ত্রিপুরা রাজ্যে মণিপুরী ও অন্যান্য সংখ্যালঘু তথা পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ও বহুস্তরীয় স্বশাসনের আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে ত্রিপুরা মণিপুরী ছাত্র-যুব সমন্বয় কমিটির ৪-র্থ সম্মেলন উপলক্ষে রবিবার তারা একটি মিছিল সংঘটিত করে। মিছিলটি রাধামাধব দেবতা বাড়ির রাধানগর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন পদ পরিক্রমা করে পুনরায় সেই জায়গায় এসে সম্মেলনে মিলিত হয়। ত্রিপুরা মণিপুরী ছাত্র যুব সমন্বয় কমিটি ২০১১ সালের ১৯শে আগষ্ট তার প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই রাজ্যের মণিপুরীদের জাতিসপ্ত হিসেবে তার সাংবিধানিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে মণিপুরীদের স্বশাসিত উন্নয়ণ পরিষদ গঠন, শিক্ষা, চাকরি জনপ্রতিনিধিত্বে সংখানুপাতিক সংরক্ষণ ও মাতৃভাষার স্বীকৃতির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
কেননা বর্তমানে এরাজ্যের মণিপুরীরা বিগত ৫০৬০ বছরে শাসক দলের চরম অবহেলার কারণে জমির মালিকানা, চিরাচরিত পেশা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সবকিছু হারিয়ে আজ অস্তিত্বের চরম সংকটে ভুগছে। চরম অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পর্যাপ্ত খাদের সংস্থান করতে না পারার ফলে মণিপুরীদের নারী ও শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তার ফলে মণিপুরী যুবক-যুবতীরা সময়মতো বিবাহ পর্যন্ত করতে পারছে না। যার ফলে মণিপুরীদের মধ্যে শিশু জন্মহার মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এমনকি চরম অর্থনৈতিক সংকটের ফলে মণিপুরীদের পারিবারিক কাঠামো পর্যন্ত ভেঙে পড়ছে।
মণিপুরী ছাড়াও, রাজ্যের সমস্ত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জাতিসত্তা হিসেবে তার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজ্যে বহুস্তরীয় স্বশাসন ব্যবস্থা কায়েম করার দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন সংঘটিত করে চলেছে তারা। আজকের এই সম্মেলন থেকে তারা দাবি তুলে।
রাজ্যে স্ব-শাসিত মণিপুরী উন্নয়ণ পরিষদ গঠন করতে হবে।
শিক্ষা, চাকুরী ও জনপ্রতিনিধিত্বে মণিপুরীদের জন্য সংখ্যানুপাতিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
ভারতের সংবিধানের ৩৪৭ নং ও ৩৫০ (এ) নং ধারা মোতাবেক ত্রিপুরা রাজ্যে মণিপুরী ভাষার স্বীকৃতি প্রদান ও অন্তত প্রাথমিক স্তরে মণিপুরীদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
অবিলম্বে রাজ্য সরকার ঘোষিত মণিপুরী ভাষা শিক্ষা চালু থাকা স্কুলগুলিতে মণিপুরী ভাষা শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।



