Sunday, December 22, 2024
বাড়িখবররাজ্যআধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরের পরিকাঠামো নির্মাণের...

আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরের পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে: পর্যটনমন্ত্রী

রাজ্যে গত তিনটি অর্থবছরে প্রসাদ প্রকল্পে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক রাজ্যে পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে মোট ২৫ কোটি ২৬ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা প্রদান করেছে। আজ রাজ্য বিধানসভায় বিধায়ক নয়ন সরকারের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা জানান। পর্যটনমন্ত্রী শ্রীচৌধুরী জানান, প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে উদয়পুরের মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরকে একটি আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির চত্বরের পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। বর্তমান অর্থবর্ষে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরের কাজ শেষ হবে বলে পর্যটনমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

পর্যটনমন্ত্রী শ্রীচৌধুরী জানান, রাজ্যে নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কমলপুর মহকুমার সুরমাছড়া ওয়াটারফলস পর্যটন কেন্দ্রের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দক্ষিণ ত্রিপুরার আভাংছড়াস্থিত শহীদ ধনঞ্জয় স্মৃতি উদ্যান (জোলাইবাড়ি), চোত্তাখলাস্থিত ভারত-বাংলা মৈত্রী উদ্যান এবং বক্সনগর বৌদ্ধস্তূপ পর্যটন কেন্দ্র উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলছে। রাজ্যের পর্যটন পরিকাঠামোর বিকাশে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ছবিমুড়া, কৈলাসহরের সোনামুখী এলাকা, চতুর্দশ দেবতা মন্দির এবং কসবা কালীমন্দির চত্বরে পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে পর্যটনের প্রচার ও প্রসারের কাজটিও সমানতালে এগিয়ে চলছে। এক্ষেত্রে কলকাতা, দিল্লি, পুনে, অযোধ্যা ও আহমেদাবাদে অনুষ্ঠানে পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণ ছাড়াও রাজ্যের প্রধান প্রধান মেলা ও উৎসবগুলিতে ত্রিপুরারপর্যটন সম্ভারগুলিকে মানুষের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। পর্যটনমন্ত্রী জানান, রাজ্যের পর্যটন শিল্পের বিকাশে গত অর্থবছরে রাজ্যের বিভিন্নপর্যটন কেন্দ্রে ৪১টি আধুনিক লগহাট নির্মাণ ও চালু করা হয়েছে। আরও ১০টি লাগহাট খুব সহসাই চালু হবে। উজ্জয়ন্ত প্রাসাদে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো চালু করা হয়েছে, নারকেলকুঞ্জে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে, ডম্বুর জলাশয়ে ওয়াটার স্কুটার জেট স্কি, ভাসমান জেটি, আধুনিক মোটরচালিত বোট চালু করা হয়েছে, আনন্দনগরে স্টেট ইনস্টিটিউট অব হোটেল ম্যানেজমেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে। স্বদেশ দর্শন ১.০ প্রকল্পের মাধ্যমে আগরতলা, সিপাহীজলা, নীরমহল, উদয়পুর, অমরপুর, মন্দিরঘাট, তীর্থমুখ, নারকেলকুঞ্জ, ডম্বুর, আমবাসা এবং ছবিমুড়া ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হয়েছে।

পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী আরও জানান, পুষ্পবন্ত প্রাসাদ ও দরবার হলকে মহারাজা বীরেন্দ্র কিশোর মাণিক্য মিউজিয়াম ও কালচারাল সেন্টারে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। ডম্বুর জলাশয়ের জন্য অত্যাধুনিক হাউস বোট ক্রয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নর্থ ইস্ট স্পেশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট স্কিম প্রকল্পে উদয়পুরের অমরসাগরের উন্নয়নের জন্য ৪০ কোটি এবং ছবিমুড়ায় ১৫টি মনুমেন্ট উন্নতির জন্য ২৫ কোটি টাকার একটি প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। স্পেশাল অ্যাসিস্টেন্স টু স্টেট ফর ক্যাপিটেল ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে মহাদেব দীঘি ও ব্রহ্মকুন্ড পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে নারকেলকুঞ্জের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ১১টি এবং জম্পুইহিলে ৪টি হোম স্টে চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নারকেলকুঞ্জের আশেপাশে আরও ৪টি আইল্যান্ডকে পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে তোলার লক্ষ্যে ভারত সরকারের ডোনার মন্ত্রকের অধীন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট স্কিম প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। স্বদেশ দর্শন ২.০ প্রকল্পে উনকোটি এবং আগরতলার ডেস্টিনেশনগুলিকে সাজিয়ে তোলার লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও জিরানীয়া মহকুমার শচীন্দ্রনগর কলোনীর চা বাগানকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরা হেরিটেজ ভিলেজ অ্যান্ড ত্রিপুরা সঙ্গীত এক্সিপেরিয়েন্স তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদয়পুর রেল স্টেশন থেকে মাতাবাড়ি, মহারাণী থেকে ছবিমুড়া, সুরমাছড়া এবং জম্পুইহিলে রোপওয়ে নির্মাণের জন্য ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগম এবং ন্যাশনাল হাইওয়েজ লজিস্টিক ম্যানেজমেন্টের মধ্যে মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে তিনি জানান।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

one × two =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য