ইয়েমেনের (Yemen) হুথি গোষ্ঠীর উপর সৌদি আরব নেতৃত্বের জোট বাহিনীর ভয়াবহ বিমান হামলায় বিশ্বজোড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ কড়া নিন্দা জানিয়েছে। যদিও রিয়াধ এই হামলার দায় নেয়নি। এদিকে বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন, এবার কি ইয়েমেন থেকে হুথি গোষ্ঠী বদলা নিতে ফের মর্টার শেল ছুঁড়বে ? হুথিদের হামলার আশঙ্কায় আরব দুনিয়ার সর্বত্র জারি হয়েছে সতর্কতা। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ওমান, কাতার, কুয়েত, বাহারিন সর্বত্র আশঙ্কা। যদিও কুয়েত সামরিক জোটের বিরোধী। অতি সম্প্রতি হুথিদের মিসাইল আঘাত করেছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহির রাজধানী আবুধাবির বিমান বন্দরে। বিশ্ববিখ্যাত এই বিমান বন্দরে বিস্ফোরণ হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। মৃত দুজন ভারতীয় এক পাকিস্তানি। আবুধবিতে হামলার পরেই আমিরশাহির তথা বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্য শহর দুবাইতে ছড়ায় আতঙ্ক। কারণ, হুথিদের মিসাইল আওতায় আছে এই নগরী। আরব দুনিয়ার বিভিন্ন দেশগুলিতে ভারতীয়, বাংলাদেশি, পাকিস্তানি, শ্রীলংকান সহ বহু দেশের নাগরিকরা কর্মসূত্রে থাকেন। ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির দূতাবাসগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। ইয়েমেনকে ঘিরে রাখা পারস্য উপসাগর, ওমান সাগর, লোহিত সাগর জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপের ঢেউ বাড়ছে। লোহিত সাগর তীরবর্তী বিখ্যাত এডেন বন্দরে হুথিদের মিসাইল হামলার বিরাট সম্ভাবনা। ইয়েমেনের এই বন্দর শহরটি এখন হুথি বিরোধী আরব জোটের দখলে। এখান থেকে দেশটির পলাতক প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি ক্ষমতা দখলের লড়াই চালাচ্ছেন। লোহিত সাগরের বিশ্ববিখ্যাত এডেন বন্দরের উল্টো দিকে আফ্রিকার জিবুতি বন্দর। হুথি মিসাইলের হামলার আশঙ্কা জিবুতিতেও। ২০১৪ সালে ইয়েমেনের ক্ষমতা দখল করে হুথি গোষ্ঠী। হামলার মুখে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি। তাঁকে সাহায্য করতে আরব জোট এগিয়ে আসে। সেই থেকে সংঘর্ষ চলছে। হুথিদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক থাকায় বিতর্ক চরমে। ইসলামি দুনিয়া জুড়ে সৌদি আরব ও ইরানের কর্তৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়েছে। আরব নিউজ জানাচ্ছে, ইয়েমেনের একটি কারাগারে বিমান হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট এই হামলা করেছে বলে দাবি করছে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ। রয়টার্স জানাচ্ছে, ইয়েমেনের সাদা প্রদেশের একটি বন্দি শিবিরে হামলাটি হয়। ওই শিবিরে ইয়েমেনি বন্দি ছাড়াও বেশ কয়েকজন আফ্রিকান অভিবাসন প্রত্যাশী ছিলেন। ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাহা আল মোতাওয়াক্কেল এএফপিকে বলেন, সাদা শহরের কারাগারে বিমান হামলায় নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, সাদা নগরীর হাসপাতালে কারাগারের হামলায় আহত প্রায় ২০০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং হাসপাতালে জায়গা না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আর রোগী ভর্তি করতে পারছে না।