Saturday, October 19, 2024
বাড়িখবররাজ্যজনকল্যাণে রূপায়িত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুফল দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে...

জনকল্যাণে রূপায়িত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুফল দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে বললেন পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী

জনকল্যাণে রূপায়িত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুফল দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে । এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রূপায়ণকারী দপ্তর এবং সংস্থা সমূহকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে । সচিবালয়ের ২ নং সভাকক্ষে রাজ্যস্তরীয় দিশা কমিটির পর্যালোচনা সভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । সভায় রাজ্যে রূপায়িত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প সমূহের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি জনস্বার্থবাহী কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে আগামীর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন । তিনি বলেন , যেসব কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং যেসব কাজ বর্তমানে রাজ্যে চলছে সেইসব উন্নয়নমূলক কাজগুলি আরও বেশি করে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসতে হবে । তিনি বলেন , রাজ্যে রূপায়িত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে । এরফলে কাজের গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি তৈরি সম্পদের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাবে । পর্যালোচনা সভায় শিক্ষা দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে রাজ্যে রূপায়িত সমগ্র শিক্ষা এবং পিএম পোষণ ( স্কুল মিড ডে মিল ) প্রকল্পের কাজের চিত্র তথ্য পরিসংখ্যানের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন । তিনি জানান , সমগ্র শিক্ষা প্রকল্পে রাজ্যের প্রত্যেকটি বিদ্যালয়কে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হবে । এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয়গুলিকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনার পাশাপাশি কম্পিউটার পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে দপ্তরের আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলেন । এক্ষেত্রে তিনি বিদ্যুৎ দপ্তরের সহযোগিতায় টাস্ক ফোর্স গঠনের মাধ্যমে কর্মসূচি বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন । সভায় শিক্ষা দপ্তরের সচিব বলেন , রাজ্যের ৮৮ টি বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক সেকশন চালু করা হয়েছে । ৩১২ টি বিদ্যালয়ে আইসিটি রয়েছে । ১৩৫ টি বিদ্যালয়ে বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করা হয়েছে । ৪০০ টি বিদ্যালয়ে সক্ষম ত্রিপুরা প্রকল্প চালু করা হয়েছে । ৪০০ টি বিদ্যালয়কে মডেল স্কুলে রূপান্তরিত করা হয়েছে যা শিক্ষাক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় । এছাড়াও বিভিন্ন বিদ্যালয় এবং একাডেমিক লিডার / কো – অর্ডিনেটরদের মধ্যে কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ দেওয়া হয় । সভায় শিক্ষায় দপ্তরের সচিব পিএম পোষণ প্রকল্পে রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের জন্য এলপিজি সংযোগের ব্যবস্থাপনার কথাও উল্লেখ করেন । তিনি বলেন , ৮৪৪ টি বিদ্যালয়ে কিচেন গার্ডেন করা হয়েছে । সভায় বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব রাজ্যে রূপায়িত টিএসইসিএল – এর অধীনে কেন্দ্রীয় প্রকল্প , দীনদয়াল গ্রামজ্যোতি যোজনা , ইন্টিগ্রেটেড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিম এবং এনএলসিপিআর প্রকল্পের কাজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন । এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিবকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী । ২ – এর পাতায় পর্যালোচনা সভায় সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা ড . সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল রাজ্যে আইসিডিএস এবং সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশন প্রোগ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে জানান , রাজ্যে বর্তমানে ৫৬ টি আইসিডিএস প্রকল্প চালু আছে । রাজ্যের ৯,৯১১ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ৬ মাস থেকে ৬ বছরের ৩,২৭,৪০৩ জন শিশু এবং ৫৬,২১৮ জন গর্ভবতী মহিলা এবং লেক্টেটিং মাদারস সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশনের আওতায় রয়েছে । তিনি জানান , ১০,৭৩৫ টি স্মার্ট ফোন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সুপারভাইজারদের দেওয়া হয়েছে । ৯,৯১১ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ৯,৯১১ টি গ্রোথ মনিটরিং ডিভাইস দেওয়া হয়েছে । প্রথম পর্যায়ে ৩,৮৭৪ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এলপিজি সংযোগ দেওয়া হয়েছে । এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ভাতা ইত্যাদি নিয়ে সভায় আলোচনা করা হয় । সভায় নগর উন্নয়ন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে রাজ্যে রূপায়িত কেন্দ্রীয় প্রকল্প সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন । তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ( আরবান ) প্রকল্পে রাজ্যের নগর সংস্থা এলাকার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন । এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রকৃত যোগ্য ব্যক্তিরাই যাতে এই প্রকল্পে ঘর পেতে পারেন সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দপ্তরকে বলেন । বাড়ি বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরে সচিব জানান , এর ফলে মহিলা পরিচালিত স্বসহায়ক দলগুলিও আর্থিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন । তিনি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে রাজ্যে বিভিন্ন সড়ক নির্মাণের কাজের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন । এছাড়াও জাতীয় সড়ক নির্মাণ কাজের অগ্রগতি নিয়েও সভায় আলোচনা হয় । সভায় জলজীবন মিশন এবং স্বচ্ছ ভারত অভিযান ( গ্রামীণ ) নিয়ে আলোচনা করেন পানীয়জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে । তিনি জানান , রাজ্যে জলজীবন মিশনে এখন পর্যন্ত ৪৮.৯৯ শতাংশ বাড়িতে ট্যাপের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ চালু রয়েছে । এছাড়াও স্বচ্ছ ভারত মিশন ( গ্রামীণ ) গোবরধন প্রকল্প , কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাফল্য ইত্যাদি বিষয়েও আলোকপাত করেন নগর উন্নয়ন দপ্তরের সচিব । সভায় কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় রাজ্যে রূপায়িত রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনা , পরম্পরাগত কৃষি বিকাশ যোজনা , প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা , প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা প্রভৃতি কাজের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন । এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষক কল্যাণ প্রকল্পগুলির সুফল যাতে কৃষকরা পায় সেই দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে । এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন অর্থকরী ফসলগুলির সঠিক প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নিতে হবে । পর্যালোচনা সভায় শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব অভিষেক চন্দ্রা , খাদ্য দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী দপ্তরের রূপায়িত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন । এদিনের সভায় উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা , সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল , মুখ্যসচিব কুমার অলক , প্রধান সচিব জে কে সিনহা সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সচিব ও সচিবগণ উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

18 + twelve =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য