স্বচ্ছতার মাধ্যমে কিভাবে চাকুরি দেওয়া যায় বর্তমান রাজ্য সরকার তার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। চাকুরি একটা পরিবারের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সবাই জানেন। আগামী দিনে আরও চাকুরি দেওয়া হবে। আজ আগরতলার মুক্তধারা অডিটরিয়ামে চাকুরির নিয়োগপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, সরকার ধাপে ধাপে সব শূন্য পদগুলি পূরণের চেষ্টা করবে। রাজ্য সরকার ২০১৮ সাল থেকে স্বচ্ছ নিয়োগ নীতির মধ্যদিয়ে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত ডাইন-ইন-হারনেস সহ মোট ১৯ হাজার ৪৮৪ জনকে সরকারি চাকুরি প্রদান করেছে। এছাড়া আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৫৭০০ জনকে, সিকিউরিটি গার্ড সহ অন্যান্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ২৯৮৭ জনকে নিয়োগ করেছে। ২০২৪-২৫ সালে সরকার জব ফেয়ারের মাধ্যমে দেশের বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৩০৫ জনকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।
অনুষ্ঠানে আজ মুখ্যমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ জনের হাতে চাকুরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। উল্লেখ্য, আজ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা দপ্তরে মোট ২২২ জনকে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগপত্র প্রাপকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কর্মক্ষেত্রে ‘ইয়েস আই কেন ডু ইট’ মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে ও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়ণের অংশীদার হয়ে রাজ্যের মানুষের সমস্যা সমাধানে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৮-১৯ সালে জাতীয় হারের থেকেও রাজ্যে বেকারত্বের হার বেশি ছিল। যেখানে ২০১৮-১৯ সালে জাতীয় হার ৫.৮ শতাংশ সেখানে রাজ্যে বেকারদের হার ছিল ১০ শতাংশ। কমতে কমতে রাজ্যে ২০২৩-২৪ সালে রাজ্যের বেকারত্বের হার নেমে আসে মাত্র ১.৭শতাংশে। যা জাতীয় বেকারত্বের হার ৩.২ শতাংশের কম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্য হল উন্নত ভারতবর্ষ গড়ে তোলা। তাই তিনি চাকুরির ক্ষেত্রে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মেধার পাশাপাশি দক্ষতার উন্নয়নের উপর জোর দেওয়ার জন্য গুরুত্বারোপ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন বলতে কি বুঝায় এটাই প্রধানমন্ত্রী করে দেখিয়েছেন। রাজ্যেও উন্নয়নের ধারা চলছে ২০১৮ সাল থেকে। রাজ্যে উন্নয়নের স্বার্থে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত থেকে কেবিনেট পর্যন্ত ই-অফিস চালু হয়েছে। মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে রাজ্য এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আসছে। গত ৬ মাসে উন্নয়নের স্বার্থে ৬৩৮ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর এবং উদ্বোধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে পিছিয়ে পড়তে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।
ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট টিউটরের প্রতি যাতে বেশি নির্ভিরশীল হতে না হয় সেজন্য মহকুমা স্তরে বিভিন্ন বিষয়ে কোচিং সেন্টার চালু করা হয়েছে। দেশের যুব সমাজকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য দেশে চালু করা হয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতি। ত্রিপুরা দেশের মধ্যে তৃতীয় রাজ্য হিসেবে পূর্ণ সাক্ষর রাজ্যের মর্যাদা পেয়েছে যা আমাদের সবার কাছে গর্বের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেক ভাল। মহিলাদের সুরক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নতুন মহিলা থানা খোলা হয়েছে। নেশামুক্ত রাজ্য গড়তে এবং এইডস প্রতিরোধে সমাজের সব অংশের মানুষকে এগিয়ে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব রাজীব দত্ত, বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. তপন দাস প্রমুখ।