Sunday, December 22, 2024
বাড়িখবররাজ্যপড়াশুনার সাথে সাথে ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করতে হবে - মুখ্যমন্ত্রী

পড়াশুনার সাথে সাথে ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করতে হবে – মুখ্যমন্ত্রী

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে একটি পবিত্র স্থান। মানুষের জীবনের ভিত্তি এখান থেকেই শুরু হয়। তাই পড়াশুনার সাথে সাথে ছাত্রছাত্রীদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করতে হবে। তবেই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা পূর্ণতা পাবে। আজ প্রাচ্য ভারতী উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৫তম বর্ষপূর্তি উৎসব উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার চায় রাজ্যের সমস্ত শিক্ষার্থীরা গুণগত শিক্ষার মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিভাকে বিকশিত করুক। রাজ্যের মেধা সম্পদ রাজ্যেই কাজে লাগুক। রাজ্যে যে প্রাকৃতিক, বনজ এবং উদ্যানজাত সম্পদ রয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই সরকারের মূল লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যালয়ের ৭৫ বর্ষ পূর্তি উদ্যাপন নিঃসন্দেহে একটি স্মরণীয় ঘটনা। নবীন-প্রবীণ ছাত্রছাত্রী ও গুণীজনদের সমাবেশে এই উদ্যাপন আনন্দমুখর হয়ে উঠুক। রাজ্যের প্রাচীনতম এই বিদ্যালয়টি পুঁথিগত শিক্ষাদানের পাশাপাশি ছাত্রীদের মূল্যবোধ, সামাজিকতা, সংস্কৃতি চর্চা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে সহায়ক ভূমিকা নেবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশাব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার ছেলেমেদের মধ্যে গুনগত শিক্ষা প্রদানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা কার্যকর করেছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল,এন সি ই আর টি-পাঠ্যক্রম চালু,অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা, সুপার ৩০ প্রকল্প চালু, বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু, বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প চালু,নিপুন প্রকল্প চালু, মিশন মুকুল চালু ইত্যাদি। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা নামে একটি নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দ্বাদশমান পরীক্ষায় প্রথম ১০০ জন স্থানাধিকারী মেয়েদের বিনামূল্যে স্কুটি প্রদান করা হবে। এরফলে মেয়েরা উচ্চশিক্ষায় অনুপ্রাণিত হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার পিএমশ্রী এবং বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে ৪০০টি সরকারি বিদ্যালয়কে আধুনিকীকরণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। শুধু তাই নয় রাজ্যের শিক্ষার পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার আগামী পাঁচ বছরে দুই হাজার কোটি টাকা খরচ করবে। রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে দেশ সেবায় উৎসাহিত করার জন্য রাজ্য সরকার প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ত্রিপুরা অগ্নিবীর কর্মসূচি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার সরকারী মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত ছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন রকমের ফি মুকুব করে দিয়েছে। দিব্যাঙ্গ দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা লাভে উৎসাহিত করতে চীফ মিনিষ্টার স্পেশাল স্কলারশিপ চালু করেছে। এর মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পাঁচ হাজার টাকা এবং ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য চার হাজার টাকা করে মাসিক বৃত্তি প্রদান করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই লক্ষ্যে রাজ্য সরকার রাজ্যের বিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটাল কর্মযজ্ঞ হিসেবে ডিজিটাল ক্লাসও ইতিমধ্যে চালু করেছে।অনুষ্ঠানে খাদি ও গ্রামোদ্যগ পর্যদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজীব ভট্ট াচার্য বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যে এডুকেশন হাব গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে রাজ্য থেকেই উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারে সে লক্ষ্যে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সম্পাদক চন্দ্রশেখর দেব তার বক্তব্যে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান বাদল বিহারী দেবনাথ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবীর দেববর্মা প্রমুখ। অনুষ্ঠানমঞ্চে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র তথা অর্জুন পুরুস্কারপ্রাপ্ত জিমন্যাস্ট মন্টু দেবনাথকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। প্রাচ্য ভারতী উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৫তম বর্ষপূর্তি উৎসব উদযাপন উপলক্ষ্যে এক রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা সহ অন্যান্য অতিথিগণ রক্তদান শিবির পরিদর্শন করেন এবং রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

5 + 3 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য