রাজ্যের বাম বিরোধী কর্মচারী সংগঠন কর্মচারী ফেডারেশনের বিভাগীয় কমিটির সম্পাদক প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য শুক্রবার সরকারি চাকুরী ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করলেন কংগ্রেস দলে সুদীপ রায় বর্মন ও আশীষ সাহার সামনে 22 পরিবারের ১১৮ জন ভোটারদের নিয়ে কংগ্রেস দলে যোগদান করেন । ওইদিন আগরতলা থেকে ফিরে এসে রাতেই খোয়াই কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তিনি কি কারনে চাকরি ছেড়ে সরাসরি কংগ্রেস দলে যোগদান করলেন তা বিস্তারিত তুলে ধরেন।
কর্মচারী ফেডারেশনের জাদরেল এই নেতা প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য সাংবাদিক সম্মেলনে প্রথম চাকুরী জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করেন ১৯৮৮ সালে কংগ্রেস জোট সরকার আসার পর ১৯৯০ সালে শিক্ষকতা চাকরি পান এনএসওয়াই সংগঠন করার সময়কালে এরপর ৯৩ তে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসলে ১৯৯৪ সালের এমনই অক্টোবর মাসে উনাকে বদলি করা দেওয়া হয় সুদূর ছিলাছড়িতে সেখানে ছয় বছর চাকরি করেন এরপর ৬ বছর উদয়পুরের বাঘমাতে চাকুরী করেন ইতিমধ্যে চাকরি করা অবস্থায় কালীন বাগমা এবং খোয়াই মিলিয়ে উনার উপর দশবার হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছিল তৎকালীন সময়ে কিছু দুষ্কৃতীরা যদিও বামফ্রন্ট দলের কিছু বন্ধুদের কারণে প্রাণ বেঁচে যান। এরপর উদয়পুরের দুধ পুসকরনি হাই স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয় এরপর তিনি খবর পান ঐদিন স্কুলে জয়েন করার পর বিকেলে ফেরার পথে স্কুলের গেটের সামনে উনাকে হত্যা করা হবে এই খবরটাও পেয়ে যান ওই জায়গার জেলা শিক্ষা দপ্তরের কয়েকজন বামপন্থী নেতৃত্বদের কারণ। তিনি এও বলেন জীবনে কোনদিন কম্প্রোমাইজ করেননি তাই সম্মানের সাথে শিক্ষকতার কাজ করে গেছেন যার ফলে অনেক গুণগ্রাহী ছাত্র রয়েছে। এরপর সেখান থেকে কর্মচারী সমন্বয়ে নেতা হারাধন চক্রবর্তীর হাত ধরে আমার খোয়াই ঘিলাতলী স্কুলে বদলি হয়ে আসেন। শুক্রবার রাতে খোয়াই কংগ্রেস ভবনে প্রেস মিট করতে গিয়ে প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য জানান ২০১৮ সালে রাজ্যের নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কর্মচারী ফেডারেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল যার জন্য আগরতলা জ্যাকসন গেইটে কর্মচারী সমন্বয় অফিসে বিজেপির নেতৃত্বরা প্রায় সময় এসে সলা পরামর্শ করতেন। কিন্তু দেখা গেছে সরকার গঠনের পর গুটিকয়েক শাসক দলীয় কিছু শিকি আধুলি নেতাদের ষড়যন্ত্রের কারণে উনাকে বহুবার বদলি করিয়েও যখন পারছিলেন না তখন উনার উপর প্রাণঘাতি হামলাও করা হয় ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর যা সবাই জানে। শুধু তাই না সরকারের দ্বিচারিতা ভাব সুশাসনের নামে রাজ্যে চলছে অপশাসন মিথ্যে আশ্বাসের বুলি দিয়ে শিক্ষিত যুবসমাজদের কর্মহীন বানিয়ে রাখা হয়েছে তাছাড়া গোটা রাজ্যে শিক্ষা স্বাস্থ্য সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি একেবারে ভেঙে পড়েছে । এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্যের গায়ে সুদীপ পন্থীর তোকমা লাগিয়ে দেয় বিজেপি কর্মচারী সংগঠনের কিছু নেতারা এছাড়া অনেকভাবে ওনাকে লাঞ্ছিতে হতে হয়েছে বলেও জানান। শেষে বাধ্য হয়ে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিতে সিদ্ধান্ত নেন। শুক্রবারই তিনি রাজ্য শিক্ষা দপ্তর থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদ্যুৎ বাবু বলেন তিনি সর্বদাই সুদীপ রায় বর্মনের একান্ত অনুগামী। আর এ কারণেই তিনি আর চাকরি করতে পারবেন না বুঝেই এই সিদ্ধান্ত নেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে বক্তব্য রাখেন এবং এও বলেন এক সময় মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল এখন মানুষ পরিবর্তনের পরিবর্তন চাইছে তাই আগামী দিন মানুষ কংগ্রেসকেই বিশ্বাস করে ভোট দেবে বলে আশাবাদি কারণ মানুষ বাম বিজেপিদের কার্যকারিতা দেখে নিয়েছে কাজের কাজ কিছুই করেনা মিথ্যা আশ্বাসের বুলি দিয়ে দাবিয়ে রাখে। কিন্তু কংগ্রেস আমলে যে পরিমাণে চাকুরী এবং সুযোগ সুবিধা করে দিয়েছিল তার পরিসংখ্যানে বলা যায় আজ অব্দি কোন সরকার তা করে দেখাতে পারিনি আর ভবিষ্যতেও পারবে না কংগ্রেস কথা দিলে কথা রাখে ওটাই কংগ্রেস দলের মহিত্মতা।এই দিনের এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খোয়াই ব্লক কংগ্রেস সভাপতি যতীন্দ্র গোপ, কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী ননীগোপাল দেবনাথ সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। এই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্যকে কংগ্রেস দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয়।



