পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষকদের। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের ন্যায়বোধ, নীতিশিক্ষা, শিষ্টাচার ইত্যাদি মূল্যবোধের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে গড়ে তুললে একটি সুস্থ সমাজও গড়ে উঠবে। ফলে আদর্শ সমাজ গঠনে শিক্ষক সমাজের দায়িত্ব অপরিসীম। আজ কুঞ্জবনস্থিত স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এসসিইআরটি)- এর নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন ও শিক্ষক আবাসনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য, ৪০ শয্যা বিশিষ্ট শিক্ষক আবাসনটি তৈরিতে ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা এবং অ্যাকাডেমিক ভবনটি তৈরিতে ৬ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। দুটি ভবন নির্মাণে দায়িত্বে ছিল গ্রামোন্নয়ন দপ্তর।অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ বা রাজ্য কোন দিশায় এগুবে তা জাতির মেরুদন্ড হিসেবে শিক্ষকদের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ছাত্রছাত্রীদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে তা সুস্থ সমাজ গঠনেও সহায়ক হয়। ছাত্রছাত্রীদের সুপ্ত প্রতিভাকে কিভাবে বিকশিত করা যেতে পারে তারজন্য এসসিইআরটি-র মাধ্যমে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়ে থাকে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাচীনকালে আমাদের দেশের নালন্দা, তক্ষশীলার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করতে আসতো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিক্ষার এই সোনালি দিন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছেন। ২০১৪ সালে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই প্রায় ৩৪ বছর পর দেশে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি চালু হয়। শিক্ষা, উদ্ভাবন ও গবেষণার গুণগতমান উন্নত করার উদ্দেশ্যেই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে বহু সংস্কার করেছে। তা সত্বেও ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট টিউশনের প্রতি ঝোঁক কেন তা নিয়ে চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। এসসিইআরটি সহ শিক্ষা দপ্তরকে প্রাইভেট টিউশন বন্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ করার জন্যও উদ্যোগ নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, রাজ্যে শিক্ষা সংস্কার ও গবেষণার কাজটি এনসিইআরটি গুরুত্ব সহকারে করে যাচ্ছে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে পাঠক্রম তৈরি করার ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরার এসসিইআরটি প্রশংসনীয় কাজ করছে। শিক্ষকদের গুণগত পাঠদানে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও এসসিইআরটি গুরুত্ব সহকারে করে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ড. ধনঞ্জয় গণচৌধুরী এবং এসসিইআরটি-র অধিকর্তা এল ডার্লং। অনুষ্ঠান মঞ্চে শিক্ষকদের হ্যান্ডবুক ‘সহর্ষ’, ‘রিসার্চ কমপ্লিশন বুক’, বহুভাষিক পুস্তিকা ‘ঐকতান’ এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর নতুন পাঠ্য পুস্তকের আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ও সিপাহীজলা জেলার জেলা শিক্ষা আধিকারিকের হাতে ই-ক্লাসের হার্ড ডিস্ক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।