স্বাস্থ্য পরিষেবা রাজ্য সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। রাজ্যের বর্তমান সরকার রাজ্যবাসীকে উন্নত এবং আধুনিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে কাজ করছে। এই লক্ষ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর স্বাস্থ্য পরিষেবার সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগী রয়েছে। আজ আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার অডিটোরিয়ামে রাজ্যভিত্তিক স্টার এনসিডি (নন-কমিউনিক্যাবল ডিজিজেস) প্রকল্পের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের তিনটি বিভাগের হেলথ কাউন্সিল রেজিস্ট্রেশন পোর্টালের উদ্বোধন করেন। উল্লেখ্য, আইসিএমআর-এর জাতীয় স্বাস্থ্য গবেষণায় স্টার এনসিডি প্রকল্প অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেটরি কেয়ার পরিষেবাকে উন্নত করার মধ্য দিয়ে অসংক্রামক রোগের নির্ণায়ক চিকিৎসার সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরাতে অনেকেই অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন। ভারতবর্ষে এই ধরনের রোগী প্রায় ৬২ শতাংশ। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজ্যে রোগীর সঠিক সংখ্যা জানা যাবে পাশাপাশি তাদেরকে সঠিক চিকিৎসা প্রদানও করা সম্ভব হবে। এই প্রকল্পের অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যার ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক নতুন নতুন দিকও বেরিয়ে আসবে। দেশের চারটি রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা একটি যেখানে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। রাজ্যের গোমতী জেলায় এই প্রকল্প প্রথম ধাপে চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অসংক্রামক রোগ মানুষের জীবনশৈলীর উপর অনেক নির্ভরশীল। সচেতনতা এই অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধের একটি উপায়। তাই স্টার এনসিডি প্রকল্প রাজ্যের জন্য একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। রাজ্যের রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও এই রোগ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান বৃদ্ধিতে এই প্রকল্প সহায়তা করবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভারতের অনেক রাজ্যের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিতে অনেক আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি প্রয়োগ করে চলছে। মানুষ এতে অনেকে উপকৃতও হচ্ছেন। রাজ্যে এখন অনেক জটিল অপারেশন রাজ্যের চিকিৎসকদের দ্বারাই সম্পন্ন হচ্ছে। রোগীদেরও বাইরে যাবার প্রবণতা অনেক হ্রাস পেয়েছে। মানুষ রাজ্য স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর আস্থাশীল হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আজকের দিনটি খুবই উল্লেখযোগ্য। অসংক্রামক রোগ সারা দেশে নিরন্তর বেড়ে চলছে। ত্রিপুরাতেও এই রোগের অনেক রোগী রয়েছে। তাই ক্ষেত্র পর্যায়ে গিয়ে এই রোগের রোগী নির্ণয়, চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের জন্য এই প্রকল্প অনেক উপযোগী হবে। পরবর্তীতে রাজ্যের প্রত্যেক জেলাতে এর মনিটরিং হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে রোগী রেফার কেইস, রোগীকে সঠিক ঔষধ প্রদান ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। তাই সর্বোপরি এই প্রকল্প মানুষের অনেক উপকারে আসবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালের ডা. নিখিল টেন্ডন। বক্তব্য রাখেন ডা. আসু গ্রোভার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরা রাজ্য শাখার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ড. সামিত রায় চৌধুরী, রাজ্য পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, অধিকর্তা রাজ্য মেডিক্যাল এডুকেশনের প্রফেসর (ডা.) এইচ পি শর্মা প্রমুখ।