খোয়াই চম্পাহর থানাধিন নেংটি বাড়ী এলাকায় পারিবারিক বিবাদ ও কুসংস্কার কে কেন্দ্র করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে ছোট ও বড় ভাই এবং ভাইপো সহ ৮ জন মিলে হত্যা করে কাঁচা শৌচালয়ে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। ঘটনা বৃহস্পতিবার সন্ধে নাগাদ। মৃতার স্বামীর বয়ানে পুলিশ ৮ জনকে আটক করলে সত্যতা স্বীকার করে তারা এবং শৌচালয় থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ঐদিন রাতেই। ঘটনার বিবরণ দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে মৃত মহিলা কৌশল্যা কাটোওয়াল (৪০) উনার স্বামী রঞ্জন কন্দ (৫০) জানান উনার চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ভাই পবিত্র কন্দ অসুস্থ হয়ে বৃহস্পতিবার মারা যান শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুটো থেকে তিনটা নাগাদ ছোট ভাইএর দাহ কাজ সম্পন্ন করে সবাই বাড়ি ফিরে আসে এবং তাদের বাড়িতেই মদের আসর বসায় অন্যান্য ভাইয়েরা। মৃত মহিলার ভাসুর কাজল কন্দ এবং ওনার ছেলে সুজিত কন্দ আরেক ভাই চরিত্র কন্দ সহ আরো আটজন মিলে পরিকল্পনা করে যে আজ তাদের ভাই রঞ্জন কন্দকে হত্যা করবে, শুধু তাই না দরকার হলে স্ত্রী সহ রঞ্জন কন্দের সমস্ত পরিবারকে হত্যা করা হবে। এই কথা নিয়ে বাড়িতে ব্যাপক ঝামেলার সৃষ্টি হয় শেষে অবস্থা খারাপ হতে দেখে রঞ্জন কন্দ ওনার স্ত্রী কৌশল্লা কাটো ওয়াল ও সাত বছরের ছেলেকে তাদের বাড়ি থেকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয় সুরক্ষার জন্য পরে সুযোগ বুঝে রঞ্জন কন্দও সেখান থেকে প্রাণ বাঁচাতে চলে আসে এবং এসে গ্রামের চেয়ারম্যান নরোত্তম দেববর্মা কে বিষয়টি জানায়। এই বিষয়টি পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে শেষে গ্রামের লোকজন সহ রঞ্জন কন্দ মিলে চম্পা হওয়ার থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসে। সেখান থেকে আসতে যেতে তাদের অনেক সময় লেগে যায়। এখানে বলা বাহুল্য রঞ্জন কন্দকে তার ভাই এবং গ্রামের অন্যান্য কন্দ পরিবারের লোকেরা বেশ কয়েকবার হত্যার ছক কষেছিল কিন্তু যে কোন কারণবশত তা করতে পারেনি। কেন তাদেরকে হত্যার জন্য কন্দ পরিবারে লোকেরা হত্যা করতে চাইছে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে গোপন সূত্রে জানা যায় মৃত মহিলার স্বামী রঞ্জন কন্দের অন্যান্য ভাই ভাইপো সহ আত্মীয় পরিজন এবং অন্যান্য কন্দ পরিবার গুলির মনে একটি ধারণা বা কুসংস্কার চলে এসেছে যে তাদের পরিবারগুলোর আয় উন্নতি এবং বাসস্থানের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না একমাত্র রঞ্জন কন্দ এবং তার স্ত্রী কৌশল্যা কাটোয়ালের কারণে তাদেরকে হত্যা করা একান্তই জরুরী। এই ভেবে রঞ্জন কন্দের উপর বেশ কয়েকবার প্রাণঘাতিক হামলাও হয়েছে যা গ্রামের মানুষ সবাই জানে বলে জানান রঞ্জন কন্দ অথচ তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। শেষে রঞ্জন কন্দ চম্পাহওর থানা থেকে বাড়ি ফিরে স্ত্রী কৌশল্যা কাটো ওয়াল কে খোঁজ করে কিন্তু তিনি বাড়ি বা গ্রামে তার কোন হদিস পায়নি খোঁজ করতে করতে সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হয়ে যায় এরপর পুনরায় থানায় খবর দেওয়া হয় যে কৌশল্যা কাটো ওয়াল কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না হয়তো হত্যা করা হয়েছে। সেই খবর পেয়ে চাম্পাওয়ার থানা বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে নেংটি বাড়ি এলাকায় গিয়ে উপস্থিত হলে রঞ্জন কন্দ পুলিশকে জানায় হয়তো তার ভাইয়েরা ওনার স্ত্রীকে হত্যা করেছে যখন তিনি থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন সেই সুযোগে। কারা কারা হত্যা করতে পারে পুলিশ জানতে চাইলে রঞ্জন কন্দ পুলিশকে জানায় উনার বড় ও ছোট ভাই ভাইপো সহ একজন মদামতো অবস্থায় তাদেরকে হত্যা করতে চাইছিল এরা হলো একই গ্রামের মিঠুন কন্দ, আকাশ কন্দ, বুধু কন্দ, অজিত কন্দ, ছোট ভাই চরিত্র কন্দ, বড় ভাই কাজল কন্দ, উনার ছেলে সুজিত কন্দ এবং চন্দন তাঁতি এই ৮ জনের নাম বলার পর পুলিশ তাদের সবাইকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে রাতে এবং পুলিশের জেরাতে সবাই স্বীকার করে যে রঞ্জন কন্দের শ্রী কৌশল্যা কাটো ওয়াল কে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে তাদেরই কাঁচা শৌচালয়ের ভিতর মাটি চাপা দিয়ে দেয়। তাদের জবানবন্দির উপনির্ভর করে তাদেরকে সেই জায়গায় নিয়ে গিয়ে শৌচালাই থেকে রাতেই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে। এই হত্যাকান্ডের পিছনে জড়িত আটজনের বিরুদ্ধে রঞ্জন কন্দ মামলা করলে চম্পা হাওয়ার থানা একটি মামলা নেয় যার কেস নম্বর 06/2023 U/S 302/201/34 IPC ধারায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়। এবং শুক্রবারে আদালতে তোলা হলে আদালত ৮ জন আসামিকে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠায়। তবে এই ঘটনায় চম্পা হাওয়ার থানার পুলিশ হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আসামিদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে যা একটি বড় সাফল্য এই থানার জন্য।