পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার উত্তর জেলায় একাধিক যোগদান সভা ও আলোচনা সভায় যোগ দেন কংগ্রেস নেতা তথা বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন,প্রাক্তন বিধায়ক আশিষ সাহা সহ এক ঝাঁক প্রদেশ নেতৃত্ব। এদিন সকালে ট্রেন যোগে পৌঁছান ধর্মনগরে। তারপর শহরে জেলা নেতৃত্বদের সাথে সাংগঠনিক আলোচনা শেষে দুপুর দুটোয় ছুটে আসেন ত্রিপুরা অসম সীমান্তের ৫৪ কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রে।প্রথমে বিধানসভা কেন্দ্রের পূর্ব চুরাইবাড়ি স্হিত খাদিমপাড়া এলাকায় এক যোগদান সভায় অংশ নেন।এই যোগদান সভায় ৭৪ পরিবারের ৩২১ জন ভোটার বিজেপি ও সিপিআই (এম) ও অন্যান্য দল ছেড়ে জাতীয় কংগ্রেস দলে সামিল। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে দলে বরন করে নেন সুদীপ রায় বর্মন,আশিষ সাহারা। যোগদান শেষে বিকেল সাড়ে তিনটায় সোজা চলে যান রাজনগর বাজারে।সেখানে একটি যোগদান সভায় অংশ নেন। রাজনগরের যোগদান সভায় ৪৬ পরিবারের ১৬৬ জন ভোটার বিজেপি সিপিআই (এম) সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ছেড়ে কংগ্রেস দলে যোগদান করেন। যোগদান করেন কালাগাঙ্গের পার গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪ নং বুথের বিজেপি দলের বুথ সভাপতি আব্দুল মতিন। তাঁদেরকেও দলে সামিল করে নেন সুদীপ রায় বর্মন,আশিষ কুমার সাহা সহ প্রদেশ নেতৃত্বরা।এদিনের পৃথক দুটি যোগদান সভায় কংগ্রেস নেতা তথা বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন,প্রাক্তন বিধায়ক আশিষ কুমার সাহার সাথে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সহ সভাপতি ইজ্জাত আলী,বাগমা বিধানসভার কংগ্রেস নেতা টিটন পাল,প্রানজিৎ রায়, উত্তর জেলার মহিলা নেতৃ দিপ্তী রায়, কংগ্রেস নেতা আব্দুল বাছিত চৌধুরী, মানিক লাল দাস সহ প্রদেশ,জেলা ও স্হানীয় বিধানসভার নেতৃত্ব গন। এদিকে কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের পৃথক দুটি যোগদান সভার প্রধান অতিথি তথা বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন,বিজেপি দল দেশটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কংগ্রেস পরিচালিত ডঃ মনমোহন সিংয়ের আমলে ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গোটা ভারতবর্ষে ২৭ কোটি মানুষকে দরিদ্র সীমার নিচে থেকে থেকে তুলে আনা হয়েছিল।আর বিজেপি তথা মোদী সরকারের পৌনে নয় বছরের শাসনে দেশে ২৩ কোটি মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে চলে গেছেন।এ রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর রাজ্য বাসী কি পেয়েছে?মানুষ দিশেহারা হয়ে এই সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।এই সরকার জন্ম থেকে শশ্মান পর্যন্ত কর লাগু করেছে।মহাকরন থেকে বুথ স্তর পর্যন্ত দূর্নীতিতে নিমজ্জিত। ধর্মনগর থেকে সাব্রুম সর্বত্রই বাইক বাহিনী, হেলমেট বাহিনীর আতঙ্ক।রাজ্যে শ্লীলতাহানি,ধর্ষন,গনধর্ষন লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে।তাই রাজ্য বাসী এখন অস্তিত্ব রক্ষার্থে, নিজের গনতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের প্রতিবাদ করতে শুরু করছেন।বিশালঘড়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন,শাসকের পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে তাইতো গুলিবর্ষণ বোমাবাজি করছে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।তাই ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচন ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো। তিনি হুঙ্কার ছুড়ে বলেন, বিজেপি সরকার এ রাজ্যে আর তিন মাসের অতিথি। তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলেন ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে এই সরকারকে উৎখাত করে এক নতুন সূর্যোদয় হবে।খুব শীঘ্রই বিজেপি বিরোধী সবকটি রাজনৈতিক দল আনুষ্ঠানিক ভাবে বৈঠকে বসে এই সরকারকে ছুড়ে ফেলে দিতে সবরকম পদ্ধতি অবলম্বন করবে। তিনি এদিন কিছু কিছু বিজেপি মার্কা পুলিশ অফিসারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,যদি কোন পুলিশ অফিসার কংগ্রেস কর্মীর উপর মিথ্যে মামলায় ফাঁসান, তাহলে ঐ অফিসারের নাম লিখে রাখুন,তিন মাস পর কড়ায় গন্ডায় হিসেব নিকেষ করা হবে।এ রাজ্যে বেকারদের কর্মসংস্থান নেই। গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সেই বেকার যুবক যুবতীরা প্রতিবাদ করলে তাদের ভাগ্যে জোটে গাড় ধাক্কা অথবা লাঠি পেটা। তিনি তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন,এ রাজ্যে আমরা চোরকে তাড়িয়ে ডাকাত নিয়ে এসেছি। ভারতের ৬০ শতাংশ সম্পদ কর্পোরেট তিনটি মানুষের কাছে তুলে দিয়েছে বিজেপি সরকার। কটাক্ষ করেন দ্রব্য মূল্য নিয়েও। তিনি বলেন, ইশ্বর তাঁকে রক্ষা করেছেন, বিজেপি নামক আবর্জনা থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।এ রাজ্যে বিজেপি দল থেকে বিয়োগ ছাড়া যোগের কোন দৃষ্টান্ত নেই।



