দেখতে দেখতে কয়টি দিন অতিক্রান্ত হয়ে তিথি অনুযায়ী সমাপ্ত হলো সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাঙ্গালীদের অন্যতম প্রধান ও প্রাণের উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়েই সমাপ্তি ঘটে বাঙ্গালী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয়া দুর্গোৎসবের। তিথি অনুযায়ী মঙ্গলবার বিজয়া দশমী। অশ্রুসজল নয়নে ভক্তরা দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর দিন। সনাতন ধর্ম মতে এদিন দেবী ফিরে যাবেন কৈলাসে। মহালয়ার মধ্য দিয়ে যে দেবিপক্ষে সূচনা হয়েছিল, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তার সমাপ্তি। এই ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়েই জগৎ জননীর প্রকৃতি ও মানবকুলকে আলোকিত করেন। আগামী শরতে মা আবার ফিরে আসবেন এমন প্রত্যাশা নিয়েই তাকে বিদায় জানাচ্ছে ভক্তরা। শরৎকাল মানেই দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। প্রতিবারের মতো দেবীবরণে এবারো প্রস্তুত ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।অসুর নাশকারী দেবীর পৃথিবী স্পর্শে পূর্ণতা পায় ঋতু রানী শরৎ। দেবীর সন্তুষ্টি লাভে পাঁচ দিন ব্যাপী পূজা অর্চনায় মেতেছিল সনাতন ধর্মে বিশ্বাসীর লোকজন। উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। সাড়ম্বরে এই উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও কল্যাণময় অবস্থানের বিকাশ আরো বিস্তৃত এবং বিকশিত হয়। অশুভ শক্তির পরাজয় ঘটিয়ে মঙ্গলদায়ক শুভ শক্তি ও ইতিবাচক চেতনার সম্প্রসারণ ঘটে। তাইতো দশমী কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বাঙালি আবেগ ও মন খারাপ মিশ্রিত একটি অনুভূতি। দশমী এলেই বাঙ্গালীর মনে আসে মায়ের ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও একটা বছর। সাধারণত দুর্গাপূজা শেষ হয় দশমীর মাধ্যমেই। এই দিনেই মা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। দশমী কথাটির সাধারণ অর্থ খুবই সহজ। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে পিতৃ গৃহ ছেড়ে কৈলাসের স্বামী গৃহে পাড়ি দেন দেবী। সেই কারণেই এই তিথিকে বিজয়া দশমী বলা হয়। মঙ্গলবার সকালে মণ্ডপে মন্ডপে দশমী পূজার সম্পন্ন হবার পরেই শুরু হয়ে যায় প্রতিমা বিসর্জনের পালা। তবে এদিন বাড়ি ঘরে অনুষ্ঠিত পূজোর প্রতিমা নিষ্ঠার সাথে বিসর্জন করা হলেও আগরতলা শহর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ক্লাবগুলিতে পুজোর আমেজ এখনো বজায় রয়েছে। আগামী দু’দিন বাদে সব কটি মন্ডপের প্রতিমা নিরঞ্জন হবার পরেই মূলত শেষ হবে এবছরের শারদীয়া দুর্গোৎসব।