Saturday, December 27, 2025
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদদুই বছরের এক শিশু কন্যাকে মলত্যাগ করানোর জন্য ডাক্তারের দেওয়া ঔষধ পায়ুপথে...

দুই বছরের এক শিশু কন্যাকে মলত্যাগ করানোর জন্য ডাক্তারের দেওয়া ঔষধ পায়ুপথে না ঢুকিয়ে যোনি দ্বারে দিয়ে ঢুকিয়ে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিল খোয়াই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক জি ডি এ কর্মী বলে অভিযোগ করেন শিশুটির পিতা

খোয়াই প্রতিনিধি ৫ ই জুন…. এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষ বেঁচে থাকতে গেলে ন্যূনতম চারটি উপাদানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, যেমন প্রথমেই স্বাস্থ্য এরপর শিক্ষা, পানীয় জল ও বাসস্থান এর মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো স্বাস্থ্য। যদি স্বাস্থ্য বিষয়টি নড়বড়ে হয়ে যায় তাহলে অন্য তিনটি উপাদানের কোন গুরুত্ব থাকে না বা গুরুত্ব কমে যায়। তাই দেখা গেছে বর্তমান সময়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিশেষ করে স্বাস্থ্য বিভাগের উপর বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে। পাশাপাশি কেন্দ্র সরকার বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও এর উপরও জোর দিচ্ছে কিন্তু বেটিদের সাথে ঘটছে প্রতিনিয়ত অনীতিক ঘটনা একের পর এক। আর কিছু কিছু অপদার্থ লোক এবং অ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকদের জন্য বর্তমান সময়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যপরিসেবা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে যা বলা বাহুল্য। স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার নামে রোগীদের সাথে চলছে ভূত চিকিৎসা ও বাজে ব্যবহার আর এই ভুল চিকিৎসার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের কে। তেমনিভাবে এক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক জিডিএ কর্মীর ভুল পরিষেবার কারণে দুই বছরের এক শিশু কন্যাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল বলে সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন শিশু কন্যাটির পিতা সৈকত দেব। ঘটনার বিবরণ দিয়ে খোয়াই সোনাতলা গ্রামের নন্দীপাড়ার বাসিন্দা তথা দুই বছরের সেই শিশু কন্যা রশ্নি দেবের পিতা সৈকত দেব সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ মূলে জানান গত ৯ই মে বিকেল পাঁচটা নাগাদ উনার দুই বছরের মেয়ে রশ্নি দেব কে চিকিৎসার জন্য খোয়াই উত্তর চেবরি স্থিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। কারণ শিশুকন্যা রশ্নি তখন চার পাঁচ দিন ধরে মলত্যাগ না করার কারণে তার পেটে ব্যথা হচ্ছিল প্রচন্ড ভাবে তেমনি সময় শিশু কন্যাটি সহ তার পিতামাতা কোন কারণবশত উত্তর চবরি এলাকাতে ছিলেন তাই প্রথমে চিন্তা করেন যে এই প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রথমে শিশুটিকে কোনোভাবে মলত্যাগ করানো যায় কিনা চিকিৎসককে দেখিয়ে সেই চিন্তা করেন। সেই অনুসারে ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনুপম রায় কে শিশুটির সমস্যার কথা বললে চিকিৎসক অনুপম রায় শিশুটিকে মলত্যাগ করানোর জন্য গারবিসা সাপোসিটারি নামক একটি ঔষধ লিখে দেন এবং শিশু কন্যার পিতা সৈকত দেব তা কিনে নিয়া আসেন। যেহেতু ওষুধটি শিশুটি পায়ুপথে প্রবেশ করালেই শিশুটির মলত্যাগ হবে এছাড়া শিশুটির পিতা ওষুধটি ব্যবহারের বিষয়ে একেবারেই অনভিজ্ঞ ছিল যে কিভাবে ওষুধটি প্রয়োগ করতে হয়, এটাই স্বাভাবিক প্রয়োগ বিধি না জানারই