Thursday, December 4, 2025
বাড়িখবররাজ্যরাজ্যে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে ত্রিপুরা দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে

রাজ্যে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে ত্রিপুরা দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে

রাজ্যে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে বিশেষ সাফল্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সম্প্রতি প্রকাশিত এনএফএস – এ স্টেট র‍্যাঙ্কিং ইনডেক্স -২০২২ সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে ত্রিপুরা ১৪ টি স্পেশাল ক্যাটাগরি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থান ও দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে । আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ সংবাদ জানান খাদ্য , জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব । সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী শ্রীদেব খাদ্য , জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের উল্লেখযোগ্য সাফল্য ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিসমূহ তুলে ধরে জানান , বর্তমান সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় এসে রেশনশপের মাধ্যমে এপিএল ভুক্ত পরিবার পিছু সর্বোচ্চ ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । যা আগে ২০ কেজি করে দেওয়া হতো । বর্তমানে এপিএলভুক্ত পরিবারগুলি সর্বোচ্চ ২৫ কেজি করে চাল পাচ্ছেন । তিনি জানান , রাজ্যে রেশনশপের মাধ্যমে ভোক্তাদের সয়াবিন দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে । চিনি , ডাল এবং ত্রিপুরেশ্বরী চা পাতাও রেশনশপের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে । পাশাপাশি স্বসহায়ক গোষ্ঠীর পণ্য সামগ্রীও রেশনশপের মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে খাদ্যমন্ত্রী জানান । তিনি বলেন , রাজ্যে গণবন্টনে ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ এবং সুবিন্যস্ত করার লক্ষ্যে বর্তমান রাজ্য সরকার সচেষ্ট । রেশনশপগুলিতে ই – পস মেশিন বসানোর ফলে রাজ্যে ৬২ হাজার ভূয়ো রেশনকার্ড সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে । এই ৬২ হাজার ভুয়ো রেশনকার্ডে ২,৮১,০০০ মানুষের নাম নথিভুক্ত ছিল । এজন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা লোকসান হতো । সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী জানান , বর্তমান সরকার রাজ্যের কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কৃষি দপ্তর এবং এফসিআই – এর সহযোগিতায় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে খারিফ মরশুমে রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়কমূল্যে ধান কেনা শুরু করে । ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে রাজ্যে মোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৭২১ মেট্রিকটন ধান কৃষকদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে এবং সহায়কমূল্য বাবদ কৃষকদের মোট ২৪৩ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে । তিনি জানান , প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় প্রথম পর্যায়ে এপ্রিল ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৯৫ হাজার ২৫ মেট্রিকটন চাল এবং মোট ৪ হাজার ৩৮১ মেট্রিকটন ডাল বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় । পরবর্তীতে মে ২০২১ থেকে এই স্কীমটি পুনরায় চালু করা হয় । দ্বিতীয় পর্যায়ে জুলাই , ২০২২ পর্যন্ত গত পনের মাসে রাজ্যের প্রায় ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার এনএফএসএ পরিবারকে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯৩১ মেট্রিকটন চাল বিনামূল্যে এই প্রকল্পে প্রদান করা হয়েছে । গণবন্টনের অধীনে এসপিরেশনাল জেলা হিসেবে রাজ্যের ধলাই জেলায় এপ্রিল ২০২২ থেকে ফর্টিফায়েড চাল বিতরণ করা হচ্ছে । পর্যায়ক্রমে রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে এই চালের বিতরণ করা হবে বলে খাদ্য মন্ত্রী জানান । হাজার সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী জানান , রাজ্য সরকার গণবন্টন ব্যবস্থাকে আরও সহজে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে জনবসতির ভৌগোলিক অবস্থানের সুবিধার ভিত্তিতে রাজ্যে ৪০৮ টি নতুন রেশন দোকান চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে । এখন পর্যন্ত ২৩৯ টি নতুন রেশন দোকান খোলা হয়েছে । এই ক্ষেত্রে ডিলারশীপ প্রদানে মহিলাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে । তিনি আরও জানান , জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের বাইরে থাকা ১ হাজার ৬৮ টি এপিএল চা শ্রমিক পরিবারকে নতুনভাবে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় আনা হয়েছে । রাজ্যে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসিত রিয়াং শরণার্থী পরিবারদের গণবন্টনের আওতায় আনার উদ্যোগ হিসেবে এখন পর্যন্ত মোট ৪৮০ টি রিয়াং শরণার্থী পরিবারকে অন্ত্যোদয় ব্লু রেশনকার্ড দেওয়া হয়েছে । রাজ্যের গণবন্টন ব্যবস্থার আওতাধীন স্টোরেজ পরিকাঠামোর আরও উন্নতিকরণের লক্ষ্যে সেন্ট্রাল স্পনসরড স্কীমে জিরানীয়ার বেলবাড়ি ও উদয়পুরের চন্দ্রপুরে যথাক্রমে ৫০০ মেট্রিকটন ও ১,০০০ মেট্রিকটন স্টোরেজ ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি গোডাউন তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে এবং শীঘ্রই তা চালু করা হবে । তাছাড়া মোট ২,৫০০ মেট্রিকটন স্টোরেজ ক্ষমতা সম্পন্ন আরও ৪ টি নতুন গোডাউন তৈরীর কাজ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে । রাজ্যের মোহনপুর ও লংতরাইভ্যালী মহকুমায় লিগ্যাল মেট্রোলজি অর্গানাইজেশনের ২ টি ওয়ার্কিং স্ট্যান্ডার্ড ল্যাব চালু করা হয়েছে । খাদ্যমন্ত্রী জানান , প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা চালু হওয়ার পর থেকে রাজ্যে এখন পর্যন্ত মোট ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৫৪ টি পরিবারে গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়েছে । এরমধ্যে মার্চ ২০১৮ সালের পরে ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৩৫৪ টি গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে । রাজ্যের জনগণের সুবিধার্থে রেশনকার্ড সম্পর্কিত পরিষেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে রাজ্যে সম্প্রতি রেশনকার্ডের জন্য একটি ই – পরিষেবা মাধ্যম চালু করা হয়েছে । তাছাড়াও রাজ্যে ওয়ান নেশন ওয়ান রেশন কার্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

eighteen − one =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য