Friday, December 5, 2025
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদউদ্বোধন হয়ে গেল 14 দিন ব্যাপী রাজ্যভিত্তিক হস্ততাঁত ও বস্ত্র মেলা খোয়াই...

উদ্বোধন হয়ে গেল 14 দিন ব্যাপী রাজ্যভিত্তিক হস্ততাঁত ও বস্ত্র মেলা খোয়াই সরকারি দ্বাদশ শ্রেণী বালক বিদ্যালয়ের মাঠে

সোমবার সন্ধ্যায় খোয়াই সরকারি দ্বাদশ শ্রেণী বালক বিদ্যালয়ের মাঠে উদ্বোধন হলো রাজ্যভিত্তিক ১৪ দিন ব্যাপী হস্ততাঁত ও বস্ত্র মেলা ২০২২–23। এই মেলার উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য হস্ততাঁত শিল্প দপ্তরের চেয়ারম্যান বলাই গোস্বামী, এছাড়া উপস্থিত ছিলেন হস্ত তাঁত শিল্প দপ্তরের অধিকর্তা সঞ্জয় চক্রবর্তী, উপ-অধিকর্তা লক্ষণ চন্দ্র বসাক, খোয়াই জিলা পরিষদের সভাধিপতি জয়দেব দেববর্মা, সদস্য সুব্রত মজুমদার, রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রীমতি বর্ণালী গোস্বামী সহ আরো অনেকে। এই অনুষ্ঠানের সভাপতি করেন মিলন তন্তু বাই সমিতির সভাপতি বিজয় কুমার দেবনাথ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত অতিথি রাই কিভাবে হস্ত তাঁত শিল্পকে বাঁচানো যায় এবং তাঁতিদের জীবন জীবিকার মান উন্নত করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সরকার যে কাজ করছে এর বর্ণনা করেন। একুশে নভেম্বর থেকে চৌঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই মেলা। এই ১৪ দিন ব্যাপী মেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে উদ্বোধক তথা রাজ্য হস্ততাঁত শিল্প দপ্তরের চেয়ারম্যান বলাই গোস্বামী বলেন ভারত সরকারের মার্কেটিং সংস্থার পক্ষ থেকে এই ধরনের ক্রাফট্ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দেখা গেছে বিগত দিনের সরকার তাঁত শিল্পীদের কোন ধরনের মর্যাদা দেয়নি নিজেদের স্বার্থে ইউনিয়ন বাজি করার লক্ষ্যে তাঁত শিল্পের শ্রমিকদের পথে হাঁটিয়ে তাদের শিল্পকে নষ্ট করে দিয়েছে। এমনকি তাঁত শিল্পীদের হাতে তৈরি বিভিন্ন বস্ত্রগুলি বাজারজাত করার দিকে কোন সময় লক্ষ্য রাখেনি বিগত সরকার। যার ফলে এক সময় এই প্রাচীন তাঁত শিল্প বন্ধ হবার পথে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই শিল্প যাতে বন্ধ না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রেখে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকার মিলে কিভাবে তাঁত শিল্পীদেরকে উন্নতির লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় এর জন্য বিভিন্নভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং উন্নত মানের মেশিন দিয়ে তাদের হাতে তৈরি বস্ত্র গুলিকে বাজারজাত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁত শিল্পী ভাই বোনদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া বীমা যোজনায় বিনামূল্যে অন্তর্ভুক্তি করা এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মুদ্রা ঋূণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়া হ্যান্ডলুমের অন্তর্গত বিভিন্ন ক্লাস্টার গুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় স্বনির্ভর হওয়ার জন্য। এছাড়া সরকার চিন্তা ভাবনা করছে কিভাবে আরো আধুনিক গুণমানের তাঁত শিল্পকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় এর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করছে সরকার। পাশাপাশি নতুন তাঁত শিল্পে তাঁতি ভাইদের