বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ১৫ই নভেম্বর.…..ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৫০ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার দুপুরে খোয়াই ধলাবিল চা বাগান স্কুল মাঠে পালিত হল ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৫০ জন্ম জয়ন্তী ও জনজাতি গৌরব দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান। উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভায় মুখ্য সচেতক শ্রীমতি কল্যানী সাহা রায়। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী, খোয়াই জেলা শাসক রজত পন্থ, খোয়াই জিলা পরিষদের সভাধিপতি শ্রীমতি অপর্ণা সিংহ রায়, খোয়াই পন্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান শ্রীমতি টিন্কূ ভট্টাচার্য, খোয়াই মন্ডল সভাপতি অনুকূল দাস, জেলার সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দাস, রাজ্যের জনজাতি মৌর্চার সাধারণ সম্পাদক রমেন শাওতাল, জয়দেব দেববর্মা , খোয়াই তথ্য কেন্দ্রের আধিকারিক দিলীপ দেববর্মা,সমাজ সেবক বিনয় দেববর্মা সহ জন জাতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের সমাজ পতিরা। এছাড়া এই অনুষ্ঠানের মাঠে উপস্থিত ছিলেন খোয়াই চা বাগান স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা সহ এলাকার জন জাতি সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি রেলি বের করা হয়। এরপর অনুষ্ঠানের উদ্বোধক সহ সমস্ত অতিথিরা বিরসা মুন্ডার প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ প্রজ্জালন করে অনুষ্ঠানের সভারম্ভ করেন।এই দিন অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত সমস্ত অতিথিদের হাতে ভগবান বিরসা মুন্ডার প্রতিকৃতি তুলে দেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মেয়েরা। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর আদিবাসীরা তাদের ট্রেডিশনাল বিভিন্ন ধরনের নৃত্য পরিবেশন করেন।উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধক তথা ত্রিপুরা বিধানসভার মুখ্য সচেতক শ্রীমতি কল্যানী সাহা রায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন ভারত বর্ষে যখন ইংরেজরা শাসন করছিল তখন শিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে বাধ্য হয় মিশনারী স্কুলে ভর্তি হন । এবং মিশনারি স্কুলে ভর্তি হবার জন্য প্রথমে ওনাকে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হতে হয়েছিল। যদিও এই বিশয়টিকে তিনি মন থেকে মেনে নিতে পারেননি ।এরপর তিনি সেই ধর্ম ত্যাগ করেন এবং নিজের একটি ধর্ম তৈরি করে। পাশাপাশি তখন চলছিল দেশবাসীর উপর ইংরেজদের প্রচন্ড অত্যাচার এই অত্যাচারের হাত থেকে দেশবাসী এবং নিজের সম্প্রদায়ের লোকদেরকে বাঁচাতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। একটা সময় ব্যাপক ভাবে বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ করেছেন ইংরেজদের সাথে ভারতবর্ষ থেকে বিতরণের জন্য। শুধু তাই না নিজের জাতিদের দাবি আদায়ের জন্যই ভগবান বিরসা মুন্ডা ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন । একটা সময় উনার বিদ্রোহে ইংরাজরাও কম্পমান ছিল। অন্যদিকে বিরসা মুন্ডার বিদ্রোহে ইংরেজরা প্রচন্ড ভয়ে কম্পমান ছিল পাশাপাশি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাথেও জোট হয় তিনি লড়াই করেছেন। ইতিহাসের পাতায় যাকে ভিল বিদ্রোহ বলেও আখ্যায়িত করা হয়েছে ।এরপর যদিও একটি সময় তিনি ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ে কারাবাস বড়ন করেন। এবং এই কারাবাসেই ইংরেজদের প্রচন্ড অত্যাচারে এক সময় তিনি জেলের মধ্যেই মারা যান। এরপর মুন্ডা সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা বিরশা মুন্ডার জন্মতিথি পালন করে আসছিল। কিন্তু বিগত দিনের রাজ্য সরকারের কাছে বিরশা মুন্ডার জন্ম জয়ন্তীকে পালন করার ক্ষেত্রে অনেক বাধা সৃষ্টি করে। এমনকি দেশদ্রোহী হিসেবেও আখ্যায়িত করেছিল তৎকালীন সময়ে বামফ্রন্ট সরকার বিরশা মুন্ডাকে। কিন্তু ২০২১ সালে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ১৫ই নভেম্বর দিনটিকে ভগবান বিরশা মুন্ডার জন্মজয়ন্তী দিন হিসেবে ঘোষণা দেন যা সরকারি ক্যালেন্ডারে তা স্থান পায় । তাছাড়া বিরসা মুন্ডার জীবন কাহিনী নিয়ে আরও ব্যাপক আলোচনা করেন বিধানসভার মুখ্য সচেতক শ্রীমতি কল্যাণী সাহা রায় সহ এই দিন অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত সমস্ত অতিথিরা। ১৫ই নভেম্বর ভগবান বিশ্ব মুন্ডার ১৫০ তম জন্মজয়ন্তীকে সামনে রাখে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে উনার জন্মজয়ন্তী দিবসটিকে পালন করা হচ্ছে বলে জানান রাজ্য বিধানসভায় মুখ্য সচেতক শ্রীমতি কল্যাণী সাহ রায়। বিরশা মুন্ডার জন্মদিনকে সামনে রেখে এই দিন সন্ধ্যায় চা বাগান স্কুল মাঠে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছে।



