সরকারি হোমে শাসক দলীয় ঠিকাদারদের গুন্ডাগিরির ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে হোমের কর্মীরা, এই ঠিকাদার গুন্ডাদের সর্দার হচ্ছেন বামুটিয়া মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক দেবজ্যোতি দেব উরফে মান্না। জানা গিয়েছে এই মান্না বাহিনী প্রতিনিয়ত হোমের কর্মীদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সমাজকল্যাণ এবং সমাজশিক্ষা দফতরের পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানগুলির ঠিকেদারী কাজে যুক্তরাই মান্নার নেতৃত্বে হুমকি দিচ্ছে অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে সব কর্মীদের বলে জানা যায়। তাছাড়া ফোন করে সুপারদের ধমকানো হচ্ছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মণ্ডল নেতা মান্না বাহিনীর এই হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলেন দৃষ্টিহীনদের বিদ্যালয় এবং অনাথ আশ্রমের কর্মীরা। যার ফলে এরা সমাজকল্যাণ দফতরে অধিকর্তার কাছে অভিযোগগুলি জানান, প্রতিষ্ঠানগুলির অধ্যক্ষা শুক্লা দেবরায় , কৃষ্ণা রায় গাঙ্গুলি – সহ অন্যান্য কর্মচারীরা । শুক্লা দেবরায় জানান , সাপ্লাই অর্ডার না পেলেই অনাথদের হোম এবং দৃষ্টিহীন বালক , বালিকাদের কর্মীদের বাড়ি পর্যন্ত পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পাশাপাশি শুক্লা দেবরায়ের দাবি , জুভেনাইলের চন্দন , সুপার অজিত ভৌমিক , স্টোর কিপার সঙ্গীতা ঘোষ , যাদব কুমার ঘোষ , চন্দন কুমার মল্লিক প্রত্যেককেই হুমকি দেওয়া হয় । জুভেনাইল হোমের সুপার অজিত ভৌমিক আতঙ্কে অফিসে আসেন না। এমনকী হোমের জঙ্গল পরিষ্কার করাতে তাদের না বলায় মান্না ফোন করে হুমকি দিয়েছে অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় গাঙ্গুলিকে। তারা হুমকি দেয় হোমের কাজ করাতে শ্রমিক নিলেও তাদের বলতে হবে । অনেক সময় সাপ্লাই অর্ডার অনুযায়ী জিনিস দেওয়া হয় না । এই জিনিস বাইরে থেকে কিনতে হয় । অথচ বাইরে থেকে কিনলে স্টোর কিপারদের ধমকানো হয় । প্রতিনিয়তই হুমকির মুখে কাজ করতে হচ্ছে । এসবের নেতৃত্বে যারা ঠিকেদার আছেন তারা । শুধু তাই নয় , যে ঠিকেদাররা অনাথ এবং দৃষ্টিহীনদের বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেন তাদের নিয়ে আগে থেকেই প্রচুর অভিযোগ রয়েছে, খাবার তারা ঠিক মতো দেন না, যে কারণে অনাথ সন্তানদের পুষ্টিহীন খাবার ছাড়াই দিনের পর দিন কাটাতে হয় । অথচ এই ঠিকেদারদের বাদ দেওয়ার মতো ক্ষমতা নেই হোমগুলির কর্মকর্তাদের। এর মূল কারণ নাকি মান্না। কেননা নরসিংগড়ের মান্না শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত, যে কারণে তার নির্দেশ অমান্য করার মতো ক্ষমতা নেই দৃষ্টিহীন বালক – বালিকা বিদ্যালয় থেকে শুরু করে জুভেনাইল হোমের সুপারের। শেষ পর্যন্ত থানায় নালিশ না করে অধিকর্তার কাছেই অসুবিধার কথা জানিয়ে গেলেন সরকারি এই প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মীরা। এদিকে সমাজকল্যাণ দফতরের অধিকর্তা শাসকদলের ঠিকেদারদের বিরুদ্ধে গিয়ে কতটুকু ব্যবস্থা নিতে পারেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।