Saturday, October 19, 2024
বাড়িখবররাজ্যদেশের বিভিন্ন পার্বত্য এলাকায় জুম চাষ পদ্ধতি তে চাষাবাদ করা...

দেশের বিভিন্ন পার্বত্য এলাকায় জুম চাষ পদ্ধতি তে চাষাবাদ করা হয়।জুমচাষের রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস।

জুম চাষ একটি স্থানান্তরিত চাষাবাদ। দেশের বিভিন্ন পার্বত্য এলাকায় এই জুম চাষ পদ্ধতি অনুসারে চাষাবাদ করে আসছে বহু বহু বছর ধরে। এদিকে ত্রিপুরাতেও পাহাড়ি এলাকা গুলিতে ঐতিহ্যগত জুমচাষের পদ্ধতি রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস। ত্রিপুরার যে কয়েকটা পাহাড়ী জনপদ গুলিতে বহু বহু বছর ধরে জুম চাষ করা হয় তার মধ্যে অন্যতম এলাকা হলো তেলিয়ামুড়া মহকুমার বিস্তীর্ণ পাহাড়ি উপজাতি জনপদ। প্রতিবছরই তেলিয়ামুড়ার বিভিন্ন এলাকা তে জুম চাষের তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। এদিকে জুম চাষ পাহাড়ি এলাকায় প্রচলিত এক ধরনের কৃষিপদ্ধতি। “জুম চাষ” বিশেষ শব্দে “ঝুম চাষ” নামেও পরিচিত। “ঝুম চাষ” এক ধরনের স্থানান্তরিত কৃষিপদ্ধতি। এটি মূলত জঙ্গল কেটে দীর্ঘ দুই মাস পাহাড়ে জমিয়ে রাখা হয়। পরে পোড়ার উপযোগী হলে পুড়িয়ে জমি কে প্রথমে চাষাবাদের জন্য উর্বর করা হয়। তারপর জুম চাষের পদ্ধতি অনুসরণ করে বিভিন্ন ধরনের ফসল এর বীজ রোপণ করা হয়। এদিকে আবার সেই স্থানে জমির উর্বরতা কমে গেলে পূর্বের স্থান হতে কৃষি জমি স্থানান্তরিত করে অন্যত্র আবার কৃষি জমি গড়ে ওঠে। পাহাড়ের গায়ে ঢালু এলাকায় এই চাষ করা হয়। এই পদ্ধতির চাষে বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়। জুম চাষ পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের জীবন জীবিকার প্রধান অবলম্বন। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ২০০ হেক্টর ভূমি এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়। “জুম চাষ” ভারতে পোড়ু, বীরা, পোনম, ত্রিপুরাতে জুম চাষ প্রভৃতি নামেও পরিচিত। ত্রিপুরাতে বিশেষ করে তেলিয়ামুড়া মহকুমার রিয়াং,মলসম, দেববর্মা,সমাজের মানুষের মাঝে জুম চাষ বেশ জনপ্রিয়। জুম চাষ মূলত মার্চ এপ্রিল মাস জুমচাষের প্রস্তুতির সময়। চৈত্রের এই দাবদাহে জনজাতিরা দীর্ঘদিন ধরেই পাহাড় কেটে জঙ্গল পরিষ্কার করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে প্রথাগতভাবে এই জুম চাষ করে থাকে। এরপর স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে এই জুমকে পরিচর্যা করে এবং ফসল তোলার জন্য অপেক্ষায় থাকে।প্রথাগত এই জুমচাষের প্রস্তুতি নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করার লক্ষ্যে তেলিয়ামুড়া বিভিন্ন জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে দেখা গেল জুমিয়ারা প্রচন্ড ব্যস্ত তাদের এই প্রথাগত চাষকে সার্থক রূপ দিতে। এক দুজন জুমিয়ার সাথে কথা বলে জানা গেছে বর্তমানে পূর্বের মত জুম চাষের ফসল উৎপাদন না হলেও জুমচাষ চলছে তার নিজস্ব গতিতেই । জুম চাষের ফলে জঙ্গল পুড়িয়ে দেওয়া হয় বা বিস্তীর্ণ অঞ্চলের গাছ গাছালিকে কেটে পরিষ্কার করা হয়। অনেকে হয়তো বলবেন এই অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বা গাছ কেটে ফেলার ফলে পরিবেশে ভারসাম্যহীনতার একটা চিন্তা থেকেই থাকে, কিন্তু এরপরেও প্রথাগত এই জুম চাষ চলছে তার নিজস্ব গতিতেই ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

three + eighteen =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য