কথা। এরপর চিকিৎসক তাদেরকে বলে স্বাস্থ্য কেন্দ্র সেবিকা আছে ওরা ওষুধটি প্রয়োগ করে দেবে সেই অনুসারে তখন সেই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন সেবিকা করুনা দাস উনাকে বলা হয় চিকিৎসকের দেওয়া এই ওষুধটি শিশুটি পায়ুদ্বারে প্রবেশ করিয়ে দিতে তাহলে পেটের ব্যথায় কষ্ট পাওয়া শিশু কন্যাটির মলত্যাগ হলে স্বস্তি পাবে। কিন্তু সেবিকা করুণা দাস শিশুটিকে সেই ওষুধটি প্রয়োগ করতে পারবেন না বলে পরিস্কার জানিয়ে দেন শিশুটির পিতা সৈকত দেবকে। এদিকে সৈকত দেব অভিযোগ মূলে এও জানান তখন সেবিকা করুণা দাস মোবাইল নিয়ে প্রচন্ড ব্যস্ত ছিলেন এমনকি ওনার কথার উত্তর দেবার সময় রোগীর পিতার দিকে অর্থাৎ সৈকত দেবের দিকে না তাকিয়েই সেই উক্তিটি করেন এবং এও নাকি বলেছেন যে ওই ঔষধ তিনি দিতে পারবেন না এর জন্য জিডিএ কর্মী রয়েছে। শেষে জিডিএ কর্মী গোপাল দাস কে খুঁজে বের করে আনা হয়। এখানে বলা বাহুল্য একজন অ পশিক্ষণপ্রাপ্ত জিডিএ কর্মীকে দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা শিশুর ওপর প্রয়োগ করতে গেলে যে ধরনের বিপত্তি ঘটে তাই ঘটে যায় তখন। সেই জিডিএ কর্মী গোপাল দাস দুই বছরের শিশু কন্যা রশ্নি দেবকে চিকিৎসকের দেওয়া গারবিসা সাপোসিটারি ওষুধটি শিশুর পায়ুদার দিয়ে প্রবেশ করানোর কথা কিন্তু সেই অনভিজ্ঞ ভিডিএ কর্মী গোপাল দাস সেই ওষুধের প্যাকেটটি কেও ছিড়ে নি। না ছিড়ে আস্ত প্যাকেটটি শিশুটির যৌন দার দিয়ে জোর করে প্রবেশ করাতে গিয়েই ঘটে যায় বিপত্তি। শিশুটির যোনিপথ সেই ওষুধের প্যাকেটের কাটা কাটা ধারের জন্য কেটে গিয়ে ব্যাপক পরিমাণে রক্তক্ষরণ শুরু হতে থাকে। শেষে চিকিৎসককে খবর দিলে চিকিৎসক অনুপম রায় ঘটনাটি দেখে কিছু না বুঝেই শিশু কন্যাটিকে খোয়াই জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেন। এরপর খোয়াই জেলা হাসপাতাল থেকে পুনরায় ঐদিন রাত সাতটা নাগাদ জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয় শিশুটির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে। এরপর জিবি নিয়ে যাবার পথে শিশুটিকে ডাইপার পড়ানো হয়েছিল কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে খোয়াই থেকে জিবি যাবার পথে বেশ কয়েকবার শিশুটির ডাইপার পরিবর্তন করতে হয় শুধু তাই না পিতা-মাতার কাপড় ও রক্তে ভিজে লাল হয়ে যায়। যাই হোক জীবিতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসকদের বিস্তারিত ঘটনাটি বলেন শিশুর পিতা। তখন চিকিৎসকরা শিশুটির যৌনাঙ্গ এবং পায়ুপথ প্রথমে জল দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করলে বুঝতে পারেন যে খোয়াই চেবরি স্থিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রর জিডিএ কর্মী গোপাল দাস সেই ওষুধটি শিশুটির পায়ুপথে প্রবেশ না করিয়ে যোনিপথকে পায়ুপথ ভেবে সেই জায়গা দিয়ে ওষুধটি প্রবেশ করানোর ফলে এই বিপত্তি ঘটে যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য দুই বছরের শিশু কন্যা রশ্নি ঝিমিয়ে পড়ে পিতার কোলে। এরপর জিবির চিকিৎসকরা বলেন শিশুটির অপারেশন লাগবে যোনিপথে সে কথা শুনে নাকি শিশুকন্যা রশ্নির মা জিবি হাসপাতালে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এরপর পেডিয়াট্রিক ও গাইনো বিভাগ নিয়ে শিশুটিকে টানা হেঁচড়ে শুরু হয়। ঘটনার পরের দিন সিদ্ধান্ত হয় যে এটি একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাজ তাই বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেএল বৈদ্যকে খবর দিলে উনি এসে দেখেন এবং শিশুটিকে ভর্তি করে এবং তার ক্ষত যৌনাঙ্গে অপারেশনের মাধ্যমে দুটি সেলাই করে