রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতে অন্যতম একটা নাম সম্রাট রায়। যা নিন্দুকেরাও স্বীকার করে থাকেন। এন এস ইউ আই এর প্রদেশ সভাপতি হিসেবে সম্রাটের একাধিক আন্দোলনের কাছে নতস্বীকার করতে হয় প্রশাসনকে। তার আন্দোলনের চাপে পড়েই একটা সময় কোভিড পরিস্থিতিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় সবাইকে উত্তীর্ণ করে দিতে বাধ্য হয়। তৎকালীন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিদের সাথে তার অভাব্য আচরণ আজও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। চাকুরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পিআরটিসি বাধ্যতামূলক নিয়ে তার আন্দোলনের কাছে মাথা নত করে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। এরকম একাধিক ঘটনার মধ্য দিয়েই রাজ্যের ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম ছাত্রনেতা হিসেবে নিজেকে জাহির করতে সক্ষম হয়েছিলেন সম্রাট। আর এই সম্রাট কি এখন তাহলে রাজ্য ছাত্র রাজনীতিতে অবলুপ্তির পথে ? সেই প্রশ্নই এবার যেন উঠে এলো ছাত্র রাজনীতিতে। ইতিমধ্যেই এন এস ইউ আই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তিপ্রা স্টুডেন্ট ফেডারেশনের ডাকা সাম্প্রতিক কালের ত্রিপুরা বনধকে নৈতিক সমর্থন জানানোর জন্য শোকজ নোটিশ প্রদান করে সম্রাটকে। যদিও বিষয়টিকে অনেকেই কংগ্রেসের গোষ্টি রাজনীতির আভাষ বলে মনে করেন। সম্রাট ছাড়া কংগ্রেসের ছাত্র রাজনীতি অনেকেরই ভাবনার পরিপন্থী। এই অবস্থায় সম্রাটহীন এনএসইউআই এ এবার দেখা গেল নতুন মুখ। সৌরভ শীলের নেতৃত্বে এন এস ইউ আই এর চারজনের এক প্রতিনিধি দল বুধবার শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকের নিকট বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের স্কুলগুলিতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দাবি নিয়ে প্রদান করে এক ডেপুটেশন। ডেপুটেশনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা সবাই এন এস ইউ আই তো বটেই, রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতেও সম্পূর্ণ নতুন মুখ। আর এই নতুন মুখ নিয়েই উঠছে এখন প্রশ্ন। তাহলে কি রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতে বিলুপ্তির পথে সম্রাট ? এন এস ইউ আই এর প্রদেশ কমিটিতে আসছে কি নতুন মুখ ? এরকমই প্রশ্ন এদিন দেখা দেয় এন এস ইউ আই এর নামে দেওয়া ডেপুটেশনকে কেন্দ্র করে। তাদের দাবি বাংলা মিডিয়াম থেকে রাজ্যের প্রায় ১০০ স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের নামে ইংলিশ মিডিয়ামে পরিণত করা হয়েছে। এই স্কুলগুলোর ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিন সিবিএসই বোর্ড পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। নিয়ম অনুযায়ী এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হিন্দি ও ইংরেজিতে হয়। এতে করে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা এখন পড়েছে বিপাকে। তাই হিন্দি ও ইংরেজিতে নয়, বাংলা ভাষাতেই পরীক্ষা নিতে হবে। এই দাবি নিয়েই বুধবার শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তারের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করে এনএসইউআই। তাদের অভিযোগ সরকার জোরপূর্বক ছাত্রছাত্রীদের উপর ইংরেজি চাপিয়ে দিচ্ছে। সরকারের এই পলিসি শিক্ষাবিরোধী। কোন ধরনের পরিকাঠামো ছাড়াই ছাত্র স্বার্থ বিরোধী পলিসি গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। তাই অবিলম্বে এই পলিসি বাতিল করতে হবে। তবে তাদের দাবি যা কিছু থাকুক না কেন আলোচ্য বিষয় যেন এখন একটাই সম্রাট।