কিভাবে যুক্ত করা যায় দেখো চিন্তা ভাবনা করছে। দেখা গেছে রাজ্যে এক সময় রেশম শিল্পের রমরমা ছিল কিন্তু বিগত সরকার সেই শিল্পটাকে নষ্ট করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন বলাই গোস্বামী। সবদিক থেকে চিন্তা করে বর্তমানে সরকার তাঁতি ভাইদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কালার প্রিন্ট মেশিনের ব্যবস্থা করছেন। যাতে করে ওই মেশিনের মাধ্যমে তাঁতি ভাই-বোনেরা সিল্কের শাড়ি তৈরি করে আরো বাজার যাত করতে পারে যদিও রেশম শিল্পের মাধ্যমে রাজ্যে সিল্কের শাড়ি তৈরি হচ্ছে গুণগতমান ও রঙের দিক দিয়ে বিচার করে ওই মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি এই সিল্কের শাড়ি রাজ্য সহ বহিরাজ্যে প্রচুর চাহিদা রয়েছে যা রাজ্যের জন্য একটি গর্বের বিষয় এর ফলে সিল্কের শাড়ি বিক্রির পরিমাণ সাত কোটি ছাড়িয়ে গেছে বিগত কিছু দিনে। এতে করে এখানকার তাত শিল্পকে জনমুখী করাই রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য যাতে শিল্পটি নষ্ট না হয়। এর জন্য পূর্বাশা এগিয়ে এসে হস্ত তাঁত শিল্পীদেরকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি তাদের দ্রব্যগুলিকে বাজারজাত করা হয়েছে। এবং তাদের বিক্রির টাকা সময়মতো নিজ নিজ ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এর ফলে তাঁতি ভাইয়েরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে। বলাই গোস্বামী এও বলেন বর্তমান সময় কিছু দালাল চক্র তাঁতি ভাই-বোনদের উৎপাদিত দ্রব্য গুলিকে বাজারজাত না করার লক্ষ্যে তৎপর রয়েছে। যাতে করে তাঁতি ভাইদের উৎপাদিত দ্রব্য গুলি দালাল চক্রের হাত দিয়ে বাজারজাত করা হয়। কিন্তু রাজ্য সরকার তাদের সেই পরিকল্পনা কেউ ভেস্তে দিয়েছে এরপরও কিছু দালাল চক্র চুপি চুপি কাজ করছে। রাজ্যের হস্ত তাঁত শিল্পীদের হাতে তৈরি রিসা সারা ভারতবর্ষ বিখ্যাত। এই রিশা পরিহিত লোকদের দেখলেই বহিরাজ্যের লোকেরা বুঝেতে পারেন উনি ত্রিপুরা থেকে এসেছেন, এতে ত্রিপুরার সুনাম অনেক ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মনিপুরী সম্প্রদায়ের তাঁত শিল্পীদের হাতে তৈরি পাইসেনপি যা অন্য কেউ তৈরি করতে পারে না ওটার প্রচুর চাহিদা রয়েছে বাজারে শীতকালীন মরশুমে। আর এই আইসেনপি তৈরি করে বামুটিয়া এলাকার মনিপুরী তাঁতিরা। বর্তমান সময়ে রাজ্যের তাঁত শিল্পী ভাই-বোনেরা সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত উচ্চমাধ্যবিত লোকদের কথা চিন্তা করে সব ধরনের কাপড় বানিয়ে থাকে যা সবার নাগালের মধ্যে রয়েছে। যে যেমন দামে চাইবে তার জন্য সেই দামেই বিভিন্ন দ্রব্য গুলি রয়েছে। এই শিল্পকে বাঁচাতে হলে রাজ্যের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে তাদের বিভিন্ন জিনিসপত্র গুলি ক্রয় করার মাধ্যমে এতে তাঁত শিল্পের যেমন প্রসার ঘটবে পাশাপাশি তাঁতি ভাই-বোনেরা উপার্জন করে স্বনির্ভর হতে পারবে তাই সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন রাজ্য হস্ততাঁত শিল্প দপ্তরের চেয়ারম্যান বলাই গোস্বামী। এ ১৪ দিনের মেলা চলবে প্রতিদিন দুপুর ২ টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। এছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে থাকছে বিভিন্ন সংস্কৃতি অনুষ্ঠান।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

1 × 2 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য