রাজ্য সরকার কৃষকদের কৃষিকাজে উৎসাহ প্রদানে বদ্ধপরিকর। কৃষকরা যাতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন সেজন্য প্রতি বছর দুটি মরশুমে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় করা হয়। আজ সাক্রমের সাতচাঁদ ব্লকের বটতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্রজেন্দ্রনগর ধান ক্রয় কেন্দ্রে রাজ্যভিত্তিক বোরো ধান ক্রয় কর্মসূচির সূচনা করে খাদ্য, জনসংভরণ এবং ভোক্তাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর প্রথম থেকেই এই ধান ক্রয় কর্মসূচি শুরু হয়েছে এবং তাতে ব্যাপক সাড়াও মিলেছে। তিনি আরও বলেন, একটা সময় ফড়েরা খুব কম মূল্য দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতো। ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এতে করে তারা ক্রমে ক্রমে ধান চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। বর্তমানে সেই উৎসাহ আবার ফিরে এসেছে। খাদ্য, জনসংভরণ এবং ভোক্তাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তর এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যভিত্তিক খারিফ বিপণন মরশুম ২০২৫-২৬ এর জন্য কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে খাদ্য, জনসংভরণ এবং ভোক্তাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সরকার ১ লক্ষ ১৭ হাজারের বেশি কৃষকের কাছ থেকে ২ লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টনের উপর ধান ক্রয় করেছে এবং তাতে করে কৃষকরা প্রায় ৪৪৬ কোটি টাকার উপর অর্থ পেয়েছে। ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে, কৃষকদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং তারাও রাজ্যের জি.ডি.পি. বৃদ্ধিতে সক্রিয় অংশীদারিত্ব দেখাতে পারবে। ২০১৮ সালে সরকার প্রতিষ্ঠার পর সরকারের কৃষকবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গির কারণে কৃষক সমাজ আর্থিকভাবে সমৃদ্ধশালী হয়েছে এবং এতে করে কৃষকদের সরকারের উপর ভরসা বেড়ে গেছে। কৃষকদেরকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে আগে যেখানে ধান বিক্রির সহায়ক মূল্য ছিল ১৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি কেজি এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা প্রতি কেজি। তাতে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২ লক্ষ ৮৪ হাজারের বেশি কৃষক পি.এম. কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে ৮৪৩.৬৫ কোটি টাকা পেয়েছেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর দক্ষিণ জেলা থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণ ধান ক্রয় করা হয়েছে। এবার ৩১টি ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খাদ্য, জনসংভরণ এবং ভোক্তাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের বিশেষ সচিব দেবপ্রিয় বর্ধন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ও বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি দীপক দত্ত। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মাইলাফ্লু মগ, বিধায়ক স্বপ্না মজুমদার, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর রায়, বিশিষ্ট সমাজসেবী দ্বীপায়ন চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য, জনসংভরণ এবং ভোক্তাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব এবং অধিকর্তা সুমিত লোধ, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ড. ফণীভূষণ জমাতিয়া, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা মোহম্মদ সাজ্জাদ পি, সাক্রম মহকুমার মহকুমা শাসক শিবজ্যোতি দত্ত সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিগণ সাক্রম নগর পঞ্চায়েতের দ্বারা নিজস্বভাবে তৈরি কম্পোস্ট সারের রিব্র্যান্ডিং করেন, যার নাম দেওয়া হয় ফেণী কম্পোস্ট সার। এছাড়াও খাদ্যমন্ত্রী কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের একটি প্রাইমারি রুরাল মার্কেট স্টলের উদ্বোধন করেন।