ত্রিপুরার উন্নয়নের পথে নতুন পদক্ষেপ হিসেবে আজ টাটা গ্রুপের ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানী লিমিটেড এবং ত্রিপুরা সরকারের মধ্যে এক মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ দুপুরে ত্রিপুরা ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফরমেশন কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে রাজ্যের হোটেল ক্ষেত্রের বিকাশে ও পর্যটন শিল্পের উন্নয়নকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এই মউ স্বাক্ষরিত হয়। এই মউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, অর্থ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, পর্যটন দপ্তরের সচিব ইউ কে চাকমা সহ ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানী লিমিটেড-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশন) কে মোহনচন্দ্রণ, ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানী লিমিটেড-এর এরিয়া ডিরেক্টর এন্ড জেনারেল ম্যানেজার জয়ন্ত দাস প্রমুখ।
মৌ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, রাজ্যের হোটেল ও পর্যটন শিল্পের বিকাশে এই প্রথম রাজ্য সরকারের সাথে টাটা গ্রুপের মউ স্বাক্ষর হয়েছে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানী লিমিটেড পূর্বতন রাজভবন তথা রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী পুষ্পবন্ত প্যালেসে একটি বিশ্বমানের সর্বসুবিধাযুক্ত হোটেল নির্মাণ করবে। তিনি বলেন, আধুনিক ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্ভাবনী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। রাজ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, পর্যটনের প্রসার, রাজ্যের নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি প্রচার এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, টাটা গ্রুপের এই হোটেলের নামকরণ করা হয়েছে ‘তাজ পুষ্পবন্ত প্যালেস’। কোম্পানীটি পুষ্পবন্ত প্যালেসের ৭.৭৮ একর এলাকা জুড়ে হোটেল নির্মাণের কাজ শুরু করবে। ঐতিহ্যবাহী পুষ্পবন্ত প্যালেসের মূল ভবনটি পুনঃসংস্কারও করা হবে এবং এটি মূলত রিসেপশন ও পাবলিক এরিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হবে। রাজকীয় আদলে মূল ভবনটিতে ৪টি বিশেষ রুম নির্মাণ করা হবে। ফলে রাজ্যে আগত পর্যটকরা ত্রিপুরার মাণিক্য রাজবংশ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন এবং বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের উন্নয়নে মাণিক্য রাজবংশের বিভিন্ন উদ্যোগ ও তাদের অবদান সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়া মূল ভবনটির বাইরের অংশে ১০০টি আধুনিক মানের হোটেল রুম তৈরি করা হবে। এই হোটেলটি নির্মানে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পের প্রসারের ফলে রাজ্যে পর্যটকদের আগমন আগামীদিনে আরও বাড়বে। রাজ্যের জনজাতিদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা বিশদভাবে জানতে পারবে এবং ত্রিপুরা বিশ্বের দরবারে এক বিশেষ পরিচিতি লাভ করবে। এছাড়াও এই হোটেল নির্মাণের মাধ্যমে স্থানীয় ২০০ এর বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানী লিমিটেড আগামীদিনে ত্রিপুরার উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিরও বিকাশে এগিয়ে আসবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনে আধুনিক ত্রিপুরা গড়ে তোলার যে প্রয়াস রয়েছে তা এই ধরণের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বাস্তবায়িত হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী হোটেলটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি অকর্ষণ করেন।