খোয়াই প্রতিনিধি ৩০শে ডিসেম্বর…..বিগত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।রাজ্য সরকার সেই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য চেষ্টা করলেও স্বাস্থ্য দপ্তরে কিছু আমলারা নিজেদের মর্জি মাফিক কাজ করে চলেছে আর তাতে করে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার মান খুবই খারাপ।না হলে খোয়াই জেলা হাসপাতালে রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকারতা সহ অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকদের শফর কালে খোয়াই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত এক রোগীকে হাসপাতালের পক্ষ থেকে তিন মাস অতিক্রান্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিলি করা হয় তাতে রোগীদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়ে এই হলো স্বাস্থ্য পরিষেবা। দেখা গেছে আজ থেকে ১১ বছর আগে কোন ধরনের পরিকাঠামো ছাড়াই ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন সরকার খোয়াই মহকুমা হাসপাতালকে জেলা হাসপাতালে পরিণত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর থেকে খোয়াই জেলা হাসপাতালকে প্রকৃত জেলা হাসপাতালের রূপ দিতে ১১ বছর কেটে গেছে অথচ আজও হাসপাতালটির প্রকৃত ভাবে সেই পরিকাঠামোই গড়ে ওঠেনি। বহুবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক, পূর্ত আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকের পর বৈঠক হয়েছিল নতুন জেলা হাসপাতাল তৈরির লক্ষ্যে। কিন্তু দেখা গেছে জেলা হাসপাতাল তৈরির প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায় হাসপাতালের জায়গা নির্ণয় নিয়ে।একটি জেলা হাসপাতাল তৈরি করতে যতটুক জায়গা দরকার সেই জায়গা বর্তমান খোয়াই জেলা হাসপাতাল চত্বরে নেই। আর এর পরেই হাসপাতালের জন্য বিকল্প জায়গা খোজার কাজ শুরু হয়। খোয়াই জিলা পরিষদের সভাপতির জয়দেব দেববর্মা, তৎকালীন জেলাশাসক, মহকুমা শাসক এবং স্থানীয় তহশীলদারের সাহায্যে একটি জায়গা নির্ণয় করা হয় খোয়াই ধলাবিল চা বাগান এলাকায়। জায়গা নির্ণয়ের কাজ মোটামুটি ঠিক ঠাক হয়ে গেলেও স্থানীয় শাসকদলের অাভ্যন্তরিন কুন্দলের কারণে জায়গা নির্ণয় নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়তে দেখা যায়। একটি অংশ চাইছেন বর্তমান জেলা হাসপাতালেই হোক নতুন জেলা হাসপাতালের পাকা দালান বাড়ি। অন্যদিকে বিপক্ষের নেতৃত্বরা চাইছিলেন একটি জেলা হাসপাতাল সম্পূর্ণরূপে নতুনভাবে ধলাবিলে হোক। আর এই দুই মতাদর্শের টানা হেচরাতে জেলা হাসপাতাল তৈরীর জায়গা নির্ণয়ের যে চিন্তাধারা সেটা গত তিন বছর ধরে যে তিমিরে রয়েছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে ।অবশেষে শুক্রবার দুপুরে ওই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা রাজ্যের মুখ্য ডিজাইনার, পূর্ত বাস্তুকারদের নিয়ে খোয়াই হাসপাতালের মেডিকেল সুপার এর কক্ষে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকে আলোচনার পর দেখা গেছে ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল তৈরির জন্য ১৫ থেকে ২০ একর জায়গার প্রয়োজন। সে জায়গা খোয়াই জেলা হাসপাতাল চত্বরে নেই। বিকল্প জায়গায় হিসেবে অন্যত্র স্থানে যাবার সিদ্ধান্ত হয়। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডাক্তার সুপ্রিয় মল্লিক, ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার সুবীর চৌধুরী, বাস্তুকার সঞ্জীবন দত্ত, মেডিকেল সুপার মৃদুল দাস, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার নির্মল সরকার, স্থানীয় পূর্ত আধিকারিক এবং মহকুমা প্রশাসনের একজন ডিসিএম সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। এক সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা জানিয়েছেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর চাইছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নের লক্ষ্যে খোয়াই জেলাতেও কাজ শুরু করতে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বরা জায়গা নির্ণয় করে দিলেই কাজ শুরু হবে জেলা হাসপাতালের নতুন রূপে তৈরির কাজ।অথচ দেখা গেছে রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুপ্রিয় মল্লিক জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক নির্মল সরকার সহ অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকরা শুক্রবার দুপুরে খোয়াই জেলা হাসপাতালটি পরিদর্শন করছিলেন এবং বিভিন্ন রোগীদের সাথে কথোপকথন এর পাশাপাশি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা করেন পাশাপাশি স্বাস্থ্য দপ্তরের চিকিৎসক সেবিকা ওদের সাথে আলাপ করেন রাজ্যস্বাস্থ্য অধিকর্তা ।তেমন সময় হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে পুষ্প রানী দাস নামে এক ৬০ উর্ধ মহিলা উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণে ভুগছিলেন। সেই রোগ থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য খোয়াই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসলে তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক উনাকে শারীরিক পরীক্ষা করে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য এমলো ডিপিন ৫ এম জি ঔষধ লিখে দিলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে ওনাকে সেই উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধটি দেওয়া হয়। অথচ দেখা গেছে সেই ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত তিন মাস আগে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে এই দেখে রোগীর আত্মীয় পরিজনরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। শেষে সংবাদ মাধ্যমের কাছে দ্বারস্ত হয় বিষয়টিকে নিয়ে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্বারা যে প্রতিনিয়ত মেয়াদ উত্তীর্ণ জীবন দায়ী ঔষধ বিতরণ করা হয় সেই বিষয়েও গুরুতরক অভিযোগ করেন। অথচ দেখা গেছে রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকারীক ও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে হাসপাতাল পরিদর্শনকালে এই সমস্ত জিনিস কি করে চোখের আড়াল করে দিল ওনার সেই বিষয়ে জন মনে প্রশ্ন উঠছে।তাহলে কি স্বাস্থ্য আধিকারিক রোগীদের জন্য কি ধরনের ঔষধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় সেগুলি খেয়াল রাখেন না ,না দেখার প্রয়োজন বোধ করে না প্রশ্ন করছে খোয়াইবাসী।ওদের কি এই দায়িত্ব যে খোয়াই জেলা হাসপাতালের জন্য নতুন জায়গা দেখে হাসপাতাল তৈরি করে দেওয়া আর সেই হাসপাতালে রোগীরা মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ খেয়ে মরল কি বাঁচল সেই বিষয়ে ওদের দেখার কোন প্রয়োজন নেই বলেই মনে হল উনাদের ঐদিনের সফর ।এতেই বোঝা যায় রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে পাশাপাশি খোয়াই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার মন যে কতটুকু ওটা খোয়াই বাসি ভালো করেই জানেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না এই হল স্বাস্থ্য পরিষেবা!