চিকিৎসা ক্ষেত্রে রাজধানীর গোবিন্দ বল্লভ হাসপাতালে জুড়লো আরেকটি নতুন পালক। এজিএমসি অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের কর্ডিও থোরাসিক অ্যান্ড ভাসকুলার সার্জারি অ্যান্ড ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি ( সি টি ভি এস অ্যান্ড আই আর ) ডিপার্টমেন্ট – এর কনসালটেন্ট অ্যান্ড ইনচার্জ কার্ডিয়াক সার্জন ডাঃ কনক নারায়ণ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি টিম গত ২৮ জানুয়ারি তার সিএবিক্তি ( করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিং ) সার্জারি সার্জারির ইতিহাস গড়লেন । বলা বাহুল্য বিগত কিছুদিন আগে রাজ্যে প্রথমবার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে ওপেন হার্ট সার্জারি অপারেশন। তারপর গতকাল এই জিবি হাসপাতালেই সফলভাবে সম্পন্ন হল হার্ট বাইপাস সার্জারি। আগরতলা জিবি হাসপাতালের এই সফলতা রাজ্যবাসীর সামনে তুলে ধরার লক্ষে এজিএমসি হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এদিন এই সফল বাইপাস সার্জারি অপেরেশনের মহান চিকিৎসক কার্ডিয়াক সার্জন ডাঃ কনক নারায়ণ ভট্টাচার্যী সংবাদমাধ্যমকে জানান ওপেন হার্ট সার্জারি পর আমরা হার্ট বাইপাস সার্জারি সফলভাবে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বয়স ৩৮ এর অমরপুরের বাসিন্দা বিধান চন্দ্র রায় আগরতলা জিবি হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ৯ ডিসেম্বর , ২০২১ এ । তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পর সিটিভিএস ক্যাথ ল্যাবে ১৫ ডিসেম্বর , ২০২১ চিকিৎসকরা অ্যাঞ্জিওগ্রাম করে তার হার্টের করোনারি ধমনীতে গুরুতর ব্লকেজ সনাক্ত করেন এবং করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিংয়ের পরামর্শ দেন ।সে অনুসারে গতকাল সুদীর্ঘ ছয় ঘণ্টা ব্যাপী এই জটিল অস্ত্রোপচার করা হয় । এই অপারেশনে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের কোনও প্রয়োজন হয়নি , কারণ , এই প্রথম ত্রিপুরায় সেল সেভার মেশিন ব্যবহার করে রক্তের অটো ট্রান্সফিউশন করা হল । ফলে রোগীর শরীর থেকে বিন্দুমাত্র রক্তের অপচয় হয়নি বলে জানান । এদিনের অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ছিলেন ডাঃ সুরজিৎ পাল । পারফিউসানিস্ট ( হার্ট – লাং যন্ত্র পরিচালক ) সুজন সাহু , ফিজিসিয়ান অ্যাসিসটেন্ট সুদীপ্ত মন্ডল , স্ক্রাব নার্স জাহির হুসেন , অর্পিতা সরকার , সৌরভ শীল , মৌসুমী দেবনাথ , অন্ন বাহাদুর জমাতিয়া , প্রাণকৃষ্ণ দেব , ওটি অ্যাসিসট্যান্ট রতন মন্ডল , জয়দীপ চক্রবর্তী , অমৃত মুড়াসিং , কোর্ডিনেটর অভিষেক দত্ত , রিচাশ্রী সরকার , জেমসন দেববর্মা , কিষাণ রায় ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও ছিলেন । রোগীকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় । গভীর রাতে তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয় । আইসিইউ কেয়ারে নিয়োজিত ছিলেন মিনহাজুদ্দিন আহমেদ , আসরাফুল গোলদার এবং সত্যজিৎ দেবনাথের নেতৃত্বে বাকি নার্সের ছিলেন । বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে । এপিএল পরিবারভূক্ত হওয়ায় তার চিকিৎসার আনুষঙ্গিক ব্যয়ভার বহন করতে হয়েছে । সেক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালের চাইতে অনেক কম খরচে তার এই অস্ত্রোপচার সম্ভব হল । জিবিপি হাসপাতালের এই সফলতার ধারা বজাইয়ের ফলে খুশির জোয়ার সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে চিকিৎসক মহলে।