রাজ্যের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে সরকার স্বাস্থ্য , শিল্প , শিক্ষা , যোগাযোগ , পর্যটন , কৃষি , পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে । এজন্য প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলির বিকাশে ইতিবাচক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে । রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকারের এই ক্ষেত্রগুলির উন্নয়নের গতি আরও বাড়াতে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ( এডিবি ) -কে এগিয়ে আসতে হবে । তাহলেই প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলির বিকাশে কাঙ্খিত সাফল্য পাওয়া যাবে । আজ সচিবালয়ের ২ নং সভাকক্ষে এডিবি’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন । মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই রাজ্যকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য এডিবিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন । আলোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন , রাজ্যের উন্নয়নে এডিবি যে সমস্ত প্রকল্প হাতে নিয়েছে তা দ্রুততার পাশাপাশি সফলভাবে রূপায়ণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে । রাজ্যের সম্ভাব্য বিনিয়োগ ক্ষেত্রগুলির জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প রূপায়ণে এডিবি’র সহযোগিতা আবশ্যক । এডিবি রাজ্যের উন্নয়নের জন্য যে সমস্ত প্রকল্প গ্রহণ করেছে তা কিভাবে দ্রুত রূপায়ণ করা যায় সে বিষয়ে এডিবিকে পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করতে হবে । এক্ষেত্রে রাজ্যের আবহওয়ার উপর ভিত্তি করে এডিবিকে প্রকল্প রূপায়ণের উপর গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী । রাজ্যে বিশেষত শীতের মরশুমে বিল্ডিং , রাস্তা সহ বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পগুলি রূপায়ণের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নে এডিবিকে রাজ্য সরকারের পাশে থেকে কাজ করে রাজ্যকে রক্তাল্পতা মুক্ত , এইডস মুক্ত , অপুষ্টি মুক্ত রাজ্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে । ড্রাগস মুক্ত ত্রিপুরা গঠনে রাজ্য সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার জন্যও এডিবি’র প্রতি আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন , রাজ্যের সার্বিক বিকাশে আগামী ২৫ বছরের জন্য ‘ লক্ষ্য -২০৪৭ ‘ নামে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে । ‘ লক্ষ্য – ২০৪৭ ’ – এর উপর এডিবি কিভাবে কাজ করতে চায় তারজন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , রাজ্য সরকার রাজ্যের ১২ টি অ্যাসপিরিশনাল ব্লকে পরিকাঠামো , শিক্ষা , স্বাস্থ্য যোগাযোগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে । এক্ষেত্রে এডিবিকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী । পাশাপাশি ত্রিপুরা – বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নেও এডিবিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া এদিনের সভায় উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন , রাজ্যের বড় একটা অংশ বনাঞ্চল । একে ভিত্তি করে আবহাওয়া পরিবর্তনের উপর বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে এডিবি’র কাজ করার সুযোগ রয়েছে । পাশাপাশি রাজ্যের শিল্প , পরিকাঠামো , পর্যটন , স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রেও এডিবি’র বিনিয়োগ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে । মুখ্যসচিব কুমার অলক সভায় বলেন , রাজ্য সরকার পর্যটন , শিল্প , স্বাস্থ্য , পরিকল্পনা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে । এইসব ক্ষেত্রগুলিতে এডিবি বিনিয়োগ করার জন্য এগিয়ে আসতে পারে । রাজ্যের নিজস্ব প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে শিল্প উন্নয়নেও এডিবি এগিয়ে আসুক । সভায় এডিবি’র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর সমীর কুমার খারে বলেন , এডিবি ত্রিপুরাকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করেছে । এই লক্ষ্যে আগামী ৪ বছরে এডিবি রাজ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন , বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতিকরণ , পর্যটন , যোগাে ব্যবস্থার উন্নয়ন , স্বাস্থ্য , শিক্ষা , সামাজিক কল্যাণ , কৃষি , আবহাওয়া পরিবর্তন , ক্ষেত্রগুলিতে উন্নয়নের যে সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তা সচিত্র প্রতিবে মাধ্যমে তুলে ধরেন তিনি । সভায় এছাড়াও স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব জে কে সি রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুনীত আগরওয়াল , পরিবহণ দপ্তরের সচিব এল এইট ডার্লং , সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব চৈতন্যমূর্তি , শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব পি কে গোয়েল , অর্থ দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে , পর্যটন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে , এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টাকিও কোনিশি এবং এডিবি’র অন্যান্য প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন ।