আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমেই জীবনের পরম প্রাপ্তি ঘটে। এটি একপ্রকার যোগ সাধনা। এর মাধ্যমে মানুষ নিজেকে চিনতে পারে। মানব জীবনের মূল উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারে। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ত্রিপুরায় প্রথম বারের মত আয়োজিত অষ্টলক্ষ্মী সন্ত বিচার সম্মলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দপ্তর, অমরবানী ইভেন্ট ফাউন্ডেশন এবং ইন্ডাস মুন প্রাইভেট লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা শান্তিকালী আশ্রমের স্বামী চিত্তরঞ্জন মহারাজকে ‘জীবন গৌরব’ সম্মানে ভূষিত করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে পূরিপূর্ণতা লাভ করলেই সঠিক মানবতার ধর্ম অনুভব করতে পারেন। এই পূরিপূর্ণতার বিকাশ ঘটে আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমে। ভারতের সনাতন ধর্ম অনেক প্রাচীন। ভারতবর্ষ বরাবরই শান্তি সম্প্রীতির দেশ। ত্রিপুরার মানুষও খুবই ধর্মপ্রাণ। তিনি বলেন, একসময় রাজ্যে নাস্তিক চিন্তাধারা প্রভাব ছিল। বর্তমানে সেই পরিবেশের উন্নতি ঘটেছে। মানুষ এখন আস্তিকতায় বিশ্বাসী। বর্তমানে দেশ এবং রাজ্যের সরকারও সেই দিশায় কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি নিয়ে অষ্টলক্ষ্মীর কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষ মুনী ঋষিদের দেশ। বিশ্ব শান্তি এবং দেশকে সঠিক মার্গ দর্শনে মুনী ঋষিদের বড় ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, আধ্যাত্মিক চর্চা আমাদের সঠিক পথে চালিত করে। তিনি আরও বলেন, এই সম্মেলনে অনেক জ্ঞানীগুণী সাধু সন্তুরা রয়েছে। এই সম্মেলন একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। আমরা একে অপরকে আরও বেশি করে জানবার সুযোগ পাব। মুখ্যমন্ত্রী এই সম্মেলনের সার্বিক সফলতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে উপমুখ্যমন্ত্রী যিষ্ণু দেববর্মন বলেন, ভারতের হৃদ স্পন্দন তাঁর আধ্যাত্মিকতায় নিহিত রয়েছে। এই সত্য আমাদের উপলব্ধি করা প্রয়োজন এবং এর বিকাশ ঘটবে আধ্যাত্মিক চর্চার মাধ্যমে। তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে এক ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি বিরাজমান। এখানেই সবচেয়ে বেশি মানুষ এবং প্রকৃতির সঙ্গে মিলনের এক ধর্মীয় সংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়। এদিক থেকে বিচার করলে এই অষ্টলক্ষ্মী সন্ত বিচার সম্মেলন ত্রিপুরার ধর্মীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, ভারতকে জানতে হলে তাঁর আধ্যাত্মিকতাকে অনুভব করতে হবে। ভারতের পরিচয় তাঁর সহানুভূতিতা এবং আধ্যাত্মিকতায়। এরজন্য জীবনের প্রত্যেকটি অধ্যায়ে ধর্ম চর্চার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই সম্মেলন উত্তর পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরায় প্রথম বারের মত আয়োজনের ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ধর্মীয়, সংস্কৃতিকে প্রচারেরও সুযোগ থাকবে। উত্তর পূর্বের ধার্মিক ইতিহাস এবং পরম্পরার প্রেক্ষিতেই এই রাজ্যেকে সম্মেলনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের কার্যকরী অধ্যক্ষ মদন মহারাজ গোসাভাই, ভক্তি কমল বৈষ্ণব, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গঙ্গাপ্রসাদ প্রসেইন প্রমুখ।