এবং এক সপ্তাহের উপর জিবিতে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করে শেষে বাড়ি আসে শিশু কন্যা রশ্নি। আজ প্রায় এক মাসের কাছাকাছি হতে চলেছে কিন্তু শিশুটি এখনো তার শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কোন কারণবশত হাসপাতালে নাম শুনলে বা অচেনা লোককে দেখলে আজও শিশুটি নাকি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। শুধু তাই না শিশুটি চোখে মুখে আজও সেই আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায়। শেষে এই বিষয়ে শিশু কন্যা রশ্নি দেবের পিতা গত কয়েকদিন আগে খোয়াই মহিলা থানায় সমস্ত বিষয়টিকে নিয়ে লিখিতভাবে চিকিৎসা গাফলতির জন্য সেই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক অনুপম রায় সেবিকা করুণা দাস, ও জিডিএ কর্মী গোপাল দাসের বিরুদ্ধে মহিলা থানায় মামলা করেন। যদিও দেখা গেছে চিকিৎসা সংক্রান্ত চিকিৎসক, সেবিকা বা অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা করে আজ অব্দি কোন সুবিচার পায়নি কোন রোগির আত্মীয় পরিজনের সেটা শিশুর পিতা সৈকত রায় ভালোভাবেই জানেন বলে জানান। উনার বক্তব্য উনার দুই বছরের শিশু কন্যার সাথে প্রশিক্ষণ ছাড়া এক জিডিএ কর্মী যা করেছে তা যাতে অদূর ভবিষ্যতে অন্য কোন শিশুর সাথে না হয় সে বিষয়ে এই ঘটনাটি প্রচারের জন্য তা তিনি করতে চাইছেন। যাতে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা এই ধরনের ঘটনাগুলিকে প্রকাশের পর বা আগে নজর দেন যাতে করে অদূর ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা কোন শিশুর সাথে না ঘটে। একজন অ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জিডিএ কর্মী ও একজন সেবিকার মোবাইল মিনিয়ার কারণে এবং নিজ কর্মে অনীহার দরন একটি শিশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল এর দায়ভার কে নেবে হয়ত কেউ এর দায় স্বীকার করবে না। এদিকে এও জানা যায় গত মে মাসের ৯ তারিখ খোয়াই চেবরি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি বলে প্রচার করা হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে পাশাপাশি পুরো ঘটনাকে ধামাচাপা দেবার জন্য ওই কেন্দ্রে স্বাস্থ্যকর্মীরা বর্তমানে ব্যাপক ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলা সহ মহাকুমা স্তরের হাসপাতাল গুলিকে উন্নত করার চেষ্টা করছেন এবং এর পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা করছেন ভালো চিকিৎসা পরিষেবা দেবার জন্য সে জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মীদের জন্য এই ধরনের গাফলিতির শিকার হচ্ছে রাজ্যে সাধারণ মানুষ যার দিকে নজর দিতে আবেদন করছেন সাধারণ মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এই ধরনের ঘটনা এবং রাজ্যের মানুষ ভালো চিকিৎসা পরিষেবা পায় না বলেই গত কয়েক দশক ধরে রাজ্যের মানুষ চিকিৎসার জন্য বহি রাজ্যে গিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এর একটিই কারণ আজ পর্যন্ত রাজ্যে ভালো চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মানদন্ডই তৈরি হয়নি যার ফলে দুই বছরের শিশু কন্যা রশ্নির মত শিশুরাও সাধারণ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে গিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে মৃত্যুর মুখে চলে যাচ্ছে। যদি এইভাবে চলতে থাকে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হবে রাজ্য সরকারকে বলে মন্তব্য করেন অনেকেই।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

four × 1 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য