Thursday, December 4, 2025
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদবেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন বিজেপি নেতাদের, ঘটনা কৈলাসহর পুর পরিষদের...

বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন বিজেপি নেতাদের, ঘটনা কৈলাসহর পুর পরিষদের ১৪নং ওয়ার্ড এলাকায়

বিজেপি দলের নেতারা প্রকাশ্যেই বেসরকারি বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থার বিরুদ্ধে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে মাঠে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। বেসরকারি বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থার চূড়ান্ত গাফিলতির কারনে পুর পরিসদের চেয়ারপার্সন, পুর পরিসদের ভাইস চেয়ারপার্সন সহ ত্রিপুরা রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সহ সি.পি.আই.এম ঊনকোটি জেলা কমিটির প্রভাবশালী নেতা সহ প্রায় পাঁচশো পরিবার গত চব্বিশ ঘণ্টা সময় ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছেন। শাসক দলের নেতারা দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গভীর রাতে বেসরকারি বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থার অফিস ঘেরাও করেও নীট ফল শূন্য। এলাকা জুড়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। যোকোনো সময় এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে অনেকেই আশংকা প্রকাশ করছেন। ঘটনা কৈলাসহর পুর পরিসদের চৌদ্দ নং ওয়ার্ড এলাকায়। উল্লেখ্য, গতকাল চৌদ্দ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর একটা নাগাদ কৈলাসহর পুর পরিসদের চৌদ্দ নং ওয়ার্ডের দূর্গাপুর এলাকায় অবস্থিত ডায়েট কলেজের পাশের বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার মেশিনটি হঠাৎ করে আগুন লেগে মেশিনটি একেবারেই বিকল হয়ে যায়। আগুন লাগার খবর পেয়ে অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের কর্মীরা এবং বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থা “সাই কম্পিউটার লিমিটেডের” কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং “সাই কম্পিউটার লিমিটেডের” পক্ষ থেকে আধিকারিকরা কথা দিয়েছিলেন যে, সন্ধ্যার মধ্যেই বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক করা হবে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, চৌদ্দ জুলাই দুপুর একটায় বিদ্যুৎের ট্রান্সফরমার মেশিনে আগুন লাগার পর রাত একটা অব্দি নতুন ট্রান্সফরমার মেশিন বসিয়ে বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক করা হয়নি। বাধ্য হয়ে কৈলাসহরের বিজেপি নেতা তথা ৫৩কৈলাসহর বিধানসভা কেন্দ্রের ৫৩নং বুথের বিজেপি দলে বুথ সভাপতি মিলন দাস এবং ওবিসি মোর্চার ঊনকোটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধারত দওের নেতৃত্বে দলীয় কর্মী সমর্থকরা এবং এলাকাবাসীরা শহরের সাই কম্পিউটার লিমিটেডের অফিসে গিয়ে এত রাত অব্দি বিদ্যুৎ না থাকার কারণ জানার জন্য গিয়ে দেখেন, অফিসের সামনে প্রচুর পুলিশ এবং টি.এস.আর বাহিনী মোতায়েন রয়েছে এবং অফিসের গেইট তালাবন্ধী করে অফিসের ভিতরে সাই কম্পিউটার লিমিটেডের কর্মকর্তারা বসে রয়েছেন। তবুও সাই কম্পিউটার লিমিটেডের কর্মকর্তারা কিংবা কর্মীরা কেউ অফিসের বাইরে এসে কথা বলছেন। কিন্তু এরপরও এলাকাবাসীরা কেউই উত্তেজিত হয়ে অফিস ভাংচুর করেনি। অনেক চিৎকার চেচামেচির পরে সাই কম্পিউটার সংস্থার এক কম্পিউটার এসিস্ট্যান্ট অফিসের ভিতরে থেকে বলেন যে, খুব শীঘ্রই রাত একটার মধ্যে বিদ্যুৎ আসবে। বিজেপি নেতা মিলন দাস এবং ওবিসি মোর্চার ঊনকোটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধারত দত্ত জানান যে, কৈলাসহর পুর পরিসদের চৌদ্দ নং ওয়ার্ডের দূর্গাপুর এলাকায় অনেক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিরা এবং ভি.