জল জীবন মিশনে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তিক এলাকার ঘরে ঘরে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দিতে হবে । ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের খুমুলুঙস্থিত প্রশাসনিক কার্যালয়ের ২ নং কনফারেন্স হলে রাজ্যের এডিসি এলাকায় জল জীবন মিশনের অগ্রগতি নিয়ে এক পর্যালোচনা সভায় পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা বলেন । তিনি আরও বলেন , জল মানুষের জীবন সুরক্ষিত রাখে । মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে থাকে । তাই দেশের প্রতিটি ঘরে পরিশ্রুত পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই জল জীবন মিশনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় । আমাদের রাজ্যের সরকারও এই ভাবনায় কাজ করছে । তাই রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার জনজাতির প্রতিটি মানুষ যেন এই জল জীবন মিশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত না থাকেন । তিনি বৈঠকে উপস্থিত পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের প্রতিনিধিদের এবিষয়ে বিশেষ নজর রাখার অনুরোধ জানান । যেসব দুর্গম প্রত্যন্ত এডিসি এলাকায় পানীয়জল উত্তোলনের সুবিধা নেই সে সব অঞ্চলে পাইপলাইনে অন্যস্থান থেকে জল সরবরাহ করতেও তিনি প্রতিনিধিদের পরামর্শ দেন । এছাড়া ট্যাংকারে করেও জল সরবরাহ করতে বলেন । এই শুখা মরশুমে মানুষ যেন জলের কষ্টে না ভোগেন সেদিকে তিনি সকলকে কঠোরভাবে নজর রাখতে বলেন । ২০২২ – এ পানীয় জলের উৎস আরও ব্যাপকভাবে খনন এবং বিগত দিনের অম্পূর্ণ জলের উৎস খননের কাজগুলি দ্রুত শেষ করতেও তিনি নির্দেশ দেন । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টিটিএএডিসি’র উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মণ । তিনি বৈঠকে বক্তব্যে জনজাতি এলাকায় জলজীবন মিশনের প্রয়োগ আরও বেশী করে করতে এবং সেই সাথে সরবরাহকৃত জলের গুণমান বজায় রাখার দিকেও নজর দিতে দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন । এছাড়া জল সংরক্ষণ ও জলাধার খননের উপরও গুরুত্বারোপ করে বৈঠকে তিনি বক্তব্য রাখেন । বৈঠকে টিটিএএডিসি’র মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য পূর্ণচন্দ্র জমাতিয়া বলেন , জলজীবন মিশন একটি সুন্দর প্রকল্প । এ প্রকল্পে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন । তিনি বলেন , বেশী করে মিনি ডিপ টিউবওয়েল খনন করতে হবে । যেসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরাবরাহ নেই সেসব অঞ্চলে সোলার ব্যবস্থা চালু করতে হবে । * ২ য় পাতায় পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের প্রধান সচিব কিরণ গিত্যে পর্যালোচনা বৈঠকে জানান , সারা রাজ্যের ৮ টি জেলার এডিসি এলাকায় বর্তমানে ৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৩১৬ টি পরিবারে জল জীবন মিশনে জল সরবরাহ করা হচ্ছে । এর মধ্যে উত্তর ত্রিপুরাতে ৪৭,৮২২ টি , পশ্চিম ত্রিপুরায় ৩২,৯৪৭ টি , ঊনকোটি জেলায় ৪৭,৬১৩ টি , গোমতী জেলায় ৩৬,৭৫৩ টি , দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৬৫,৬৩২ টি , খোয়াই জেলায় ৪৫,২৫৮ টি , ধলাই জেলায় ৫৪,৮৪৮ টি এবং সিপাহীজলা জেলায় ৫১,৭৪৩ টি পরিবার রয়েছে । এছাড়া রাজ্যের এডিসি এলাকাগুলিতে পানীয়জল সরবরাহের বিভিন্ন স্কিমের মধ্যে ১১২৬ টি গভীর নলকূপ , ২,৩৫৯ টি স্মলবোর , ২৩ টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট , ৩৮৭ টি আয়রন রিমুভ্যাল প্ল্যান্ট এবং ২৮ টি ইনোভেটিভ স্কিম চালু আছে বলেও বৈঠকে প্রধান সচিব জানান । বৈঠকে জল জীবন মিশন কর্মসূচির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন টিটিএএডিসি’র উপ মুখাকার্যনির্বাহী সদস্য অনিমেষ দেববর্মা । এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টিটিএএডিসি’র নির্বাচিত সদস্য কমল কলই ও সদস্য ভবরঞ্জন রিয়াং , রাজ্যের ৮ টি জেলার এডিসি’র জোন্যাল কার্যালয়ের চেয়ারম্যানগণ ও পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের জেলা কার্যালয়গুলির কার্যনির্বাহী আধিকারিকগণ । তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ জেলার এডিসি এলাকায় পানীয়জল সরবরাহের কর্মসূচির অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে পর্যালোচনা করেন ।