রাজ্য মহিলা কমিশন ও রাষ্ট্রীয় মহিলা কমিশনের যৌথ উদ্যোগ সোমবার বিকেলে খোয়াই জিলা পরিষদের কনফারেন্স হলে মানব পাচার বিরোধী বিষয় নিয়ে একদিনের সেমিনার ও প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয় উক্ত শিবিরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান বর্ণালী গোস্বামী, মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অস্মিতা বণিক, সদস্য ডালিয়া সিংহ, এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খোয়াই জিলা পরিষদের সভাধিপতি জয়দেব দেববর্মা, খোয়াই পুরো পরিষদের চেয়ারম্যান দেবাশীষ নাথ শর্মা, পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান তাপস দাস, খোয়াই জেলার পুলিশ অধিকার রতিরঞ্জন দেবনাথ পৌরপরিষদের কাউন্সিলরগণ, মহিলা মোর্চার কর্মীবৃন্দ আইসিডিএস এর কর্মীরা সহ আরো অন্যান্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন বর্ণালী গোস্বামী।অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই মহিলা ও শিশু পাচার বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের আলোচনা করেন এবং কিভাবে এই বিষয়টাকে আটকানো যায় সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এই সেমিনারে উপস্থিত সবাই। এক সাক্ষাতে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী বলেন ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় ত্রিপুরা রাজ্যে মানব ও শিশু মহিলা পাচারের সংখ্যাটা খুবই কম তবুও এই বিষয়ে আগে থেকেই এই বিষয়টির উপর নজর রাখতে হবে যাতে করে মানব পাচার বিষয়টি ভবিষ্যতে রাজ্যে আর বেড়ে উঠতে না পারে এর জন্য বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক পুলিশ প্রশাসনদেরকে অবগত করানোর লক্ষ্যেই এ ধরনের সেমিনারে আয়োজন করা হয়েছে। যাতে করে পুলিশ প্রশাসন এই বিষয়টির উপর গুরুত্ব সহকারে নজর রাখেন। পাশাপাশি মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান বর্ণালী গোস্বামী এও বলেন গত কয়েক মাসের মধ্যে মানব পাচার বিষয়ে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় চারটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এমন ও দেখা গেছে অনেকক্ষেত্রে মানব পাচারের বিষয়টা পুলিশের সম্মুখে আসে না যার ফলে পুলিশ সঠিক সময়েও তদন্ত করতে পারে না। এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি পাচার হয় শিশু এবং মহিলারা। বহি রাজ্য থেকে বিভিন্ন যুবকরা এসে গরিব ঘরের মেয়েদেরকে ফুষলিয়ে বিবাহ করে বহি রাজ্যে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে বিভিন্নভাবে গৃহ পরিচারিকা কাজ করাতে বাধ্য করে। শুধু তাই না অনেক সময় এমনও দেখা গেছে পাচারকারীরা ওই মেয়েদেরকে নিষিদ্ধ পল্লীতে বিক্রি করে দেয় মোটা টাকার বিনিময়ে। এছাড়া বিশেষ করে গরিব ভবঘুরে শিশুদেরকে চিহ্নিত করে অপহরণ করাহয়। এবং তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করানো হয়। এমনকি তাদের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বিকলাঙ্গ করে দিয়েও ভিক্ষে ভিত্তি করানো হয় পাশাপাশি তাদেরকে নজরদারিতে রাখা হয় বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে যাতে করে পালিয়ে আসতে না পারে। আবার অনেক সময় দেখা গেছে চাহিদা অনুসারে অপহরণকৃত শিশুদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মোটা দামে বিক্রি করে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গাতে। এদিক দিয়ে যদিও ত্রিপুরা রাজ্যে তার সংখ্যাটা খুবই কম তবু সেই বিষয়ে নজরদারি রাখা প্রয়োজন যাতে করে এই ধরনের মানব পাচার শিশু ও মহিলাদের পাচার বন্ধ করা যায়। এর জন্য সমাজের সমস্ত অংশের মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতা একান্তভাবে কাইম্য বলে মনে করেন মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান বর্ণালী গোস্বামী।



