Friday, October 18, 2024
বাড়িখবররাজ্যমহিলা স্বশক্তিকরণের জন্য ত্রিপুরা রাজ্য পলিসি -২০২২ রূপায়ণে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ...

মহিলা স্বশক্তিকরণের জন্য ত্রিপুরা রাজ্য পলিসি -২০২২ রূপায়ণে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে : তথ্য ও সংস্কৃতি

মন্ত্রী মহিলা স্বশক্তিকরণের জন্য ত্রিপুরা রাজ্য পলিসি -২০২২ এবং মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প- রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত দুটি গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্য সফরে এসে ঘোষণা করেন । আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এই প্রকল্প দুটির বিষয়ে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন । সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব , সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমাও উপস্থিত ছিলেন । তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকার গৃহীত মহিলা স্বশক্তিকরণের জন্য ত্রিপুরা রাজ্য পলিসি ২০২২ – এ যে সমস্ত বিষয় রয়েছে তা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন , এখন থেকে রাজ্যে যে কোনও সরকারি চাকরি ও আউট সোর্সিং – এর মাধ্যমে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে । এই পলিসিতে কোনও মহিলা উচ্চশিক্ষার জন্য ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ শতাংশ হারে শিক্ষা ঋণ নিতে পারবেন । এছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলাদের স্বাস্থ্যবিধি কল্যাণে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ টি মহিলা স্বাস্থ্য ও ওয়েলনেস সেন্টার স্থাপন করা হবে । আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে মা ও শিশুদের জন্য ১০০ শয্যার সুপার স্পেশালিটি ইউনিট গড়ে তোলা হবে । তাতে ব্যয় হবে ১৯০ কোটি টাকা । তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আরও জানান , এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২ টি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ড্রাগ ডিপেন্ডেন্স হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে । তাতে ব্যয় করা হবে ৯০ কোটি টাকা । মহিলা মানসিক রোগীদের জন্য ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ টি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মানসিক রোগের চিকিৎসা হাসপাতাল স্থাপন করা হবে । মানসিক মহিলা রোগীদের জন্য ২৫ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাফওয়ে হোম স্থাপন করা হবে । তাতে ব্যয় হবে ১ কোটি টাকা । এছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ টি বৃদ্ধাশ্রম , ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্মরত মহিলাদের জন্য ৪ টি নতুন হোস্টেল স্থাপন , ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মহিলাদের জন্য একটি স্টেট রিসোর্স সেন্টার গড়ে তোলা হবে । তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী জানান , মহিলা স্বশক্তিকরণের জন্য ত্রিপুরা রাজ্য পলিসি ২০২২ রূপায়ণে মোট ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । এই ফান্ড কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প , বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প , বিভিন্ন অনুদান এবং প্রয়োজনে রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তর থেকে প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে । -২ – এর পাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান , রাজ্যের ৫৪ টি চা বাগানে এবং ২১ টি চা প্রক্রিয়াকরণ ফ্যাক্টরিতে ৭ হাজারের উপর চা বাগান শ্রমিক পরিবার রয়েছে । এই ৭ হাজার চা বাগিচা পরিবারের শ্রমিকদের সুস্থ বসবাসযোগ্য পরিবেশ প্রদানের লক্ষ্যে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে । এই প্রকল্পটি রূপায়ণে প্রাথমিকভাবে ৮৫ কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা নিয়েছে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর । এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরে শ্রীচৌধুরী জানান , এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন পরিবারগুলিকে বাড়ি করার জন্য জমি প্রদান করা হবে । যোগ্যতা অনুসারে প্রতিটি পরিবারে প্রায়োরিটি হাউজহোল্ড ( পিজি ) রেশনকার্ড প্রদান করা হবে , চা শ্রমিক পরিবারে ন্যূনতম বিভিন্ন সুবিধা যেমন , শিক্ষা , স্বাস্থ্য , বাসস্থান , স্যানিটেশন , পানীয়জল , বিদ্যুৎ ইত্যাদি সুবিধা প্রদান করা হবে । চা শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য সমস্ত স্তরের শিক্ষা যেমন , প্রাক প্রাথমিক , প্রাথমিক এবং উচ্চতর শিক্ষা প্রদানের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে । চা বাগান শ্রমিকদের সামাজিক ভাতা প্রকল্পের আওতায় আনা হবে । এছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে চা বাগানে কর্মরত শ্রমিক মহিলাদের প্রসূতিকালীন এবং শিশুর স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করা হবে । দিব্যাঙ্গজনদের প্রয়োজনীয় চলন সামগ্রী দেওয়া হবে , মহিলা চা শ্রমিকদের মুক্ত পরিবেশে কাজ করার ব্যবস্থা করা হবে , যোগ্যতা অনুসারে চা বাগান শ্রমিকদের বীমার আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে এবং ৭ হাজার পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে । সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন , ২০১৮ সালে বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সরকারি উদ্যোগে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করে । এই অর্থবর্ষের খারিফ মরশুমে ২০ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিলো । কিন্তু কৃষকদের ধান বিক্রি করার উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করে ৩৩ হাজার মেট্রিকটন ধান কিনতে হয়েছে । তিনি জানান , শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যের কৃষকদের থেকে মোট ১ লক্ষ ৩ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনা হয়েছে । তাতে রাজ্যের ৪৪ হাজার কৃষক আর্থিকভাবে উপকৃত হয়েছেন । খাদ্যমন্ত্রী আরও জানান , বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর রেশনশপের মাধ্যমে ভোক্তাদের ডাল , চিনি , ত্রিপুরেশ্বরী ব্র্যান্ডের চা প্রদান শুরু করেছে । আগামী দিনে সোয়াবিন সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস প্রদানের বিষয়ে দপ্তর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান । সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ডা . প্রশান্ত কুমার গোয়েল এবং সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব চৈতন্যমূর্তি উপস্থিত ছিলেন ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

14 + 12 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য