আই.পি মানুষরা বসবাস করেন। এই এলাকায় কৈলাসহর পুর পরিসদের চেয়ারপার্সন চপলা রানী দেবরায়, পুর পরিসদের ভাইস চেয়ারপার্সন নিতীশ দে, ত্রিপুরা রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি বিরজিত সিনহা, CPIM দলের ঊনকোটি জেলা কমিটির অন্যতম সক্রিয় সদস্য কান্তি লাল দেব, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ঊনকোটি জেলা আদালতের জেলা জর্জ প্রদীপ দত্ত সহ আরও অনেকেই রয়েছেন এবং উনারা সবাই প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা সময় ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছেন। কিন্তু সাই কম্পিউটার লিমিটেড বেসরকারি বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থা এরকম একটি মুল্যবান এলাকায় তীব্র তালবাহানা ও চূড়ান্ত গাফিলতি করছে। বিজেপি নেতা মিলন দাস বলেন যে, বিদ্যুৎ পরিসেবা ভালো করে না দিয়ে এই বেসরকারি বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থা প্রতি মাসে গ্রাহকের বাড়ি থেকে বিদ্যুৎের বিল সংগ্রহ করছেন। কোনো গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল দিতে একদিন দেরি করলেই সেই গ্রাহকের বাড়ির বিদ্যুৎের কানেকশন কেটে দেওয়া হয়। অথচ বিদ্যুৎ পরিসেবা একেবারেই তলানীতে।বিজেপি নেতা তথা ওবিসি মোর্চার ঊনকোটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধারত দত্ত বলেন, কৈলাসহরবাসীর চূড়ান্ত দুর্ভাগ্য যে, সাই কম্পিউটার সংস্থার মতো একটি বেসরকারি বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থাকে কৈলাসহরের বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যাদের বিদ্যুৎ পরিসেবা দেওয়ার মতো কোনো ধরনের পরিকাঠামোই নেই এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে কর্মীও নেই। এছাড়াও সাই কম্পিউটার সংস্থার অফিসে কিংবা কর্মীদের ফোন করলে কেউই ফোন রিসিভ করেন না।
কিন্তু বাস্তব হলেও সত্যি যে, চৌদ্দ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর একটায় বিদ্যুৎের ট্রান্সফরমার মেশিনটিতে আগুন লাগার সাথেই দূর্গাপুর এলাকাটি বিদ্যুৎ হীন হয়ে যাবার পর থেকে পনেরো জুলাই শুক্রবার সকাল এগারোটা অব্দি এলাকায় বিদ্যুৎ আসেনি এমনকি এলাকায় বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক হয়নি। উল্লেখ্য, বিগত দশ বারো দিন ধরে গোটা কৈলাসহর মহকুমা এলাকায় দিনের বেলায় প্রচন্ড রৌদ্র এবং এর সাথে তীব্র গরম পড়ছে। প্রায় চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর তাপমাত্রা। এরমধ্যে বিদ্যুৎ নেই এলাকায়। এলাকায় পাঁচশোর উপর পরিবারের বসবাস রয়েছে। এরমধ্যে অনেকেই অসুস্থও রয়েছেন। ধৈর্যের বাঁধ যেকোনো সময় ভেংগে গিয়ে যোকোনো ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে অনেকেই আশংকা প্রকাশ করছেন। উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ পূর্বে কৈলাসহরের বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী বেসরকারি সাই কম্পিউটার সংস্থার বিদ্যুৎ পরিসেবা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন বিজেপি নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান নারান সিংহ। দিনের পর দিন সাই কম্পিউটার সংস্থার তুঘলকি কান্ড এবং চূড়ান্ত গাফিলতির কারনে বিশ্রী বিদ্যুৎ পরিসেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা এবং শাসক দলের নেতারা প্রকাশ্যেই আন্দোলনে নেমে মুখ খোলছেন।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

4 × 5 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য