রাজ্যেকে একটি স্বনির্ভর রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে । সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির অভিমুখ হল প্রান্তিক এলাকার জনগণের সার্বিক বিকাশ । আজ জিরানীয়া অগ্নিবীনা হলে বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , রাজ্যে গত চার বছরে ত্রিপুরাতে দুই লক্ষ আটাশ হাজার ঘরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । এখন পর্যন্ত ৫২ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে । প্রত্যেক বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হবে । কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্প যেমন পিএম কিষাণ , প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা- গ্রামীণ প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় আজ বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন , আগে কেমন ছিলাম , এখন কেমন আছি তা তুলনা করে দেখতে হবে । তিনি বলেন , প্রধানমন্ত্রী মোদীজীর দুরদর্শী প্রশাসনের ফলেই আমরা দ্বিতীয় জীবন পেয়েছি । করোনা অতিমারীর সময় আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রাণ বাঁচার । সেটা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী । প্রাণ থাকলে তো বাকী সব কিছু চাওয়া পাওয়া । প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা , কৃষক সম্মন নিধি , জলজীবন মিশন , প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে তিনি বলেন , এগুলি কেন্দ্রীয় প্রকল্প । কিন্তু আমরা এই ছোট্ট রাজ্যেও কিছু প্রকল্প তৈরী করেছি । মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনা , মুখ্যমন্ত্রী আদর্শ গ্রাম যোজনা , মুখ্যমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা , উন্নত গোধন প্রকল্প , মুখ্যমন্ত্রী মাতৃ পুষ্টি উপহার , মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক প্রকল্প । এগুলি চালু করা হয়েছে রাজ্যের মানুষের কল্যাণের জন্য । মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন , জীবনে সব সময় কি পেয়েছি তার হিসাব রাখা উচিত । কি পাইনি তার হিসেব করলে অসন্তুষ্টিতে ভুগতে হবে । অনেকে জীবনে অল্পেতে হতাশ হয়ে যান । কি করা উচিত তার প্রয়াস নেন না । এ প্রসঙ্গে এক বৃদ্ধার প্রসঙ্গ টেনে বলেন , ৮০ বৎসরের বৃদ্ধা জীবনবালা চক্রবর্তী যার ৪৫ বৎসরের একমাত্র ছেলে স্ট্রোকে মারা যান । তিনি পান । এই ভাতা দিয়ে দুই নাতিকে নিয়ে থাকেন তাছাড়া সংসারের জন্য এই বৃদ্ধ বয়সেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাপড় বিক্রি করেন । তিনি বলেন , এ ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , ত্রিপুরা একটি ছোট রাজ্য । যদি ত্রিপুরাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজীর সাথ অবশ্যই লাগবে । সকল প্রকল্পই মোদীজী দিয়েছেন । এখন বৃদ্ধ অনুষ্ঠানের প্রথম ভাগে তিনি কিছু সুবিধাভোগীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন । তাদের পরিবারের খোজ খবর নেন এবং কি কি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে তা জেনে নেন । আজ জিরানীয়া মহকুমার বিভিন্ন জায়গা থেকে সরকারি প্রকল্পের প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয় । মুখ্যমন্ত্রী মতবিনিময় সভায় নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন এবং সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের যে সুবিধা নিচ্ছেন তা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে জানান দেন । ২ য় পাতায় মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন , জনসাধারণের সাথে উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতবিনিময় এক অভিনব উদ্যোগ । এর আগে কোন দিন এরকম কর্মসূচি রাজ্যে হয়নি । একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুবিধাভোগীদের সাথে সরাসরি গিয়ে কথা বলছেন এটা ভাবাই যায় না । সেজন্য তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রীকে । অনুষ্ঠান শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী এবং তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী জিরানীয়া ব্লকের জয়নগর গ্রামপঞ্চায়েতে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন । একজন সন্তান সম্ভাবনা মা কে সাধ ভক্ষণ করান । মুখ্যমন্ত্রী এদিন একটি শিশুর অন্নপ্রাশনেও অংশ গ্রহণ করেন । মুখ্যমন্ত্রী অন্ত্যোদয় শ্রদ্ধাঞ্জলি যোজনায় একজনকে ২০০০ হাজার টাকা প্রদান করেন । একজন গর্ভবতী মহিলাকে মুখ্যমন্ত্রী মাতৃ পুষ্ঠি উপহারের সামগ্রীও তুলে দেন । পরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর প্রাপ্তদের ঘর পরিদর্শন করেন । অগ্নিবীনা হলে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন । ধন্যবাদসূচক বক্তৃতা রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস । তাছাড়া উপস্থিত ছিলেন জিরানীয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান মঞ্জু দাস , ভাইস চেয়ারম্যান প্রীতম দেবনাথ , জিরানীয়া নগরপঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন রতন কুমার দাস , সমাজসেবী গৌরাঙ্গ ভৌমিক প্রমুখ ।



