বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ২৮শে ডিসেম্বর…….রাইট টু এডুকেশনের প্রচার ও প্রসারের জন্য জনগণকে বার্তা দিতে নিজের বাইসাইকেল নিয়ে ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লেন মধ্যপ্রদেশের কেহেরা খাসবের সুপ্রি জেলার যে বাসিন্দা তথা বর্তমানে দিল্লি নিবাসী এক যুবক প্রশান্ত রামেশ্বর শর্মা। রাইট টু এডুকেশন এর বার্তা নিয়ে ভারত ভ্রমণের অঙ্গ হিসেবে যখন খোয়াই মহকুমা শহরের সুভাষপার্ক এলাকায় উনার সাথে দেখা হলে এক সাক্ষাতে তিনি ভারত ভ্রমণের কথাটি জানান সংবাদ প্রতিনিধির কাছে। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান চলতি বছরের ৮ ই মার্চ দিল্লি ইন্ডিয়া গেইট থেকে সারা দেশ জুড়ে রাইট টু এডুকেশনের প্রচার ও প্রসারের জন্য নিজের বাইসাইকেল নিয়ে ৩৬৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন । তাতে তিনি গত নয় মাসে ভারতের ২৯ টি রাজ্য ভ্রমণ করে নিয়েছেন সেই স্লোগানকে সামনে রেখে। অবশেষে গত কয়েকদিন আগে মিজোরাম রাজ্যের দাম ছড়া হয়ে ত্রিপুরাতে প্রবেশ করেন। এরপর দাম ছড়া থেকে মনু হয়ে আগরতলায় আসেন তিনি। এরপর আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমায় রাইট টু এডুকেশনের বার্তা নিয়ে ঘুরে বেড়ান। শেষে শনিবার দুপুরে আগরতলা থেকে খোয়াই হয়ে ধর্মনগর যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিছুক্ষণের জন্য খোয়াইতে পদার্পণ করেন প্রশান্ত রামেশ্বর শর্মা। এরপর ধর্মনগর থেকে মেঘালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন । উনি এক বছরের পরিকল্পনা নিয়ে ভারত ভ্রমণে বের হন বলে জানান সেই মেসেজটি দিতে। পেশায় তিনি একজন জার্নালিস্ট। ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলে ১২ বছর কাজ করেছেন। ভারত ভ্রমণের জন্য এক বছরের ব্রেক নিলেন তিনি রাইট টু এডুকেশন বার্তা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে। পাশাপাশি তিনি এও বলেন সমস্ত ভারতবর্ষে কি রয়েছে সেটা দেখা ও বুঝার জন্য এবং এই দেশের কৃষ্টি ,সংস্কৃতি, খাদ্য, বেশ ভুসা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু অনুধাবনের জন্যও এই ভ্রমণটি ওনার কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এরপর তিনি মেঘালয় থেকে বিহার হয়ে কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। যদিও ওনার ভারত ভ্রমণ শেষের পথে হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্য রয়েছে। ত্রিপুরাতে এসে কেমন লাগলো সেই কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমা ঘুরে যখন খোয়াইতে আসলেন তিনি খুবই আবেগ আপ্লুত রাজ্য বাসীর বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে। তবে ওনার কর্মজীবনের সঞ্চয়ের টাকা দিয়েই ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছেন তিনি। এর জন্য সরকার বা কোন এন জি ওর পক্ষ থেকে কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করেনি। যা করছেন নিজের উপার্জিত অর্থ ব্যয় করে। তবে যেখানে গেছেন সেখানকার জনগণ উৎসাহিত করেছেন তাতে ওনার মনোবল আরো বৃদ্ধি হয়েছে যা ত্রিপুরা রাজ্যেও হয়েছে । এর জন্য ওনার পক্ষ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানান। ত্রিপুরাতে এসে খাওয়া খাদ্য থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুর উপর ওনার কি উপলব্ধি বা অনুভব হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখানে এসে খুবই ভালো লেগেছে। সব ধর্মের কালচার দেখতে পেয়েছেন। ভারতবর্ষের সব ধর্মের মানুষ এই রাজ্যে বসবাস করতেও দেখেছেন। হিন্দু,মুসলিম, শিখ খ্রিস্টান , জৈন, বুদ্ধ, গুরদুয়ারা তাদের প্রত্যেকের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে রাজ্যে যা দেখে তিনি খুবই আনন্দিত। গত ২৫ শে ডিসেম্বর ক্রিসমাস ডে এই দিনটি ও রাজ্য থেকে উপভোগ করেছেন আনন্দের সাথে। রাজ্য একটি মিশ্র কালচার রয়েছে। রয়েছে রাজ্যে বিভিন্ন উপজাতি অংশের নাগরিকরা তাদের সাথে কথা বলে উনি খুবই আনন্দিত এবং অনেক সময় ও কাটিয়েছেন তাদের সাথে। হাওয়া দেওয়ার দিক দিয়ে তিনি একজন নিরামিষ ভোজী। তাই তিনি রাজ্যের ট্রেডিশনাল খাবারগুলি খেতে পারেননি। তবে উনার ইচ্ছা বিশেষ করে বাঙ্গালীদের বিশিষ্ট খাবার এবং উপজাতিদের ট্রেডিশনাল খাদ্য গুলি অদুর ভবিষ্যতে খেয়ে দেখবেন বলে জানান। জার্নালিস্টের পাশাপাশি তিনি একজন ব্লগার উনার একটি ইউটিউবে চ্যানেল রয়েছে যার নাম হচ্ছে সাইকেল ইয়াত্রি ২৪ নামক একটি চ্যানেল। যেখানে উনার সমস্ত ব্লগের ভিডিও আপলোড করে থাকেন। এর পাশাপাশি ওনার ৩৬৫ দিনের এই সফর শেষে এই সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজে একটি বায়োগ্রাফি লিখবেন বলে জানান।