বিশালগড় থানাধীন দুর্গানগরস্থিত শিবনগর এলাকার বাসিন্দা নোটন দাস পেশায় কাঠমিস্ত্রি গত বছরের ২৫ অক্টোবর রাতে নিখোঁজ হয়েছিল। বিশালগড় থানায় যার মামলা নম্বর BLG-93/21। এখানে উল্লেখ্য বিশালগড় থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর পার্থ নাথ ভৌমিক অত্যন্ত দ্রুততার সাথে মামলার তদন্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে ১১ দিনের মাথায় নিখোঁজ নোটন দাসের মৃতদেহ কলমচৌড়া থানাধীন বাঘবের এলাকার গভীর জঙ্গলে মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল এবং হত্যার পেছনে মূল কারণ হিসাবে উঠে এসেছিল নোটনের স্ত্রী সোনালি দাসের পরকীয়া প্রেম। পুলিশ তদন্ত মূলে জানতে পারে নোটনের স্ত্রী সোনালি দাসের দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক ছিল অভিজিৎ দাস ওরফে চানুর সাথে। ফলে তাদের এই প্রেমের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় নোটন। এই কারণে নোটনের স্ত্রী এবং তার প্রেমিক মিলে নোটনকেই পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করে। যার অঙ্গ হিসাবে ২৫ অক্টোবর রাতে নিজ বাড়ি থেকে নোটনকে ফোন করে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে গভীর জঙ্গলে মাটি চাপা দিয়ে দেয় অভিজিৎ দাস। পরে পুলিশ নোটনের স্ত্রী এবং তার প্রেমিককে আটক করে জেলে প্রেরণ করে। অপরদিকে মামলার তদন্তকারী অফিসার দ্রুত মামলার তদন্ত কার্য সম্পন্ন করে আদালতে চার্জশিট জমা করে এবং আসামীদের জুডিশিয়াল কাস্টডিতে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আবেদন জানান। কিন্তু বিশালগড় মহকুমা আদালতের তৎকালীন এপিপি জ্যোতিপ্রকাশ সাহার বদান্যতায় দুজনেই জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। জামিনে ছাড়া পেয়ে আসামী অভিজিৎ দাস প্রায়শই নোটন দাসের বাড়ির সামনে এসে উশৃংখল আচরণ করত বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অভিযুক্তের বাড়ি বক্সনগর হওয়া সত্বেও মঙ্গলবার সে পুনরায় চলে আসে দুর্গানগরস্থিত শিবনগরে নোটন দাসের বাড়ির সামনে। তখন নোটন দাসের ভাই বিল্টন দাসকে দেখে অভিযুক্ত নানা ধরনের কটুক্তি করতে থাকে। এতে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিল্টন এবং তাকে মারতে উদ্যেত হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুজে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত অভিজিৎ দাস ফলে বিল্টনও তার পেছনে ধাওয়া শুরু করে। দৌড়তে দৌড়তে শিবনগর থেকে প্রায় ১ কিমি দূরে চেলিখলাস্থিত গজারিয়া এলাকায় গিয়ে তাকে ধরতে সক্ষম হয় এবং সেখানেই শুরু করে উত্তম মাধ্যম। কিন্তু এলাকাবাসীরা ছুটে আসলে অভিযুক্তকে সেখানে ফেলেই বাড়ি চলে আসে নোটনের ভাই। পরে এলাকাবাসীর তরফে বিশালগড় অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের খবর দেওয়া হলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে অভিযুক্তকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর বিশালগড় হাসপাতালে চিকিৎসকরা তাকে আগরতলা রেফার করে দেয়। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য বিরাজ করছে গোটা এলাকায়।



