Thursday, November 20, 2025
বাড়িখবররাজ্যরাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষা হাবে পরিণত করতে...

রাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষা হাবে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর: মুখ্যমন্ত্রী

শিক্ষাকে অবশ্যই শিল্পের প্রয়োজনীয়তা, বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা, উদ্ভাবনী চিন্তাধারা এবং সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার বিকাশে রাজ্য সরকারের নীতি হলো শিক্ষার্থীদের গুণগত উন্নতিসাধন। যাতে তারা কেবলমাত্র ব্যক্তিগত উন্নতিই নয় বরং রাজ্য ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। আজ মহেশখলাস্থিত টেকনো ইন্ডিয়া ক্যাম্পাসে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা। উল্লেখ্য, আজ মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানের শুরুতে টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি অব ত্রিপুরা (টি.আই.ইউ.টি.)-এর একাডেমিক ব্লক-ডি, টেগোর লাউঞ্জ এবং একটি রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করেন। তাছাড়াও তিনি ভার্চুয়ালি টিআইইউটি-এর ছাত্র ও ছাত্রী নিবাস, অডিটোরিয়াম, উপাচার্যের বাসভবন এবং আবাসিক স্টাফ কোয়ার্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ওপেন জিম ও ওপেন থিয়েটারের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র এই প্রতিষ্ঠানের জন্য মাইলফলকই নয়, বরং এটি ত্রিপুরার শিক্ষাক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এই উদ্যোগ আমাদের রাজ্যে উচ্চশিক্ষার ক্রমাগত উন্নয়নেরই প্রতিফলন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ত্রিপুরা ছাড়াও পাঞ্জাব, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্য থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষালাভ করছে। এখানে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের শিক্ষার্থীও রয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-এর অনুসরণ করছে। এই শিক্ষানীতিতে বহুমুখী শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষা, উদ্ভাবনী পদ্ধতি এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, রাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছে। রাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষা হাবে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গুণগতমান বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষার জন্য শক্তিশালী পরিকাঠামো গঠনের মাধ্যমে শিক্ষাকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার প্রয়াস নিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরা এক সামগ্রিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগ এবং তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিদের উপস্থিতিতে টি.আই.ইউ.টি. এবং মহিলা পলিটেকনিক কলেজের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়।

অনুষ্ঠানে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে রাজ্যে ৩টি মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, বি.এস.সি. নার্সিং কলেজ রয়েছে। এ.এন.এম, জি.এন.এম. পড়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া সাধারণ ডিগ্রি কলেজের পাশাপাশি পলিটেকনিক, টি.আই.টি, এন.আই.টি, ন্যাশনাল ফরেন্সিক ইউনিভার্সিটি, কৃষি মহাবিদ্যালয়েও রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি স্তরে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে রাজ্যে রয়েছে।

আলোচনা করতে গিয়ে উচ্চশিক্ষামন্ত্রী কিশোর বর্মণ বলেন, একুশ শতাব্দী ভারতবর্ষের শতাব্দী হতে চলছে। এক্ষেত্রে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাই মূল কান্ডারী হবে। প্রাচীন ভারতবর্ষে নালন্দা, তক্ষশিলার মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সারা বিশ্বে জ্ঞান, গবেষণা ও মানবতার আলো ছড়িয়ে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চেষ্টা করছেন ভারতীয় মূল্যবোধ, উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে ভারতকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে রাজ্য এবং দেশের বর্তমান উচ্চশিক্ষার অগ্রগতির হাল হকিকৎ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা তথা টি.আই.ইউ.টি.-এর চ্যান্সেলর অধ্যাপক সত্যম রায় চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের অ্যাসিস্ট্যান্ট চেয়ারপার্সন অধ্যাপিকা মানসি রায় চৌধুরী এবং টি.আই.ইউ.টি.-এর উপাচার্য অধ্যাপক (ড.) রতন কুমার সাহা। এছাড়াও অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী প্রতীকী হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে একটি চারা গাছ রোপণ করেন। তাছাড়া ছাত্রছাত্রীদের প্রজেক্ট প্রদর্শনী, ঐতিহ্যবাহী ফুড স্টলও উদ্বোধন করেন তিনি। আজকের এই অনুষ্ঠানে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তাগণ ও ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

1 × two =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য