Thursday, November 13, 2025
বাড়িখবররাজ্যশিক্ষাক্ষেত্রে আজ ত্রিপুরা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে - মুখ্যমন্ত্রী

শিক্ষাক্ষেত্রে আজ ত্রিপুরা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে – মুখ্যমন্ত্রী

শিক্ষাক্ষেত্রে আজ ত্রিপুরা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ অনুসারে রাজ্যে বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরফলে শিক্ষার্থীরা শুধু ডিগ্রিধারী নয়, দক্ষ ও আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে। আজ কাকড়াবনে সরকারি ডিগ্রি কলেজ এবং ডায়েট কলেজের জন্য ৫০ আসন বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাসের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন সমাজের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষিত সমাজই হচ্ছে আত্মনির্ভর সমাজ। শিক্ষা হচ্ছে জ্ঞানের সেতু যা আমাদের অজ্ঞতা থেকে আলোর পথে নিয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার বারই বলছেন শুধুমাত্র পুথি নির্ভর শিক্ষা নয়, গুণগত ও মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষিত সমাজ গড়ে তুলতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু বই পড়লেই চলবে না, সমাজের জন্য কাজ করতে হবে। শৈশব থেকেই সেবার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করা। শুধু পরীক্ষায় পাশ নয়, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ, সেবামূলক মানসিকতা সম্পন্ন নাগরিক গড়ে তোলা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে মূল্যবোধ, বিকাশ ও জাতি গঠনকে একসূত্রে বেঁধে রাখার উপর জোর দিচ্ছেন আমাদেরও সেই পথে চলতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবছর ইউনেসকো ত্রিপুরাকে পূর্ণ স্বাক্ষর রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা সমগ্র রাজ্যের মানুষের গর্বের বিষয়। ৯৫ শতাংশের বেশি স্বাক্ষরতার হার অর্জনের মাধ্যমে ত্রিপুরা আজ উত্তর-পূর্ব ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কাকড়াবন, আমবাসা ও করবুকে ৩টি নতুন কলেজ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এতে কাকড়াবন সহ ৩টি এলাকার আশপাশের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে চিফ মিনিস্টার্স স্পেশাল স্কলারশিপ স্কিম চালু করা হয়েছে। যাতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত হচ্ছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ড্রোন সেন্টার, ডেন্টাল কলেজ এবং নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ত্রিপুরায় আরও একটি ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই ত্রিপুরার প্রতিটি মানুষ যাতে শিক্ষিত, গুণগতভাবে দক্ষ ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠেন। আমরা চাই শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা, নেশামুক্ত ত্রিপুরা, যেখানে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও নৈতিকতার আলোয় রাজ্য আলোকিত হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা আজ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, যা আমাদের গর্বের বিষয়। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে রাজ্যন্তর পর্যন্ত ত্রিপুরা একাধিক জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে, যা বর্তমান সরকারের কার্যকর শাসন ব্যবস্থার প্রতিফলন।

নতুন শিক্ষার প্রতিষ্ঠান ও হোস্টেল কাকড়াবন এলাকার শিক্ষার পরিসরকে আরও বিস্তৃত করবে এবং এলাকার তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ গঠনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার ত্রিপুরায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের কাজ করে চলেছে। এরফলে ত্রিপুরার ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্যে এখন আর আগের মতো ত্রিপুরার বাইরে যেতে হয়না। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী কিশোর বর্মণ বলেন, রাজ্য সরকার নলছড়ে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া আগরতলায় একটি মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। তিনি আরো বলেন, রাজ্যের কলেজগুলিতে শিক্ষক স্বল্পতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরায়, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার জেলাশাসক রিঙ্কু লাথের, সমাজসেবী সবিতা নাগ প্রমুখ। উল্লেখ্য, কাকড়াবন ডায়েট কলেজের হোস্টেল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

9 − 5 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য