গোপেশ রায় ,তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধিঃ—
অন্যান্য বছরের মতো এবছরও পালিত হলো ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা তেলিয়ামুড়া চৈতন্য আশ্রমে। ভক্ত দের উপস্থিতিতে চৈতন্য আশ্রমের প্রাঙ্গণ থেকে কীর্তন করে শুরু করে রথযাত্রা উৎসব ।আশ্রম চত্বরে বিশেষভাবে সজ্জিত হয় শ্রীজগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীর রথ। দুপুর থেকেই ভক্তরা রথ টানার জন্য আশ্রম প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। ধর্মীয় আচরণ ও পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় রথযাত্রা। পরে তেলিয়ামুড়া শহর পরিক্রমা করে গৌরাঙ্গটিলার হরিধন দাসের বাড়িতে জগন্নাথ ফিরে যান । ওখানে সাত দিন থেকে পুনরায় চৈতন্য ফিরে আসবেন। পাশাপাশি ভক্তদের বিতরণ করা হয় প্রসাদ। শুধু চৈতন্য আশ্রমই নয়, রাজনগর, গৌরাঙ্গটিলা, করইলং, ইচারবিল, গামাই বাড়ি কালিটিলা ইত্যাদি এলাকা থেকেও ছোট ছোট রথ বের হয়ে অলিগলি পথ পরিক্রমা করে।
রথযাত্রা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তেলিয়ামুড়া চৈতন্য আশ্রমের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রামানন্দ গোস্বামী জানান,,, প্রতি বছর এই রথযাত্রা উৎসব’কে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আগত ভক্তরা অংশগ্রহণ করেন। এই উৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার নয়, এটি এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। তাছাড়া তিনি এটাও জানিয়েছেন, আমরা জানি যে জগন্নাথ দেব ৭ দিনের জন্য মাসির বাড়িতে যান। তা প্রকৃতপক্ষে সাত(৭) দিনের না। যেতে একদিন এবং ফিরতে একদিন, মোট নয়(৯)দিন। আর জগন্নাথ দেব মাসির বাড়িতে নন,,,পৌরানিক শাস্ত্রে উল্লেখিত আছে যে, জগন্নাথ দেব নয়(৯) দিনের জন্য গণ্ডি চামুন্ডিতে যান।
এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পুলিশ ও মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে এ রথযাত্রা কে কেন্দ্র করে একটা অপ্রীতিকর ঘটনা হয়েছিল বিগত কিছু বছর আগে কুমারঘাটে। তার জন্য তেলিয়ামুড়া’তে শুক্রবার বিদ্যুৎ দুপুর ২:৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬ঃ৩০ পর্যন্ত বন্ধ রাখা নির্দেশ দিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। যাতে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। উল্লেখ্য,প্রশাসনের বিভিন্ন নির্দেশিকা মেনে এবারের চৈতন্য আশ্রমের রথ একটা টং ঘরের রূপ নিয়ে বের হয় তেলিয়ামুড়া শহরে। যা সবার মনে প্রশ্ন জাগে এত ছোট রথ কেন? তারপর ও সব মিলে এ রথযাত্রাই আনন্দে মেতে উঠলো তেলিয়ামুড়া জনগণ।