আমরা যত বেশি পড়াশুনা করবো, তত বেশি জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে। জ্ঞান অর্জন করা মানে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে যাওয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, যে দেশের জনগণ যত বেশি শিক্ষিত হবে সেই দেশ জ্ঞান বিজ্ঞানের দিক থেকে তত বেশি এগিয়ে যাবে। আজ মোহনপুরের পশ্চিম তারানগরের ফকিরমুড়ায় চিন্ময় হরিহর বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্প্রতি টেট-টু পরীক্ষায় স্থানাধিকারী দৃষ্টিহীন পাপন সূত্রধরকে মুখ্যমন্ত্রী একটি ল্যাপটপ দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এক সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা নালন্দা, তক্ষশিলা প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে আসতো। ভারতবর্ষের ঐতিহ্যগত শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চিন্ময় মিশন উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ১৯৫৩ সালে স্বামী চিন্ময়ানন্দ চিন্ময় মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষের মনকে সৃজনশীল করা এবং মনের প্রসারের জন্য চিন্ময় মিশন কাজ করছে। এজন্য তিনি চিন্ময় মিশনকে ধন্যবাদ জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পড়াশুনা করে জ্ঞান অর্জন করতে পারলে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। বর্তমান ডিজিটাল যুগে পাঠ্যপুস্তক পড়ার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের আরও বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এজন্য রাজ্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষায় শিক্ষিত করতেও রাজ্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নেও রাজ্য সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের গুণগত শিক্ষার সঙ্গে বৃত্তিমূলক শিক্ষাও প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যেও জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। গত ২৩ জুন ত্রিপুরাকে পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটা আমাদের রাজ্যের পক্ষে গৌরবের। ছাত্রীদের পড়াশুনার প্রতি উৎসাহিত করতে এখন পর্যন্ত বিনামূল্যে ১ লক্ষ ২২ হাজার বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ফলাফল করার জন্য দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ ১৪০ জনকে স্কুটি দেওয়া হয়েছে। ২০০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। আমবাসা, কাকড়াবন এবং করবুকে ৩টি নতুন কলেজের পঠনপাঠন শীঘ্রই শুরু হবে। চাকরির বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য আগরতলা, উদয়পুর এবং আমবাসাতে পরীক্ষাকেন্দ্র চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ সারা দেশে চিন্ময় মিশনের বিভিন্ন কাজকর্মের কথা তুলে ধরেন। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভালো করে পড়াশুনা করার পাশাপাশি দায়িত্বশীল হতে হবে। সত্যকে ভালোবাসতে হবে। দেশের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিবেকনগর রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি স্বামী শুভকরানন্দ মহারাজ, পদ্মশ্রী সি.এন. রাঘবেন্দ্রন, সি.আর.এন.-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিশিষ্ট সমাজসেবী জি.আর. রবীন্দ্র রাজ, চিন্ময় মিশন ত্রিপুরা শাখার সভাপতি অমিত রক্ষিত, সমাজসেবী বেণুগোপাল, চিন্ময় মিশনের স্বামী মিত্রানন্দ প্রমুখ।