বাসুদেব ভট্টাচার্য খোয়াই ৩০শে এপ্রিল….সমাজের গরীব বংশের মানুষদের পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করা খুবই একটি ভালো কাজ।কিন্তু অনেক লোক সমাজে রয়েছে তারা চাইলেও সেই ভাবে সমাজের গরিব অংশের মানুষদের জন্য কিছু করতে পারে না এর পিছনে অনেক কারণও রয়েছে অনেক ধরনের বাধ্য বাধকতাত রয়েছে।আবার অনেক লোক আছে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন ছাড়াই পর্দার আড়ালে থেকে সুন্দরভাবে সামাজিক কাজ গুলি করে যান এর প্রতিদানে তারা যদিও কিছু চায় না,ওরা চায় শুধু সমাজের জন্য কিছু করে দেখাতে।তেমনি কিছু ঘটনা সংবাদ মাধ্যমের চোখে ধরা পড়ে খোয়াই মহকুমা তবলা বাড়ির একটি ঘটনা একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে তা জনসমক্ষে প্রচারের জন্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি।যাতে করে এই ধরনের সামাজিক কাজে সমাজ সেবকরা এগিয়ে এসে গরিবদের কষ্ট দূর করতে সাহায্য করে।আর এই ধরনের সামাজিক কাজ যারা করছে তাদের প্রতি রইল আমার কুর্নিশ।ঘটনাটি ছিল এমন গত প্রায় এক বছর ধরে সামাজিক মাধ্যমে একটি ঘটনা ঘুরপাক খাচ্ছিল বিপ্লব ও বাদলের পরিবারের অভাব অনটনের জীবন কাহিনী। তেমনি একদিন দুই ছেলে বাদল ও বিপ্লবের বাবার স্কুল জীবনের সহপাঠীর সঙ্গে হঠাৎ করে একদিন সাক্ষাৎ তাদের । এই সাক্ষাতের কারণে ঐ দুই ছেলের পরিবার এবং বাদলের পড়াশোনা চালানোর জন্য যে সহযোগিতার হাতে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের সমীর কাকু সেটা ছিল কোনদিন ভুলবার মতো না। যে ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছিল সেটি ছিল এমন হঠাৎ একদিনের সাক্ষাতে যে কি পরিমান উপকৃত হয়েছে বিপিনি ওরাং এর পরিবার সেটা বলতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত বিপিন ওরাং প্রতিবেদকের সাথে এক সাক্ষাতে বলবার চেষ্টা করেন তিনি। কথা বলতে গিয়ে বিপিন ওরাং বলেন গত এক বছর আগে আমার দুই ছেলে বিপ্লব ও বাদল জঙ্গল থেকে লাকরি সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে গিয়েছিল বিক্রি করতে।এবং বিক্রি শেষে বাড়ি ফেরার পথে খোয়াই মহাকুমার অন্তর্গত মধ্য গনকি পঞ্চায়েতের বাজারে বিপিন ওরাং এর স্কুল জীবনের সেই সহপাঠী সমীরের সঙ্গে দেখা হয়। জানি আমার সহপাঠী এখন নেতা হয়েছে কিন্তু তাকে দেখতে পাওয়া যায় না ।সমীর তখন আমার দুই ছেলের নাম জিজ্ঞেস করে ও তাদেরকে টিফিন খাওয়ায় এবং আমার খোঁজ নেয় কেমন আছি। এবং আমার ছোট ছেলেকে প্রতিমাসে চার হাজার টাকা করে সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছে সমীর। বিপিন ওরাং কে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় এই ভাতার পাওয়াতে কতটুকু উপকৃত হয়েছেন উত্তরে তিনি বলেন আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ কাজকর্ম করতে পারিনা পক্ষাঘাতের কারণে। তার উপর ছেলেদের মা ও মারা গিয়েছে সংসারে রোজগারের করার মত কেউ নেই তার উপর বড় ছেলে বিপ্লব ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়াশোনা করে পরিবারের কথা চিন্তা করে ওর পড়াশোনা বদ্ধ করতে বাধ্য হই। আমার সহপাঠী নেতা বাবু সমীর ছোট ছেলের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়াতে আমারা প্রাণে বেঁচে গেছি এবং তাতে করে ছোট ছেলের পড়াশোনা চলছে। ঈশ্বর সমিরের মঙ্গল করুক বলে প্রার্থনা করে বিপিন ওরাং।