভর করে। অতি সংবেদনশীল মানুষ তাই সহজেই কেঁদে ফেলেন।



