রাজ্যে অতি বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাক্তার মানিক সাহা।রবিবার আগরতলায় বন্যা প্লাবিত চন্দ্রপুর সহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে গিয়ে এই কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এখনো যারা জলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন তাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
নিন্মচাপ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর জোড়া ফলায় রাজ্যে এমনিতেই নদ-নদী খাল-বিল গুলি জলে পরিপূর্ণ ছিল ।এর উপর শনিবার রাজ্য জুড়ে প্রবল বর্ষণের ফলে রাজধানী আগরতলার বিভিন্ন নিন্মাঞ্চল সহ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়। একাধিক নদীর জল ফুলে ফেপে উঠতে শুরু করে। শনিবারের সন্ধ্যার তিন ঘন্টার অতি ভারী বর্ষণে রাজধানীর নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয় ।প্রচুর সংখ্যক মানুষ জলবন্দী হয়ে পড়েন। শহরের নাভি কেন্দ্রে হাঁঠু সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। যদিও তিন থেকে পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।কিন্তু হাওড়া নদীর জল দুকূল প্লাবিত করে বহু নিচু এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণ প্রশাসনের সহযোগিতায় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করেন ।রবিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করেই রাজধানীর একাধিক প্লাবিত এলাকা এবং ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাক্তার মানিক সাহা ।মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, মেয়র দীপক মজুমদার, দুর্যোগ মোকাবেলা দপ্তরের সচিব ব্রিজেস পান্ডে সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। এদিন বন্যা প্লাবিত চন্দ্রপুর, শ্রীলঙ্কা বস্তি সহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী ।পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান ,হাওড়া নদীর জল ফুলেফেপে কাটাখাল ভরাট করে দিয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে শহরের জল জমেছিল ।কিন্তু তা বেশিক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এর থেকে প্রমাণিত রাজধানীর নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য পুলিশ, স্বাস্থ্য দপ্তর ,এসডিআরএফ, এনডিআরএফ সহ সবকটি দপ্তর একযোগে সক্রিয় রয়েছে ।রাজধানী আগরতলা বাদে কৈলাসহরে কিছুটা সমস্যা রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী ।তিনি আরো জানান ,এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে কখন পরিস্থিতি পাল্টে যাবে তা বলা যায় না ।সেই দিকে নজর রেখে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাক্তার মানিক সাহা আরো জানান ,উত্তর পূর্বাঞ্চলের সব কটি রাজ্যেই প্রবল বর্ষা চলছে ।অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেড়েছে। তিনি আরো জানান, আগরতলা শহরে ২৫ টির মত স্কুলে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ।ত্রাণ শিবির গুলিতে আশ্রিতোদের স্বাস্থ্য জনিত কোন সমস্যা ,খাওয়া-দাওয়া এবং যথাযথ স্যানিটেশন জনিত সমস্যা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।মুখ্যমন্ত্রী জানান ,এখনো কিছু কিছু অঞ্চলে মানুষ জলবন্দী অবস্থায় রয়েছেন ।তাদের অতিসত্বর নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে শুরু করে শাসকদলের কার্যকর্তারাও।