আমাদের জীবনই আমাদের প্রতিবিম্ব। জীবনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি কোন কাজটা করা ঠিক, কোন কাজটা করা ঠিক নয়। মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের প্রত্যেককে মননে, আচরণে, চেতনায় মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মানবাধিকার রক্ষা করতে হলে এবং মানবাধিকার আইন সঠিকভাবে পালন করতে গেলে গণতন্ত্রের ৪টি স্তম্ভকে শক্তিশালী করতে হবে। দেশের সংবিধানে মানবাধিকার রক্ষার সব বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত আছে। মানবাধিকার সুরক্ষায় এই আইন সম্পর্কে মানুষের সাধারণ জ্ঞান থাকা দরকার। মানবাধিকারকে হাতিয়ার করে অনৈতিক আন্দোলন, উশৃঙ্খল আচরণ কিংবা এর অপব্যবহার করাও উচিত নয়। মানবাধিকার আইনকে সদ্ব্যবহার করতে হবে। গার্হস্থ্য নানা সমস্যা, শিশু, নারীদের নানা সমস্যা সহ সামাজিক সমস্যাগুলি সমাধানের ক্ষেত্রে কোথায় যেতে হবে তার সঠিক ধারণা থাকা দরকার।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে এবারের মূল ভাবনা হলো ‘মানব অধিকার আমাদের নিত্যদিনের অঙ্গ’। অনুষ্ঠানে ভাষণ রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাজের ক্ষেত্রে মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়ে সব সময় সচেতন ও সজাগ রয়েছেন। শুধু তাই নয়, নানা কর্মসূচি প্রণয়ন ও রূপায়ণের ক্ষেত্রেও তিনি মানবাধিকার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে মানুষের কথা চিন্তা করেছেন। উজ্জ্বলা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, আয়ুষ্মান ভারত সহ শিশু থেকে নারী, কৃষক থেকে বেকার যুবকদের কথা চিন্তা করে নানা প্রকল্প রূপায়ণ করছেন।
বর্তমান রাজ্য সরকারও মানবাধিকারের প্রশ্নে সংবেদনশীল ও সচেতন। কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলেই রাজ্য সরকার তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে। মানবাধিকার সুরক্ষার সাথে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অতীতে সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবহেলিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির ফলে আজ উত্তর পূর্বাঞ্চলে শান্তি সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে উন্নয়ন ঘটছে। ত্রিপুরা রাজ্যেও বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের নিউজ লেটারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশন গঠন করা হয়।
অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অরিন্দম লোধ বলেন, বন্দেমাতরম গানটির সাথে মানবাধিকার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলি এসেছে মানবাধিকার থেকে। সম্মানিত অতিথি হিসেবে মানবাধিকার সুরক্ষা বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন আইন সচিব শঙ্করী দাস, পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ, অ্যাডভোকেট জেনারেল শক্তিময় চক্রবর্তী, ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ঝর্ণা দেববর্মা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের সচিব ধনবাবু রিয়াং। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিক দীপঙ্কর পাল।



