সালটা ছিল দু হাজার তিন সাল। সন্ত্রাসবাদের পোষক হায়েনাদের দৃপ্ত পদচারনায় গোটা ত্রিপুরা রাজ্যের আকাশ বাতাস ভারি ছিল। প্রায় প্রতিমুহূর্তেই অনিদ্রায় এবং আতঙ্কে রাজ্যবাসীকে দিন কাটাতে হতো। তাই প্রতিদিন দিকে দিকে সন্ত্রাসবাদের মদতপোস্ট হায়েনাদের আক্রমণ অব্যাহত থাকতো। কখনোবা চলত নির্বিবাদে খুন, কখনোবা চলতো অগ্নি সংযোগ, অপহরণের মতো ঘটনা।
গোটা ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে খোয়াই জেলার বিভিন্ন প্রান্তর উগ্রপন্থীদের সন্ত্রাসবাদের অতুর ঘরে পরিণত হয়েছিল। খোয়াই জেলার দিকে দিকে সন্ত্রাসবাদী উগ্রপন্থীদের আস্ফালন পরিলক্ষিত হতো প্রায় প্রতিনিয়ত। এরকমই এক ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী কল্যাণপুর থানাধীন উত্তর কমলনগর গ্রামে। আজ থেকে ২০ বছর আগে আজকের দিনে উত্তর কমলনগর গ্রামে রচিত হয়েছিল এক বর্বরতম ইতিহাস। সন্ত্রাসবাদের তপ্ত বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গিয়েছিল ১৪ টি তাজা প্রাণ। আজও কমলনগর সহ গোটা কল্যাণপুরবাসী এই অভিশপ্ত 14 ই আগস্টের কথা ভুলতে পারেনি। ১৪ ই আগস্ট আসলেই স্বজন হারাদের মর্ম বেদি আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে কমলনগর এলাকার। বিগত বাম জমানায় একবারও ওইদিনের ঘটনায় নিহতদের স্মৃতিচারণার জন্য কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করা না হলেও বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় বিধায়ক পিনাকি দাস চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ১৪ই আগস্ট এর নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এবছরও এর অন্যথা হয়নি। সকাল সকাল কমলনগর এর অভিশপ্ত সেই গ্রামে আয়োজিত হল শহীদ স্মরণের অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক পিনাকি দাশ চৌধুরী, বিজেপির মন্ডল সভাপতি জীবন দেবনাথ প্রমুখরা।
খোয়াই তেলিয়ামুড়া সড়ক লাগোয়া উত্তর কমলনগর এলাকায় যে চৌদ্দটি তাজা প্রাণের বলিদানের স্বীকৃতি হিসেবে শহীদ স্মারকগুলি রয়েছে, সেই স্মারকগুলিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করার পর বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী ওইদিনের ঘটনাকে বর্বরতম ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন শুধু কমলনগর নয়, কমিউনিস্ট শাসনে গোটা ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যেই কালো শাসন কায়েম ছিল। আগামী দিনে যাতে করে আর কোনদিন এরকম কালো শাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটতে না পারে তার জন্য সকলকে সজাগ সতর্ক থাকার জন্য এদিন উত্তর কমলনগরে দাঁড়িয়ে আরো একবার আহবান করলেন কল্যাণপুরের বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী।।



