Wednesday, December 3, 2025
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদগ্রামীণ প্রকল্পে 'লুটতরাজ'! পুকুর খননের নামে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সালেমা পঞ্চায়েত...

গ্রামীণ প্রকল্পে ‘লুটতরাজ’! পুকুর খননের নামে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সালেমা পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে

গরিব মানুষের উন্নয়নের টাকা কি তবে জনপ্রতিনিধিদের পকেটে? ধলাই জেলার সালেমা পঞ্চায়েতের প্রধান অপূর্ব পোদ্দার-এর বিরুদ্ধে ওঠা একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় গোটা এলাকা। এক জনজাতি ব্যক্তির কাছ থেকে পুকুর খনন প্রকল্পের নামে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়া এবং সরকারি বরাদ্দের পুরো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত প্রধান তেলিয়ামুড়ার বিধায়িকা কল্যাণী রায়ের আত্মীয় হওয়ায় বিষয়টি রাজনৈতিক মহলেও ব্যাপক জল্পনার সৃষ্টি করেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এক হতদরিদ্র জনজাতি পরিবার। ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী: * সরকারি প্রকল্পে পুকুর খননের পাইয়ে দেওয়ার নাম করে পঞ্চায়েত প্রধান অপূর্ব পোদ্দার তাঁর কাছ থেকে নগদ ৬২,০০০ (বাষট্টি হাজার) টাকা ঘুষ নেন।
* প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর সরকারের তরফ থেকে বরাদ্দকৃত বিপুল অর্থ পঞ্চায়েত প্রধান নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন বা তুলে নেন।
* ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে প্রকল্পের পুরো টাকার বদলে মাত্র ২০,০০০ (কুড়ি হাজার) টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়।
অর্থাৎ, একদিকে ঘুষের টাকা এবং অন্যদিকে সরকারি প্রকল্পের টাকা—উভয় দিক থেকেই ওই ব্যক্তিকে শোষণ করার অভিযোগ উঠেছে।

২. বেনিফিশারিদের নামে টাকা তুলে ‘হরিলুট’

শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির সাথেই নয়, অপূর্ব পোদ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একটি বড়সড় দুর্নীতির চক্র চালাচ্ছেন। স্থানীয়দের দাবি, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের ‘বেনিফিশারি’ বা সুবিধাভোগীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরকারি টাকা ঢোকানো হয় ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা তাঁরা ভোগ করতে পারেন না। অভিযোগ, কৌশলে  সেই টাকা তুলে নিয়ে নিজের পকেটে ভরেন পঞ্চায়েত প্রধান। এইভাবে একাধিক উপভোক্তার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এই দুর্নীতির অভিযোগের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে। সালেমা পঞ্চায়েত প্রধান অপূর্ব পোদ্দার তেলিয়ামুড়া বিধানসভার বিধায়িকা কল্যাণী রায়ের আপন ভগ্নিপতি। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, বিধায়িকার আত্মীয় হওয়ার সুবাদেই তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন এবং প্রশাসনের নাকের ডগাতেই এমন দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়ার কারণেই এতদিন কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাননি। ভিডিও ফুটেজ এবং স্থানীয়দের বয়ান অনুযায়ী, এলাকার মানুষ এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে জনজাতি এলাকায় উন্নয়নের টাকা এভাবে লুট হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা অবিলম্বে অপূর্ব পোদ্দারের বিরুদ্ধে উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত এবং কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সরকারি প্রকল্প, বিশেষত এমজিএনরেগা (MGNREGA) বা পুকুর খননের মতো স্কিমগুলো গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ড। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরাই যদি রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেন, তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? বিধায়িকার ভগ্নিপতি হওয়ার কারণে প্রশাসন এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করবে কি না, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

4 × 2 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য