আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টের কার্ডিওলজিস্ট চিকিৎসকদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ফলেই প্রাণ ফিরে পেলেন সোনামুড়ার ৫৬ বৎসর বয়সী একজন সংকটাপন্ন রোগী। গত ছয় মাস যাবৎ হাঁটা-চলা করার সময় রোগীর দু’পায়ে প্রচন্ড ব্যথা হত এবং এই ব্যথার জন্য রোগী রাতে ঘুমোতে পারতেন না। গত এক মাস ধরে রোগীর এই ব্যাথা চরম আকার ধারণ করে এবং রোগীর দু’পায়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উক্ত সমস্যা নিয়ে রোগীকে জিবিপি হাসপাতালের কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টের কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ রাকেশ দাসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু করা হয়। ডাঃ দাস গত ১৭ নভেম্বর ২০২৫ রোগীর এনজিওগ্রাফি করেন। আর এই এনজিওগ্রাফি রিপোর্ট বিচার বিশ্লেষণ করে ডাঃ দাস দেখেন যে রোগীর দু’পায়ের রক্তনালী শুকিয়ে গেছে। এই উপসর্গকে পেরিফেরাল আর্টেরিয়াল ডিজিজ বা পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ বলা হয়ে থাকে। এটি একটি রক্তনালীর রোগ, যেখানে হৃৎপিণ্ড বা মস্তিষ্কের বাইরের ধমনী, শিরা বা লিম্ফ্যাটিক ধমনীগুলি সরু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে রোগীর ডান পায়ের রক্তনালী প্রায় একশ শতাংশ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং রক্তনালীর উৎপত্তি থেকে হাঁটু পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। এই সমস্যাটির নিরসনে কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ রাকেশ দাস রোগীকে দ্রুত অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ প্রদান করেন। সেই অনুযায়ী গত ২ ডিসেম্বর রোগীর রক্তনালীতে স্টেন্ট বসানো হয়। এই অস্ত্রোপচারের পর রোগী সুস্থ হয়ে উঠে স্বাভাবিক হাঁটা-চলা করতে পারছেন এবং রোগীর পায়ে রক্ত চলাচলও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। উল্লেখ্য, এই অস্ত্রোপচারে কোন কাটা ছেঁড়া করা হয় নি। আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টে আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই চিকিৎসা করা হয়। গত ৪ ডিসেম্বর রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়।
এই অস্ত্রোপচার অন্য কোন বেসরকারি হাসপাতালে করতে প্রায় তিন লক্ষ টাকার মতো ব্যয় হতো। উক্ত অস্ত্রোপচারে ছিলেন আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টের কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ রাকেশ দাস, সহকারী অধ্যাপক এবং কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান ডাঃঅনিন্দ্য সুন্দর ত্রিবেদী, কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ মান্না ভট্টাচার্য, কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র চিকিৎসক ডাঃ অর্ঘ্য প্রতিম নাথ, ডাঃ অন্বেষা দেবনাথ, ডাঃ প্রান্তিক রায়, সহ ক্যাথ ল্যাব টেকনিশিয়ান সঞ্জয় ঘোষ, ক্যাথ ল্যাব নার্স দেবব্রত দেবনাথ, প্রাণকৃষ্ণ দেব, মানস দত্ত, তিতিক্ষা মজুমদার এবং ইকো টেকনিশিয়ান কিষাণ রায় প্রমুখ। বহিরাজ্যে না গিয়ে রাজ্যেই জিবিপি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্ট চিকিৎসকদের হাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা লাভ করে সুস্থ হয়ে উঠায় রোগীর পরিবার-পরিজনেরা চিকিৎসকসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর থেকে এই সংবাদ জানানো হয়েছে।



