বর্তমানে হাইটেক জমানায় রকমারী টুনি লাইটে ভরপুর বাজার। রঙিন টুনি লাইটের চাকচিক্যে হারিয়ে যেতে চলেছে মাটির প্রদীপ। কিন্তু সেই জায়গাতেও আলোর উৎসবের দিন গুলিতে ইলেক্ট্রনিক লাইটের সাথে টক্কর দিতে প্রস্তুত হচ্ছে মাটির প্রদীপ। রাজ্যের বিভিন্ন কুমোর পাড়ায় মাটির প্রদীপ তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎ শিল্পীরা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ১২ মাসের ১৩ পার্বনের অন্যতম একটি পার্বন আলোর উৎসব দীপাবলি। কার্ত্তিক মাসের আমাবস্যা তিথিতে হয় দীপাবলি। স্বাভাবিক ভাবে উৎসবের নাম থেকেই বোঝা জাচ্ছে এই দিনে দ্বীপ জালানোর মাধ্যমে সুচনা হয় উৎসব। প্রাচীন পরম্পরা অনুযায়ী মাটির প্রদীপ প্রজ্জলনের মাধ্যমেই দীপাবলি উৎসবের সুচনা হওয়ার কথা। কিন্তু গত দুই দশক ধরে প্রযুক্তির জেভাবে উন্নয়ন ঘটেছে, এতে করে ধার্মিক রীতি নীতির উপরেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করে। তৈরী হয় বাহারী রঙের টুনি লাইট। এই টুনি লাইটের দৌলতে মাটির প্রদীপ ব্যবহারে চলে আসে ভাটার টান। চাহিদা কমতে থাকে মাটির প্রদীপের। এক সময় মাটির প্রদীপ তৈরির ক্ষেত্রে মুখ ফেরাতে শুরু করেন কুমোড় পাড়ার শিল্পীরা। তখনই ভোকাল ফর লোকালের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোটা দেশের পরম্পরাগত শিল্পি এবং হারিয়ে যাওয়া শিল্পকলা গুলি পুনরুদ্ধারে জোর দেওয়া হয়। শুরু হয় “পিএম বিশ্বকর্মা’’ প্রকল্পের। এই প্রকল্পের আওতায় মৃৎ শিল্পীদেরও যুক্ত করা হয়। হাতে ঘোরানো চাকার পরিবর্তে মোটরে ঘোরানো চাক্কির ব্যবস্থা করা মৃৎ শিল্পিদের জন্য। কিন্তু প্রকল্পের সুবিধা সকলের মধ্যে সেই ভাবে পৌছুতে না পারায় দাড়াতে পারছেননা অনেক মৃৎ শিল্পি। তাছাড়া জারা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন তারাও মাটির কাজ করতে সাহস পাচ্ছেন না। এক দিকে কাঁচা মালের অভাব, অন্যদিকে মাটির তৈরী প্রদীপ সহ অন্যান্য সামগ্রী গুলির প্রচার প্রসারের অভাব। ফলে এই শিল্পকে ধরে রাখার চেষ্টা করেও এগিয়ে আসছেননা অনেকেই। এই অবস্থায় সরকারী সঠিক সুযোগ সুবিধা এবং প্রচার প্রসারের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন উদ্যমী মৃৎ শিল্পীরা। পাশাপাশি এবছর মাটির তৈরি প্রদীপের চাহিদাও অনেকাংশে বেড়েছে বলে দাবী করছেন মৃৎশিল্পীরা। গত কয়েক দিন ধরে জোর কদমে চলছে এই ধরনের মাটির প্রদীপ তৈরির কাজ। পুজোর দিন গুলিতে চাহিদা কেমন থাকবে সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন মৃৎ শিল্পীরা।