খোয়াই প্রতিনিধি ২৬ শে মে……খোয়াই মহকুমার অন্তর্গত তুলা শীখড় ব্লকের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলের জনপদ গুলিতে ম্যালেরিয়া সহ বিভিন্ন সংক্রমন রোগ শুরু হয়েছে বলে এক সূত্রে জানা গেছে। এলাকা গুলি হল উজান ফালকা,পেত্রা মুড়া, বাদলা বাড়ি , বিননহাজারী পাড়া , যজ্ঞ কোবরা , শিকারী বাড়ি সহ খোয়াই মহকুমার অন্তর্গত বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি মেনিনজাইটিস রোগেও আক্রান্ত বহু পরিবারের ছোট্ট শিশু থেকে বয়স্করা।এছাড়া এই দুটি রোগের সাথে কোনও কোনও গ্রামে জল বাহিত অন্যান্য রোগও দেখা দিয়েছে বলে খবর রয়েছে। এই বিষয়ে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার প্রায় প্রতিটি পাড়াগাঁয়ে চিকিৎসা শিবির করার দাবি উঠেছে। যদিও এই বিষয়ে তুলাশিখর প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার থেকে পুরো মে এবং জুন মাস ব্যাপী চিকিৎসা শিবির করার কাজটি শুরু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক তাপস কুমার সরকার। তিনি বলেন কোন কোন দিন দু-তিনটি করে শিবির করা হচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের রক্ত পরীক্ষা চিকিৎসা পরিসেবা সহ বিভিন্ন রকমের ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস কারীদের মধ্যে।পাহাড়ে বসবাস করি পরিবারগুলি বর্তমান সময়ে পানীয় জল সহ নানান সমস্যায় ভুগছে।এছাড়া ওইসব এলাকাগুলোতে সামান্য ঝড় বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে । ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে পানীয় জলের উৎস তথা বিভিন্ন পাম্পগুলি বিকল হয়ে পড়ছে।বিদ্যুৎ না থাকার করনে গিরীবাসীরা সময়মত পানীয় জল না পাওয়ায় ফলে তাদের পরিবারের লোকেরা তৃষ্ণা মেটাতে বিভিন্ন নদী, নালা ছড়া,ফুটের জলের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।
এই বিষয়ে পাহাড়ি অঞ্চলের নেতারাও যথেষ্ট বিরক্ত বিদ্যুৎ দপ্তর এবং পানীয় জল দপ্তরের উপর। এলাকার একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধ তথা তুলাশিখর ব্লক চেয়ারম্যানের অভিমত , চলতি সময়ে প্রচন্ড দাবদাহে পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে বসবাসকারীরা বহু সমস্যার সম্মুখ হচ্ছেন। পানীয় জল, বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তা নিয়ে সমস্যাত রয়েছেই।তিনি এই বলেন তাদের পক্ষ থেকে বারবার বিষয়গুলিকে নিয়ে ব্লক আধিকারিক এবং মহকুমা শাসককে জানানো হয়েছে। যে ওইসব জনপথ এলাকায় বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের অবস্থা অত্যন্ত মারাত্মক আকার ধারণ করেছে এই প্রচন্ড দাবদাহের কারণে।এই বিষয়ে এক আধিকারিক জানান, জোনালে তেমন কোনও ফান্ড নেই তাই প্রয়োজনীয় কাজগুলি করা যাচ্ছে না। সেই অধিকারিক বলেন প্রতিবছর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে জুলাই পর্যন্ত ম্যালেরিয়া এবং মেনিনজাইটিস রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় পাহাড়ে বসবাসকারীদের। এর জন্য আগাম সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজননা হলে একসময় পরিস্থিতিতে ভয়ানক রূপ ধারণ করতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেন । কিন্তু এই বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে জানা যায় ।বিশেষ করে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষার জন্য ডিডিটি ছড়ানোত বর্তমানে প্রায় বন্ধই। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি পরিবারকে সরকারীভাবে মশারি দিলেও অনেকেই মশারি ব্যবহার করেন না বলে জানাযায়।অন্যদিকে জনজাতি নেতাদের মতে স্বাস্থ্য শিবির সহ স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ পৌঁছানো, পানীয় জলের সুব্যবস্থাও করতে পারলে উক্ত দু’টি রোগ থেকে অনেকাংশেই মুক্তি পাবে গিরিবাসীর জনগণেরা বলে ধারণা করা হচ্ছে।অন্য দিকে, তুলাশিখর প্রাইমারি হেল্থ সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের মতে এই সময়ে পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে জলবাহিত রোগ সহ ম্যালেরিয়া এবং বিভিন্ন ধরনে সংক্রমণ রোগে পরিবার গুলি আক্রান্ত হয়। সেজন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক বছর আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে এবং প্রতিদিন বিভিন্ন পাড়ায় স্বাস্থ্য শিবির করা সহ এবং রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হয়ে থাকে। কোনও কোনও দিন দেখা যায় দু থেকে তিনটি গ্রামে শিবির করা হয়। যেখানে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী থাকা সত্ত্বেও শিবির করা সম্ভব হচ্ছে না গাড়ি চালকের অভাবে। সময়ের প্রয়োজনে গাড়ি পাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি হেল্থ সেন্টারের জন্য অবশ্যই এই সময়ে একজন গাড়ি চালক দেওয়ার জন্য। খোয়াই এর তুলাশিখর প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার এলাকায় মোট ৫ টি সাব সেন্টার রয়েছে। সেই সব সেন্টারের চিকিৎসা কর্মীরাও প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য শিবির করে চলেছেন নিজেদের মোটর বাইক অথবা বাইসাইকেলে করে। এর পরও কোনও কোনও জায়গায় রোগে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে ঐ সব এলাকার জনগন যা মারাত্বক আকার ধারণ করতে পারে বলে দাবী চিকিৎসকদের। অবিলম্বে অন্তত একজন গাড়ী চালক ও প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে বিগত কয়েক বছর আগে ঘটে যাওয়া মহামারীর মতন আকার ধারন করতে পারে বলে চিকিৎসা কর্মী ও অভিজ্ঞ মহলের মতামত।