এখন আসি মূল ঘটনায়।ঘটনাটি ঘটেছিল আজ থেকে এক বছর আগে খোয়াই মহকুমা এলাকার মধ্য গণকি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজারে বসেছিলেন বিজেপি খোয়াই জেলা কমিটির সম্পাদক সমির কুমার দাস এক পানের দোকানে।সেখানে বসে তিনি লক্ষ্য করেন একটি ছোট ছেলে ওই দোকানে এসে এক প্যাকেট বিস্কুট চাইলে যথারীতি দোকানদার এক প্যাকেট বিস্কুট দিলেন এবং ওই ছোট ছেলে অর্থাৎ বাদল ওরাং দোকানদারকে ১০ টাকা দিয়ে চলে যাচ্ছিল, দোকানদার ডাক দিয়ে ছেলেটিকে বলল বিস্কুটের দাম ২০ টাকা, সঙ্গে সঙ্গে বাদল মাথা নিচু করে বিস্কুটের প্যাকেটটি ফিরিয়ে দিলেন দোকানদারকে এবং চলে যাচ্ছিল সেই সময় বিজেপি খোয়াই জেলা কমিটির সম্পাদক সমীর বাবু বিষয়টি লক্ষ্য করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে দোকানদারকে বললেন বিস্কুটের প্যাকেটা দিয়ে দেওয়ার জন্য টাকা উনি দিবেন। তারপর তিনি তাদেরকে ডেকে আনেন এবং টিফিন খাওয়ান ও তাদের পরিচয় সহ সমস্ত ঘটনা শুনেন। সমীর বাবু যখন শুনলেন তার সেই স্কুল জীবনের সহপাঠী বিপিন ওরাং এর ছেলেরা হল বিপ্লব এবং বাদল, বিপিনের এই অবস্থা জানতে পেরে খুবই মর্মাহত হলেন সমীর কুমার দাস। সব শুনে তিনি সর্বশক্তিমান এর কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না তারপর সমীর বাবু কিছু পরিমাণ বাজার সদাই করে তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং বলে দেন কিছু প্রয়োজন পড়লে তারা যেন সমীর কাকুকে জানায়। সমীর কুমার দাস শুধু দুঃখ প্রকাশ করে সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি চিন্তা করছিলেন কি করে এই দুস্থ পরিবারটিকে একটু সাহায্য সহযোগিতা করা যায় পরবর্তীতে তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এই পরিবারটির জন্য অর্থাৎ বাদল ওরাং এর জন্য শিশু কল্যাণ দপ্তরে ভাতা দেওয়ার জন্য আবেদন করেন । যথারীতি রাজ্য সরকার সমীর দাশের আবেদনে সাড়া দিয়ে বাদল ওরাং জন্য ভাতার মঞ্জুরি প্রদান করেন এবং যথারীতি প্রতিমাসে চার হাজার টাকা করে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ভাতার টাকা পেয়ে যাবে। দাস বাবুর এই সহযোগিতার কথা বিপিন ওরাং এর পরিবার কোনদিন ভুলবে না ।
আমাদের সমাজে বিপিন ওরাং এর মতো পরিবার নেহাত কম হবেনা, কিন্তু সমীর বাবুর মত পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করার মতো লোক অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য।সমীর দাস যে কাজটা করে দিয়েছে বিপেনের পরিবারের জন্য, তার জন্য বিপিন যেমন সমির দাসের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবে পাশাপাশি সমীর দাসের এই কাজের জন্য বাহবা পাবার যোগ্যতা রাখে।এর জন্য সমীর দাসের প্রতি একটাই কথা বলা যায় উনার এই ধরনের সামাজিক কাজ যেন উনি নিরন্তন চালিয়ে যান এবং এর জন্য ঈশ্বর ওনাকে আশীর্বাদ করবেন ওটাই বলতে পারি।সমীর দাসের মতন সমাজে এই ধরনের লোকেরা আছে বলেই আজও সমাজ অনেক সুন্দর।
বাসুদেব ভট্টাচার্যের খোয়াই।