রাত পোহালেই বাঙালির এক ঐতিহ্যবাহী পার্বন জামাইষষ্ঠী ।আগে এই পার্বণের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই শাশুড়ি মায়েরা এ বাড়ি ঘুরে ঘুরে ষষ্ঠীর উপকরণ সংগ্রহ করতেন। বর্তমানে ব্যস্ত জীবনের ছন্দে বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে ষষ্ঠীর উপকরণ ।রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ষষ্ঠীর উপকরণের অস্থায়ী বাজারের চিত্র ধরা পড়েছে আমাদের ক্যামেরায়।
রবিবার জৈষ্ঠ মাসের শুক্লা পক্ষের ষষ্ঠী তিথি ।এই দিন বাঙালির ঘরে ঘরে পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী পার্বণ ,যার পোশাকী নাম জামাইষষ্ঠী। মেয়ের জামাই এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ,ভালবাসা এবং পরিবারের সঙ্গে একসাথে সময় কাটানো – এই পার্বণের মূল ভাবনা। জামাইষষ্ঠী তিথিতে সকালে উপোস করে ষষ্ঠীর পুজো দেন শাশুড়ি মায়েরা ।ষষ্ঠী পূজোর উপকরণ বট গাছের চারা ,বাঁশের করুল,তালের পাখা ,ধান ,দুর্বা, করমচা ফল, পাঁচ রকমের আস্ত ফল, আম, লিচু, জাম ,কাঁঠাল প্রভৃতি মরশুমি ফল ,পান সুপারি এবং উপহার সামগ্রী হিসেবে নতুন বস্ত্র ।এই সেদিনও জামাইষষ্ঠীর বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহে শাশুড়ি মায়েদের এ বাড়ি ও বারি ঘুরঘুর করতে দেখা যেত। এখন ডটকমের যুগ ।জীবনের ছন্দে সবাই ব্যস্ত ।তাই জামাইষষ্ঠীর উপকরণ এখন বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে জামাইষষ্ঠীর উপকরণের অস্থায়ী বাজার ধরা পরল আমাদের ক্যামেরায়। সাধারণত গ্রাম গঞ্জের মানুষরাই এই সমস্ত উপকরণ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন ।তাদের কাছে রয়েছে বাশকরুল ,করমচা ফল ,বট গাছের চারা ,ধান দুব্বা থেকে শুরু করে তিল হরতকি সবকিছু ।এমনকি সংশ্লিষ্ট উপকরণ দিয়ে বানানো মুঠাও বিক্রি করছেন তারা ।প্রতিটি মুঠো বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ ,২০ এমনকি ত্রিশ টাকায় ।সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে মানুষ ক্রয়ও করছেন। এক বিক্রেতা জানান, জামাইষষ্ঠীর উপকরণ সামগ্রী গ্রাম থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করে দুই পয়সা লাভ কামানোর জন্যই বাজারে নিয়ে এসেছেন তিনি। বিক্রি বাট্টা ভালোই চলছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য ,ডটকমের এই যুগের সাথে সাজুজ্য রেখে বর্তমানে অনেক পরিবারকেই হোটেল বা রেস্তোরায় জামাইষষ্ঠীর আয়োজন করতে দেখা যায়। এই উপলক্ষে হোটেল এবং রেস্তোরাঁ গুলিতেও জামাইষষ্ঠীর বিশেষ মেনু থাকে। তবে অধিকাংশ পরিবারই সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে বাড়ি ঘরেই সারেন জামাইষষ্ঠীর পার্বণ।