ত্রিপুরা বর্তমানে শিল্প ও পরিকাঠামোর বিকাশের ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। রাজ্যে শিল্প স্থাপনের জন্য বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই সরকার বদ্ধপরিকর। প্রাকৃতিক সম্পদ, শান্তিপূর্ন পরিবেশ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং দক্ষ মানব সম্পদের সমন্বয়ে বর্তমান ত্রিপুরা শিল্প স্থাপনে একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করছে। আজ সচিবালয়ের কনফারেন্স হলে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম লিমিটেড-এর এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গঠনে বর্তমান সরকার পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। নতুন বিনিয়োগ আনতে তথা শিল্প উদ্যোগীদের শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করতে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিল্পের উন্নয়নে শ্রমিকদের বিরাট অবদান রয়েছে। তাই নিগমকে দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনে লেবার ব্যাঙ্ক তৈরি করার উপর নজর দেওয়া প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার স্থানীয় পণ্য রাবার, বাঁশকে কাজে লাগিয়ে টিস্যুপেপার ইন্ডাস্ট্রি, ম্যাচ বক্স ইন্ডাস্ট্রি গড়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে। আজকের সভায় মুখ্যমন্ত্রী শিল্প অঞ্চলগুলির নিরাপত্তার দিকটির প্রতিও সজাগ দৃষ্টি দেওয়ার জন্য উপস্থিত আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরও বলেন, শিল্প স্থাপন সংক্রান্ত সমস্যা, নীতি প্রণয়নে এবং শিল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাবগুলির বিষয়ে সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করবে। বৈঠকে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়নের নিগমের চেয়ারম্যান নবাদল বনিক, মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী, অর্থ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন।
বৈঠকে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম লিমিটেড-এর সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরায় ১৪টি শিল্পাঞ্চল রয়েছে। আরও নতুন ৭টি শিল্পাঞ্চল স্থাপন পরিকল্পনাধীন রয়েছে। শিল্পাঞ্চলগুলিতে ১৯৩টি শিল্প সংস্থা চালু রয়েছে। আরও ১০৩টি শিল্প স্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আরও ৪টি শিল্প এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভারত সরকারের এম এস এম ই মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শান্তিরবাজার ও ফটিকরায়ে নতুন শিল্পাঞ্চল স্থাপনের জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বৈঠকে এছাড়াও শিল্প দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে টিআইডিসি-র এডিবি প্রজেক্ট, ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল
অঞ্চলগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা, লিজ রেন্ট ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা করেন। তিনি বলেন, কোন স্থানের উন্নতি নির্ভর করে তার শিল্পের উন্নতির উপর। ত্রিপুরায়ও শিল্পের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহ প্রকাশ করছেন।



